শুক্রবার, ০৮:২৭ অপরাহ্ন, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।
শিরোনাম :
গৌরনদীতে সন্ত্রাস-মাদক বিরোধী র‌্যালি ও আলোচনা সভা সারাদেশে ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের কর্মবিরতি, মানববন্ধন হাসিনার দালালরা বিভিন্ন অপকর্মের ফাইল পুড়িয়ে দিয়েছে : সারজিস শেখ হাসিনাকে পুনর্বহালের ষড়যন্ত্র বিএনপি মেনে নেবে না : জয়নুল আবদিন বিডিআর হত্যাকাণ্ডে কোনো দেশের সম্পৃক্ততা পেলে দায়ী করা হবে-তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান বিদ্যুৎহীন সচিবালয়, বন্ধ দাপ্তরিক কার্যক্রম সচিবালয়ে আগুনের ঘটনা তদন্তে ৭ সদস্যের কমিটি গঠন ময়মনসিংহে ডাম্পট্রাক-অটোরিকশার সংঘর্ষে একই পরিবারের নিহত ৪ পেঁয়াজের দাম কমছেই, খুশি ভোক্তারা প্রতিদিনই বন্ধ হচ্ছে অসংখ্য মিল-কারখানা, বেকারের আর্তনাদ

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর মধ্যে ঐক্য!

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২২
  • ১০৭ বার পঠিত

উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একের পর এক হত্যাকাণ্ড ঘটছে। দুই মাসে আটটিসহ পাঁচ বছরে শতাধিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। অবশ্য বিভিন্ন সংস্থা ও বেসরকারি তথ্যমতে, এ সময় ১২০টির বেশি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। সন্ত্রাসী নবী হোসেনের গ্রুপের সঙ্গে ক্যাম্পের ২০টি থেকে ৩০টি সন্ত্রাসী গ্রুপ জোটবদ্ধ হওয়ায় ভয়ংকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আগামীতেও বড় ধরনের নাশকতার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

গোয়েন্দা তথ্যমতে, ক্যাম্পের সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী মাস্টার মুন্না গ্রুপ, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ত্রাস ডাকাত হাকিম গ্রুপ, জাবু গ্রুপ, ইসলাম গ্রুপসহ ২০টি থেকে ৩০টি ছোট-বড় সন্ত্রাসী গ্রুপ সম্প্রতি নবী গ্রুপের সঙ্গে জোট বেঁধেছে। নবীর দিকনির্দেশনায় গ্রুপগুলো এখন কাজ করছে। তাদের হাতে বিপুল সংখ্যক দেশি-বিদেশি অস্ত্র রয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থার একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার মতে, এ মুহূর্তে শুধু নবী গ্রুপের কাছেই অর্ধশতাধিক ভারী অস্ত্র রয়েছে। অস্ত্রগুলোর অধিকাংশই এম-১৬ ও একে-৪৭। সম্প্রতি ক্যাম্প থেকে পাঁচ শতাধিক গুলিসহ মার্কিন তৈরি এম-১৬টি উদ্ধার করা হয়। এগুলো নবীর গ্রুপের কাছে যাচ্ছিল। ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, নবী সম্পর্কে অনেকের ধারণা নেই। তাই তাকে অনেকে ছোটখাটো সন্ত্রাসী মনে করেন। কিন্তু নবী পুরো বাংলাদেশের জন্য হুমকি। এর আগে নবীকে দেশের জন্য হুমকি উল্লেখ করে তাকে ধরিয়ে দিতে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) পক্ষ থেকে ১০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের একটা দ্বীপে নবী বসবাস করায় তাকে ধরা যাচ্ছে না।

অভিযোগ-মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে নবীর সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী নবীকে পরিচালনা করছে। নবীসহ সশস্ত্র গ্রুপগুলোকে মদদ দিয়ে পরিকল্পিতভাবে মিয়ানমার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী হিসাবে তুলে ধরতে এবং প্রত্যাবাসন ঠেকিয়ে রাখতে চাইচ্ছে।

জানতে চাইলে নিরাপত্তা বিশ্লেষক সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর (অব.) মোহাম্মদ এমদাদুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, আমার মনে হয়- মিয়ানমার সরকারই ক্যাম্পের কয়েকটি রোহিঙ্গা গোষ্ঠীকে সহযোগিতা করে ও উস্কে দিয়ে খুনোখুনি অব্যাহত রেখেছে। কারণ তারা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় রোহিঙ্গারা সন্ত্রাসী। তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গা সন্ত্রাসবাদ থেকে চিরতরে মুক্তির একমাত্র সমাধান হচ্ছে প্রত্যাবাসন। তবে এ মুহূর্তে প্রত্যাবাসন খুব দুরূহ ব্যাপার। সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে আগাম কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারলে সস্ত্রাসবাদ কমে আসবে।

এপিবিএনের অধিনায়ক এডিআইজি হাসান বারী নুর যুগান্তরকে বলেন, জোড়া হত্যাকাণ্ডের পর ক্যাম্পে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কক্সবাজার পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) রফিকুল ইসলাম বলেন, ২০১৭ সাল থেকে ২০২২ সালের জুলাই পর্যন্ত রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে ১২০টির বেশি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। অপরাধীদের ধরতে জেলা পুলিশ বিশেষ অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তার, ইয়াবার কারবার, অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়কে কেন্দ্র করে হত্যার ঘটনা ঘটছে। এ কারণে অধিকাংশ হত্যাকাণ্ডই পরিকল্পিতভাবে করা হচ্ছে। এছাড়া মিয়ানমার সীমান্তে গড়ে ওঠা ২৮টির বেশি ইয়াবার কারখানা নবী হোসেনের নিয়ন্ত্রণে। কারও কাছে টাকা না থাকলে মানুষ বন্ধক রেখে তিনি ইয়াবার লেনদেনের সুযোগ দেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন রোহিঙ্গা নেতা বলেন, ক্যাম্পের প্রতিটি খুনের পেছনে সন্ত্রাসী নবীর হাত রয়েছে। সামনে আরও এমন হত্যার ঘটনা ঘটতে পারে। জনপ্রিয় নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের পর সাধারণ রোহিঙ্গাদের আস্থা হারিয়ে আরকান সালভেশন আর্মি (আরসা) কোণঠাসা হয়ে পড়ে। এ সুযোগে ওই গ্রুপের সদস্যদের নিজের দলে টেনেছেন নবী হোসেন। তাদের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা ও বেতন দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে বেশির ভাগ ক্যাম্প নবীর নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। যারা নবীর কথা মানছে না বা এখনো যারা আরসার সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে তাদের টার্গেট করছে নবীর গ্রুপের সদস্যরা। ২০১৯ সালে জেলা পুলিশের তথ্য মতে, নবী গ্রুপের কাছে চার শতাধিক নানা ধরনের অস্ত্র ছিল। এরপর আরও কয়েক দফায় মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি অস্ত্র সংগ্রহ করেছে নবী গ্রুপ। পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরীর দাবি, রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের হাতে কমপক্ষে ৩০ হাজারের বেশি অস্ত্র থাকতে পারে। তিনি আরও বলেন, দুই বছর ধরে নবী মানুষ বন্ধক রেখে ইয়াবার লেনদেন চালু করেছে। শুধু আমার একটি এলাকা থেকে তার কাছে শতাধিক মানুষ বন্ধক রাখার তথ্য রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com