বর্তমান সরকারকে হঠাতে না পারলে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হয়ে পড়বে বলেছেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান। শুক্রবার সকাল ১০টায় বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে ১০ দফা দাবিতে ৩০ ডিসেম্বরের গণমিছিল সফল করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদের উদ্যোগে প্রস্তুতি সভায় এ কথা বলেন তিনি।
উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান বলেন, ১০ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আগামী ৩০ ডিসেম্বর গণমিছিল সর্বাত্মকভাবে সফল করতে হবে। গণমিছিলে রাজনীতিবিদদের পাশাপাশি সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের সমাগম ঘটাতে হবে। কারণ আজকের সঙ্কট শুধু বিএনপির সঙ্কট নয়। এই সঙ্কট সমগ্র জাতির সঙ্কট।
তিনি বলেন, আজকে বিএনপির গণজোয়ার ঠেকাতে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পুলিশ দিয়ে ভয় দেখাচ্ছে। আমদের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস সহ অনেক নেতাকর্মীকে তারা অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করেছে।
আমান বলেন, কোনো ষড়যন্ত্রই আমাদেরকে রুখতে পারবে না। এই সরকারের হাত থেকে দেশ ও সাধারণ মানুষকে রক্ষার জন্য ৩০ ডিসেম্বরের যুগপৎ কর্মসূচি সফল করতে হবে।
বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদের আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে পেশাজীবীরা সবচেয়ে বেশি নিগৃহীত হয়েছেন। ভিন্নমতের হাজার হাজার পেশাজীবীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। বহু পেশাজীবীকে গুম ও খুন করে হয়েছে। মামলা দিয়ে পেশাজীবীদের ঘর ছাড়া, বাড়ি ছাড়া করা হয়েছে। তাই আগামী ৩০ ডিসেম্বরের গণমিছিলে পেশাজীবীদের ঐক্যবদ্ধভাবে শামিল হতে হবে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত প্রতিটি নেতাকর্মীকে ইস্পাত-দৃঢ় ঐক্য নিয়ে রাজপথে থাকতে হবে।
তিনি বলেন, সরকার ক্ষমতায় গিয়ে জনগণের সকল অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছে। জনগণ আজ ভোট দিতে পারে না, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, অর্থনীতি আজ বিপর্যস্ত।
ডাক্তার জাহিদ বলেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার নিশ্চিত, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন আদায়ের দাবিতে জনগণ ঐক্যবদ্ধ। পেশাজীবিদেরও জনতার কাতারে গিয়ে শামিল হতে হবে। পেশাজীবী জনতা একতা গড়ে তুলে এই সরকারকে বিদায় করতে হবে।
তিনি আগামী ৩০ ডিসেম্বরের গণমিছিল সফল করতে জনগণের সাথে পেশাজীবিদের সম্পৃক্ততা তৈরি করার আহ্বান জানান।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, দেশে মানুষের জান, মাল, ইজ্জতের নিরাপত্তা নেই। স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি নেই। দেশ মনুষ্য বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। একদিকে মানুষ না খেয়ে মরছে অন্য দিকে সরকারের লোকেরা দুর্নীতি ও লুটের টাকা দিয়ে বিদেশে সেকেন্ড হোম কিনছে। এমনি পরিস্থিতিতে দেশের মানুষের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে।
তিনি বলেন, দেশের এমন পরিস্থিততে যেকোনো মূল্যে গণমিছিল সফল করতে হবে। মামলা-হামলা গ্রেফতার উপেক্ষা করে প্রস্তুতি নিতে হবে। পেশাজীবীদেরকে এগিয়ে আসতে হবে। সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে আমাদের আন্দোলন বেগবান করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, এ আন্দোলন গোটা জাতির জন্য অস্তিত্বের লড়াই। যদি গণতন্ত্র ও দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ফিরে পেতে চাই, তাহলে যেকোনো মূল্যে ৩০ ডিসেম্বরের গণমিছিল সফল করতে হবে।
বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদের আহ্বায়ক প্রফেসর ডা: এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব সাংবাদিক কাদের গনি চৌধুরীর সঞ্চালনায় প্রস্তুতি সভায় বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট চিকিৎসক ও জিয়া পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ডা: আবদুল কুদ্দুস, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জল, ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইউট্যাব) মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো: মোর্শেদ হাসান খান, এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এ্যাব) সভাপতি কৃষিবিদ রাশিদুল হাসান হারুন ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জি কে এম মোস্তাফিজুর রহমান, শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের মহাসচিব জাকির হোসেন, জিয়া পরিষদের আব্দুল্লাহিল মাসুদ, সাংস্কৃতিক জোটের মহাসচিব রফিকুল ইসলাম, ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) ঢাকা উত্তরের সভাপতি ডা: সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. গোলাম হাফিজ কেনেডি, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. নজরুল ইসলাম, সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম কাগজী, ইঞ্জিনিয়ার এ বি এম রুহুল আমিন আকন্দ, ইঞ্জিনিয়ার সাখাএয়াত হোসেন, মির্জা মোশাররফ হোসেন লিটন, জিয়াউল হায়দার পলাশসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।