রোজা শুরুর আগেই ভারত থেকে পেঁয়াজ ও চিনি আমদানি করতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। আজ রবিবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের করা সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। সংসদ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
সম্পূরক প্রশ্নে সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেন, ‘মন্ত্রী বাজার মনিটরিংয়ের কথা বলছেন। এখানে রাস্তা মনিটরিং, সিন্ডিকেট মনিটরিং অনেকগুলো বিষয় মনিটরিং করার আছে। যেগুলো বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সহায়তা না নিলে কতটুকু করতে পারবে? যৌথ টাস্কফোর্স আছে কি না, এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কোনো হস্তক্ষেপ চাইবেন কি না।’
জবাবে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী প্রথম কেবিনেট মিটিংয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন, আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছি। পরিবহন পর্যায়ে, বাজার ব্যবস্থাপনায় কোনো বাধা যাতে না হয়, সে ব্যাপারে গতকাল (শনিবার) প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। বাস্তবায়নে সমন্বিতভাবে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে।’
সুমনের অপর এক প্রশ্নের জবাবে আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘আমরা আগামী রমজানকে সামনে রেখে পেঁয়াজ এবং চিনির ব্যাপারে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। এই দুটি পণ্যের বিষয়ে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, বাংলাদেশকে প্রতিবেশী-বন্ধুসুলভ দেশ হিসেবে কনসিডার করে, তারা আমাদের এই রমজানের আগেই পেঁয়াজ এবং চিনি রপ্তানির জন্য অনুমোদন দেবে বলে আশা করছি।’
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারত সফর করে এসেছেন। সেখান থেকে তিনি আশ্বস্ত হয়ে এসেছেন যে— প্রক্রিয়া চলছে। আশা করি, রমজান শুরুর আগেই আমরা ভারত থেকে এবং বিকল্প অন্য মাধ্যম থেকেও পেঁয়াজ এনে সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারব।’
সরকারদলীয় সংসদ সদস্য সালাউদ্দিন মিয়াজী তার সম্পূরক প্রশ্নে বলেন, ‘মজুদদারি এবং চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী বারবার নির্দেশনা দেওয়ার পরও দেখছি আশানুরূপ ফল পাওয়া যাচ্ছে না। এ বিষয়ে খতিয়ে দেখার জন্য জরুরি ভিত্তিতে জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে একটি অনুসন্ধান কমিটি হিসেবে বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করার প্রস্তাব করছি। আমার প্রশ্ন, এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন কি?’
জবাবে আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। এর মধ্যে অন্যতম হলো— কৃষি, খাদ্য, মৎস্য এই তিনটি মন্ত্রণালয় নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। প্রত্যেক পণ্যের আমদানি এবং উৎপাদন পর্যায়ে দাম নির্ধারণ করে ভোক্তা অধিদপ্তরের মাধ্যমে মনিটরিং চালু রাখব, একটা হটলাইন চালু আছে। ভোক্তারা প্রতারিত হলে বা বেশি দামে হলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। আগামীতে রমজানের আগেই ৩৩৩ একটা হটলাইন চালু করছি।’
তিনি বলেন, ‘যে কোনো পণ্য যদি যৌক্তিক মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হয়, হটলাইনে ফোন করার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আমরা বাজারটা শুধু পুলিশিং করে না, বাজারে সরবরাহ নিশ্চিত করে বাজার স্থিতিশীল করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী রমজান উপলক্ষে এ পর্যন্ত যে পরিমাণ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি দরকার, তা যথেষ্ট পরিমাণে আমদানি হয়েছে, মজুদ আছে। চাল থেকে আরম্ভ করে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস যথেষ্ট পরিমাণে আছে। শুধু সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে যদি এটি ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছে দিতে পারি, আমরা আশা করি কোনো মজুদদার কারসাজি করার সুযোগ পাবে না।’