ভরপুর পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ সয়াবিন সব বয়সিদের জন্যই সমান উপকারী। একমাত্র যাদের কিডনির অসুখ আছে এবং যারা গাউটের সমস্যায় ভুগছেন, তারা ছাড়া প্রত্যেকেই সয়াবিন খেতে পারেন। মেনোপজের পর মাঝবয়সী অনেক মহিলার হাড় ক্ষয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। এই সমস্যা কমাতে সয়াবিন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে।
সয়াবিন খেলে যেসব সমস্যার প্রতিকার পাওয়া যায়—
ডায়াবেটিসের দাওয়াই
টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। আর এই রোগে ভুক্তোভোগীদের একাধিক খাবারে বারণ থাকে। তবে ভালো খবর হলো, আপনারা চাইলে অনায়াসে সয়াবিন খেতে পারেন। কারণ, এই খাবারে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা সুগার কমায়। শুধু তাই নয়, এই খাবারের গুণে ডায়াবেটিস রোগীদের কিডনিও থাকে সুস্থ-সবল। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের ডায়েটে নিয়মিত এই খাবার রাখতেই হবে। তাতেই উপকার মিলবে হাতেনাতে।
হাড়ের রোগ থাকবে দূরে
এখন তো বয়স মাত্র ৩০ পার হলেই পিছু নিচ্ছে হাড়ের অসুখ। বিশেষত, মহিলারাই অস্টিওপোরোসিস বা হাড়ের ক্ষয়জনিত রোগের ফাঁদে পড়ে কষ্ট পাচ্ছেন। যদিও ভালো খবর হলো, এই রোগের কবলে পড়ার আগে থেকে যদি নিয়মিত সয়াবিন খান, তাহলে শরীরে ক্যালশিয়ামের ঘাটতি পূরণ করতে পারবেন। শুধু তাই নয়, এতে মজুত আইসোফ্লাভোনের গুণে বোন ডেনসিটিও বজায় থাকে। যার ফলে হাড়ের ক্ষয় হওয়ার আশঙ্কা কমে। আর সেই কারণেই বিশেষজ্ঞরা নিয়মিত এই উদ্ভিজ্জ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন।
কমবে ওজন
মেদের বহর বাড়লেই মুশকিল! সেক্ষেত্রে পিছু নিতে পারে একাধিক জটিল রোগ। আর সেই তালিকায় ডায়াবেটিস থেকে শুরু করে হাই প্রেশার, কোলেস্টেরলসহ একাধিক অসুখ রয়েছে। তাই চেষ্টা করুন ঝটপট ওজন কমিয়ে ফেলার। আর সেই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে সোয়াবিন। কারণ, এই খাবার হল প্রোটিনের ভাণ্ডার। এমনকি এতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবারও রয়েছে। যার ফলে নিয়মিত সয়াবিন খেলে দ্রুত কমে ওজন। সুতরাং আপনার ওয়েট লস ডায়েটে ঝটপট এই খাবারকে জায়গা করে দিন।
রক্ত চলাচলের সাহায্য
সয়াবিনে আইসোফ্ল্যাভেন ও লেসিথিন নামে দুটি অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকে। এগুলো লো ডেনসিটি কোলেস্টেরলের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে সাহায্যে করে। এলডিএল অর্থাৎ লোডেনসিটি কোলেস্টেরল অত্যন্ত ক্ষতিকারক। ধমণির মধ্যে কোলেস্টেরলের পলি জমিয়ে রক্ত চলাচল কমিয়ে দেয় এই এলডিএল। সয়াবিনের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট এই সমস্যার মোকাবিলায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে।
অকালবার্ধক্য রোধ
সয়াবিনের আইসোফ্ল্যাভেন অত্যন্ত শক্তিশালী ফাইটো ইস্ট্রোজেন যৌগ থাকে। যা ত্বক ও চুল উজ্জ্বল ও ঝকঝকে রাখতে সাহায্য করে। সয়াবিনে থাকা লেসিথিন রক্তচাপ স্বাভাবিক রেখে হার্ট ও মস্তিষ্ককে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে। এতে অকালবার্ধক্য থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং ওজন ও নিয়ন্ত্রনে থাকে।
অন্যান্য উপকার
সপ্তাহে দিন তিনেক ৫০ মিলিগ্রাম করে সয়াবিন খেলে এইচডিএল এবং এলডিএলের ভারসাম্য রক্ষা হয়। ফলে হৃদরোগের আশঙ্কা কমে। ব্রিটিশ জার্নাল অব নিউট্রিশনে প্রকাশিত এক রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, খাবার পরিপাকের সময় সয়া-প্রোটিন নামে এক যৌগ তৈরি হয়, যা কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্যে করে। সয়া-ফাইবার রক্তের ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা স্বাভাবিক রাখে।