বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ-ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার পর বুধবার (০৪ আগস্ট) সকাল থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষার্থী এক গরিব বাসচালককে জিম্মি করে ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন অভিযোগ করে বিএম কলেজ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দুজন চাঁদাবাজের পক্ষ নিয়ে রাত ১২টায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসযোগে একদল শিক্ষার্থী এসে বটতলায় সাধারণ শিক্ষার্থী এবং পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালায়।
পাল্টা অভিযোগে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, সোমবার নগরের ব্যাপ্টিস্ট মিশন রোডে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর পরিবারের বিরোধীয় সম্পত্তি দখলের চেষ্টায় হুমকি এবং তাদের এক সহপাঠী ও তার মাকে হেনস্তা করেন বিএম কলেজের সমন্বয়ক মোস্তাফিজুর রহমান রাফি।
খবর পেয়ে ববি শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে হাজির হলে রাফিসহ তার সহযোগীদের হামলার শিকার হয়। এরপর মঙ্গলবার রাতে চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে দুই সহপাঠীকে মারধর করে বিএম কলেজ শিক্ষার্থীরা।
তারা বলেন, এ খবর ছড়িয়ে পড়লে তিনটি বাসে চড়ে ববি শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস থেকে নগরের বটতলা এলাকার দিকে রওনা দেন। একটি বাস নগরীর বটতলা এলাকায় পৌঁছানোর পথে শিক্ষার্থীবোঝাই বাসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়। তখন ববি শিক্ষার্থীরা বিএম কলেজ অভিমুখে গেলে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালানো হয় এবং বহু শিক্ষার্থীকে আহত করা হয়।
এদিকে ঘটনাটির বিষয়ে বিএম কলেজ প্রশাসনের সাথে বৈঠক করে সমাধান করা হবে বলে জানিয়েছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের ডিন ড. মো. শফিউল আলম।
অপরদিকে সকাল সাড়ে ৬টার মধ্যে বিএম কলেজ এলাকা ত্যাগ করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এছাড়া ব্রজমোহন কলেজ কর্তৃপক্ষ ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ জন শিক্ষার্থীকে সুস্থ অবস্থায় বুঝে পেয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মুহসিন উদ্দীন।
বিএম কলেজ অধ্যক্ষ আমিনুল হক ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মুহসিন উদ্দীনের যৌথ স্বাক্ষরিত একটি পত্রের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
সেখানে উল্লেখ করা হয়, সরকারি ব্রজমোহন কলেজের ৫/৬ টি গাড়ি ভাঙচুরসহ বিভিন্ন ভবনে ভাঙচুর এবং আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা বাবদ বিধি মোতাবেক সকল ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং দোষীদের শাস্তি প্রদানের অঙ্গীকার করছি। এ বিষয়ে বিএম কলেজ কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানা গেছে, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছয় শিক্ষার্থী বিএম কলেজে হামলা করতে গিয়ে বিএম কলেজের শিক্ষার্থীদের কাছে আটক হয়। তাদের কলেজের কেন্দ্রীয় মসজিদে রাতভর আটকে রাখা হয়, পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
প্রসঙ্গত, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) ও সরকারি ব্রজমোহন কলেজের (বিএম) শিক্ষার্থীদের মধ্যে রাতভর দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয়পক্ষের শতাধিক আহত হয়েছেন। দুই পরিবারের বাড়ির মালিকানা সংক্রান্ত বিরোধে এ সংঘর্ষ হয়েছে বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টা থেকে দুইপক্ষের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, যা দফায় দফায় হামলা ও সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে ভোর ৫টা পর্যন্ত চলে।