রবিবার, ০৮:২২ অপরাহ্ন, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।
শিরোনাম :

রংপুরের আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে বেপরোয়া তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৩
  • ৮৩ বার পঠিত

নির্বাচন হয়ে গেছে ২০২১ সালের ২৩ ডিসেম্বর। কিন্তু তার রেশ রয়ে গেছে একবছর পরেও। সেই জেরে পরাজিত মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি হয়েছে নজীরবিহীন হামলার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, লুটপাট হয়েছে মাছের খামার, গরু ছাগল, আসববাপত্র। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) মধ্যরাতে রংপুরের বদরগঞ্জের বিঞ্চুপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডে। ঘটনায় নেতৃত্ব দেয়ার অভিযোগ ওই ওয়ার্ডের বিজয়ী মেম্বার প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মাজেদের বিরুদ্ধে। পুলিশ জানিয়েছে এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। আরেকটি মামলার এজাহার তদন্ত চলছে।

আর ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের সাথে জড়িত থাকার সুবাদে নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর এভাবে তাণ্ডব চালাচ্ছে মাজেদ বাহিনী।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মাজেদ মেম্বার জানিয়েছেন, কোনো ঘটনার সাথেই তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এদিকে শনিবার রাতে সরকারি গাছ কেটে ইটভাটায় নিয়ে যাওয়ার সময় মাজেদ মেম্বারের মালিকানাধীন জিবিএল-২ ভাটার তিন ফায়ারম্যানকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে জনতা।

সরেজমিন পরিদর্শনের সময় ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, শুক্রবার রাত ১০টা থেকে সাড়ে ১২টা। কিছু বুঝে উঠার আগেই ৫০ থেকে ৬০ জনের একটি দুর্বৃত্তদল দা, খন্তি, বেকি, বল্লম, কুড়াল, হকিস্টিক, তীর, লাঠিশোঠাসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বদরগঞ্জের বুজরুক বাগপাড় সরকার পাড়া শান্তিরবাজার আশেপাশের বসতবাড়ি, দোকানপাট ও কৃষি খামারে বেপরোয়া তাণ্ডব চালায়। হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করা হয় ছাত্তার, মোক্তারুল, রওশন, আলতাফ, মনজুল, আফতাব, তাহসিন, নুর আলম, ইমরান, মুছা মিয়ার বসতবাড়ি। ভাংচুর করে ইমরান এবং সাদেকুল ইসলাম দোকান। দুর্বত্বরা খুলে নিয়ে যায় অনেক বাড়ির বৈদ্যুতিক মিটার। হামলা থেকে বাদ যায়নি নারী ও শিশুরাও।

সরেজমিনে দেখা গেছে সব থেকে বেশি ভাংচুর ও লটুপাট হয় উপজেলার জ্যেষ্ঠ ইটভাটা ও রড সিমেন্ট ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীন এবং মোক্তারুল ইসলামের। সরেজমিনে দেখা গেছে জয়নালের বসতবাড়ি, বায়োফ্লোকের মাছের খামার, গরু ছাগল লুটের পাশাপাশি কৃষি প্রযুক্তির সব কিছুতেই চালানো হয় বেপরোয়া ভাংচুর। আগুন ধরিয়ে দেয়ারও চেষ্টাও করা হয়।

ভুক্তভোগী জেষ্ঠ্য ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীন তার বাড়ির হামলার ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বার বার কেঁদে ফেলেন। তিনি জানান, `ব্যবসার সুবাদে বদরগঞ্জ রেজিষ্ট্রি অফিসের সামনেই থাকি আমরা। কিন্তু বাগপাড়ের বাড়িতেই আমার খামার বাড়ি। ঘটনার সময় মাজেদ মেম্বার আমার খুলিতে দাড়িয়ে বলেছে, আগে বাড়ি লুট করো, ভাংচুর করো, তারপর জ্বালিয়ে দাও। লুটপাট ভাংচুর করেছে। আগুন জ্বালানোর জন্য তারা মবিল ও পেট্রোল দিয়েছিল আমার দেয়ালে ও গেটে। ওই সময় পুলিশ চলে আসায় সেটা করতে পারেনি তারা। তা নাহলে সব জ্বালিয়ে দিত তারা। অনেক কষ্ট করে আমি খামার করেছি। সব শেষ করে দিল তারা। আমার ওপর মাজেদ মেম্বার এই অন্যায় অত্যাচার দীর্ঘদিন থেকে করছে। আমি তাকে ভোট দেই না। আমি তাকে সাপোর্ট করি না এটা আমার অপরাধ। যারা তাকে ভোট দেয় নাই। সাপোর্ট করে নাই। তাদের ওপর তার এই অত্যাচার চলে আসছে। বিভিন্নভাবে তাদের ওপর জুলুম করে। দোকাট পাট বাড়ি ঘর ভেঙে দিয়েছে।`

জয়নাল আবেদীন বলেন, `আমি তাদের কোনো ক্ষতি করি নাই, অন্যায় করি নাই। আমরা বাড়িতেও থাকি না। কেয়ারটেকার ছাড়াও ছেলে শাহ আলম সেখানে দেখাশুনা করেন। এর আগেও তারা অনেক ক্ষতি করেছে আমার। আমি তাদের বিরুদ্ধে ছয় বার অভিযোগ করেছি। থানায় আমার মামলা এন্ট্রি হয়নি। এবারও মামলা দিয়েছি। মামলা এন্ট্রি করবে কিনা তা জানি না। এখন আমরাই নিজেরাই জীবনের নিরপত্বাহীনতায় ভুগছি।`

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com