বৃহস্পতিবার, ০১:০২ পূর্বাহ্ন, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।
শিরোনাম :
পূবালী ব্যাংক পিএলসি’র উদ্যোগে গৌরনদীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহে ফলদ বৃক্ষরোপন কার্যক্রম উদ্বোধন আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ পালনে গৌরনদীতে বর্নাঢ্য র‌্যালি ও আলোচনা সভা চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড থেকে পদত্যাগ করলেন খিজির হায়াত খান আর কোনো দিন ভারতের আধিপত্য চলবে না: হাসনাত কারামুক্ত হলেন সাবেক এসপি বাবুল আক্তার জাতীয় ঐক্য সৃষ্টিতে একমত হয়েছেন রাজনৈতিক দলের নেতারা বাংলাদেশ সীমান্তে অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করেছে বিএসএফ নির্বাচনমুখী হয়ে গেলে কেউ আর ষড়যন্ত্র করার সাহস পাবে না : খন্দকার মোশাররফ নতুন বাংলাদেশের যাত্রায় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে চলমান অপচেষ্টা : প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশকে নতজানু-শক্তিহীন ভাবার অবকাশ নেই: আসিফ নজরুল

শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠান থেকে পাচারের টাকা উদ্ধারে কাজ শুরু

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৪ বার পঠিত

অগ্রাধিকারভিত্তিতে ১০ শীর্ষ প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে পাচারের টাকা উদ্ধারে চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) সমন্বয়ে পৃথক ১০টি টিম গঠন করা হয়েছে। টিমের সদস্যরা কোম্পানিগুলোর দেশে বিদেশে পাচারের তথ্য অনুসন্ধান, পর্যবেক্ষণ ও উচ্চ আদালতে মামলা করাসহ সার্বিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবে। ইতোমধ্যে দুইটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। তাদের দেশে-বিদেশে সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে ব্যাংকের অর্থ সমন্বয় করার জন্য উচ্চ আদালত থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এস আলম, বেক্সিমকো, নাসা, সামিট, ওরিয়ন, লোটাস কামাল, জেমকন গ্রুপসহ ১০ প্রতিষ্ঠানের অর্থ পাচারের সুনির্দিষ্ট গন্তব্য চিহ্নিত করা হয়েছে। গঠিত টিমগুলো দ্রুতই তাদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে।

বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি ইতোমধ্যে তাদের প্রতিবেদন দাখিল করেছে। এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পতিত হাসিনার শাসনামলে প্রতি বছর দেশ থেকে পাচার হয়েছে ১৬ বিলিয়ন ডলার, যা স্থানীয় মুদ্রায় প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। এ বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করা হয়েছে সরকার ও ব্যবসায়ীদের সমন্বয়ের ভিত্তিতে। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও গবেষণা সংস্থা সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে গঠিত কমিটির প্রতিবেদনে জানায়, শেখ হাসিনার শাসনামলের দুর্নীতি, লুণ্ঠন এবং ভয়ঙ্কর রকমের আর্থিক কারচুপির যে চিত্র প্রতিবেদনে পাওয়া গেছে তা আতঙ্কিত হওয়ার মতো। গত এক ডিসেম্বর প্রতিবেদনটি দাখিল করা হয় প্রধান উপদেষ্টার কাছে। এ সময়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন, আমাদের গরিব মানুষের রক্ত পানি করা টাকা যেভাবে তারা লুণ্ঠন করেছে তা আতঙ্কিত হওয়ার মতো। দুঃখের বিষয় হলো, তারা প্রকাশ্যে এ লুটপাট চালিয়েছে। আমাদের বেশির ভাগ অংশই এর মোকাবেলা করার সাহস করতে পারেনি। পতিত স্বৈরাচারী শাসনামলে ভয়ের রাজত্ব এতটাই ছিল যে বাংলাদেশের অর্থনীতি পর্যবেক্ষণকারী বহুপক্ষীয় সংস্থাগুলোও এ লুণ্ঠনের ঘটনায় অনেকাংশে নীরব ছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ইতোমধ্যে আইএমএফ, বিশ্ব ব্যাংক, এফবিআই, বিশ্বের দুর্নীতি কমিশনগুলোর শীর্ষ প্রতিষ্ঠান ডব্লিউএসিসিসহ বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থার কারিগরি সহায়তা নিয়ে আলোচিত কোম্পানিগুলোর দুর্নীতির সুর্নিষ্টভাবে অর্থ পাচারের তথ্য উদঘাটন করা হয়েছে। কিভাবে এসব দেশে অর্থ পাচার করা হয়েছিল তার তথ্য উদঘাটন করা হয়েছে। বিশেষ করে এস আলম, সামিট গ্রুপসহ একাধিক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ ব্যক্তিরা একাধিক দেশের পাসপোর্ট ব্যবহার করে দেশে আসা যাওয়া করেছেন। বাংলাদেশে আসার জন্য ভিসার প্রয়োজন নেই (নো ভিসা রিকোয়ার্মেন্ট বা এনভিআর) এমন অনুমোদন নেয়া হয়েছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে। এর ফলে দেশে প্রবেশের সময় তারা এক দেশের পাসপোর্ট ব্যবহার করা হয়েছে, আবার দেশ থেকে অর্থ নিয়ে বিদেশে যাওয়ার সময় অন্য দেশের পাসপোর্ট ব্যবহার করা হতো। এ কারণে সঠিক তথ্য বের করতে বেগ পেতে হয়েছে বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, দেশের দুর্নীতির সামগ্রিক চিত্র নিয়ে শ্বেতপত্র প্রতিবেদন থেকেও বিগত সরকারের ভয়াবহ দুর্নীতির চিত্র ফুটে উঠেছে। এরই মধ্যে সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ১০টি আলোচিত প্রতিষ্ঠানের পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারের জন্য তাদের অর্থ পাচারের একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন বিভিন্ন সংস্থার কাছে পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে এরই ভিত্তিতে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান জাভেদ ও বসুন্ধারা গ্রুপের দেশী-বিদেশী সম্পদ জব্দের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে আদালত থেকে। বাকি ৮টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও অর্থ উদ্ধারের চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পাচারের অর্থ উদ্ধারের কার্যক্রম দ্রুত করার জন্য তিনটি সংস্থার সমন্বয়ে আলাদা আলাদা টিম গঠন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে দুদক, এনবিআর ও সিআইডির সমন্বয় এসব টিমের সদস্যরা কাজ শুরু করে দিয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট এক সূত্র জানিয়েছে, পাচারের অর্থ উদ্ধারের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় নতুন করে আর অর্থ পাচার হচ্ছে না। একই সাথে হুন্ডি তৎপরতা কমে গেছে। এ কারণে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়ে গেছে। সরকারের প্রধান উদ্দেশ্যই হলো হুন্ডি তৎপরতা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা। এটা সম্ভব হবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com