চলতি শীত মৌসুমে সারাদেশের পাশাপাশি রাজধানীতেও শীতের প্রকোপ বেড়েছে। ভোর থেকে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ঘন কুয়াশা দেখা গেছে।সেইসঙ্গে হিমেল বাতাস শীতের অনুভূতি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। বেলা বাড়লেও দেখা নেই সূর্যের। এমন অবস্থায় রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ও মহাসড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে কারওয়ান বাজার, তেজগাঁও, মহাখালী, উত্তরা, বিমানবন্দর ও খিলক্ষেতসহ আশপাশের এলাকায় এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকাজুড়েই মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশার উপস্থিতি। ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত কুয়াশার ঘনত্ব এতটাই বেশি যে, দিনের আলোতে কিছুটা দূরবর্তী জিনিস স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে না। যদিও বেলা বাড়ার সঙ্গে এমন অবস্থা কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। তবে ঠাণ্ডার অনুভূতিও অন্য সময়ের তুলনায় খানিকটা বেশি।
এ ছাড়া সকাল থেকে দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ায় অফিসগামী মানুষ এবং স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে পড়ছেন। সেইসঙ্গে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা এড়াতে চালকরা হেডলাইট জ্বালিয়ে এবং ধীর গতিতে গাড়ি চালাতে বাধ্য হচ্ছেন।
আজ সকাল ৭টায় আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে প্রকাশিত পরবর্তী ৬ ঘণ্টার জন্য ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আবহাওয়া প্রায় শুষ্ক থাকলেও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। এই সময় পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ৬-১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে। আর আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা থাকতে পারে।
এর আগে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাসে ঘন কুয়াশার কারণে সারাদেশের কোথাও কোথাও দিনের বেলায় শীতের অনুভূতি বিরাজমান থাকতে পারে বলে জানানো হয়েছে। এই একই কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নদী পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগ সাময়িকভাবে ব্যাহত হওয়ার বিষয়েও সতর্ক করা হয়েছে।
এদিকে জানুয়ারি মাসের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে তিন থেকে পাঁচটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে বাড়বে শীত এবং তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নামতে পারে।
জানুয়ারি মাসে দেশের পশ্চিম, উত্তর ও উত্তরপূর্বাঞ্চলে এক থেকে দুটি মাঝারি থেকে তীব্র এবং দেশের অন্যান্য এলাকায় দুই থেকে তিনটি মৃদু থেকে মাঝারি মাত্রার শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। দিন ও রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকলেও দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কম থাকার কারণে এ সময়ে শীতের অনুভূতি বাড়তে পারে।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে এ মাসে দেশের পশ্চিম, উত্তর ও উত্তরপূর্বাঞ্চলে দুয়েকটি মাঝারি (৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) থেকে তীব্র (৪ থেকে ৬ ডিগ্রি) শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য অঞ্চলে দু-তিনটি মৃদু (৮ থেকে ১০ ডিগ্রি) থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
এ নিয়ে আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলছেন, ‘এটা বাংলাদেশের শীতলতম মাস। এ সময় তাপমাত্রা অনেক কমে যায়। এ বছরও জানুয়ারিতে তাপমাত্রা কম থাকবে। হয়তো ২-৩টা মৃদু থেকে মাঝারি ও ১-২টা তীব্র শৈত্যপ্রবাহ চলে আসতে পারে। সে ক্ষেত্রে দেশের উত্তরাঞ্চলের তাপমাত্রা ৪-৫ ডিগ্রিতেও নেমে যেতে পারে।’