গাজার চলমান সংঘাতে পারমাণবিক বোমা হামলাও একটি বিকল্প হতে পারে- এ সপ্তাহের শুরুর দিকে এমন মন্তব্য করেছিলেন ইসরায়েলের এক মন্ত্রী। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অনেক দেশ। রাশিয়া বলছে, ইসরায়েলি মন্ত্রীর এই বক্তব্য অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। খবর আনাদোলু, মিডলইস্টমনিটর।
গত শনিবার গাজায় পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিয়েছিলেন ইসরায়েলের ঐতিহ্যবিষয়ক মন্ত্রী আমিহাই ইলিয়াহু। স্থানীয় একটি রেডিও চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, গাজার বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার একটি বিকল্প হতে পারে। এ নিয়ে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হলে রোববার ওই মন্ত্রীকে বরখাস্ত করে নেতানিয়াহু সরকার।
মঙ্গলবার বিষয়টি নিয়ে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বক্তব্য দিয়েছে। তারা বলছে, ইসরায়েলি মন্ত্রীর এ হুমকিতে অনেকগুলো প্রশ্নের জন্ম হয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের এমন হুমকি প্রমাণ করেছে, স্বীকার না করলেও ইসরায়েলের কাছে এই অস্ত্রের মজুত রয়েছে এবং দেশটি প্রয়োজনে তা ব্যবহার করতে ইচ্ছুক।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অন্যতম মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেন, এর মাধ্যমে আসলে ইসরায়েল স্বীকার করেছে যে তাদের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। আর সেটা যদি সত্যি হয়ে থাকে, তাহলে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা ও আন্তর্জাতিক পারমাণবিক অস্ত্র পরিদর্শকেরা এখন কোথায়? আমরা এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক তদন্ত চাই।
এদিকে পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার নিয়ে ইসরায়েলি মন্ত্রীর বক্তব্যকে ‘সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য’ বলে মন্তব্য করেছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেছেন, আমরা মনে করি, ঘৃণাপূর্ণ বক্তব্য থেকে বিরত থাকা সব পক্ষের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ।
পরমাণু অস্ত্রের ব্যাপারে ইসরায়েলি মন্ত্রী ইলিয়াহুর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে ইরানও। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমিরাবদুল্লাহিয়ান সোমবার এক্সে করা এক টুইটে দাবি করেন, এই বর্বর ও বর্ণবাদী শাসনকে নিরস্ত্র করার জন্যজাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থাকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।
উল্লেখ্য, মার্কিন বিজ্ঞানীদের একটি অংশ বিশ্বাস করে, ইসরায়েলের কাছে প্রায় ৯০টি পারমাণবিক যুদ্ধাস্ত্র রয়েছে। তবে পরমাণু অস্ত্রের মজুতের ব্যাপারে ইসরায়েল কখনোই কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি।