কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম। বিস্তীর্ণ হাওরের মাঝে বিচ্ছিন্ন এক উপজেলা। যেখানে অনেকের ভিড়ে এবারের ঈদে দুজন বিশেষ মানুষের দেখা পাবে টিভি দর্শকরা; তারা হলেন নসু মাঝি আর সন্ধ্যাতারা।
হাওরের এই দুজন মানুষকে ঘিরে একটি বিশেষ টেলিছবি রচনা ও নির্মাণ করেছেন হিমু আকরাম। নাম রেখেছেন ‘সন্ধ্যা নামের নদীটা’। এতে নসু চরিত্রে শ্যামল মাওলা আর সন্ধ্যা হলেন মিহি আহসান। পুরো শুটিং হয়েছে অষ্টগ্রামেই।
গল্পে দেখা যাবে, নসু মাঝি হাওরে ট্রলার চালায়। জামাল মিয়ার ৮টা ট্রলারের মধ্যে একটার দায়িত্ব নসুর। বিকেল হলে নদীতে যখন ঢেউ বাড়ে নসুর তখন সন্ধ্যার জন্য মন পোড়ে। সন্ধ্যার কথা ভাবতে ভাবতেই তার দিন যায়, রাত পোহায়। নসু মাঝি অবশ্য তাকে সন্ধ্যা বলে ডাকে না, ডাকে সন্ধ্যাতারা নামে। চুরি করে স্টুডিওতে ছবি তোলা, গ্রামের হাটে জিলিপি কেনা, আলতা পরানো- ভালোই কাটে নসু আর সন্ধ্যাতারার প্রেম। বাড়ে একে অপরের প্রতি মায়া।
একদিন ইজারাদার লোকমান আসে সন্ধ্যাকে বিয়ে করতে। গঞ্জে শাড়ি-চুড়ি বিক্রি করা সন্ধ্যার গরিব বাবা রাজি হয় সেই বিয়েতে। রাজি হয় না শুধু সন্ধ্যা। নসু মাঝির জন্য তার মন পোড়ে। নসুকে নিয়ে পুবের চরে একচালা ঘর ওঠানোর স্বপ্ন তার বহু দিনের!
এ পর্যন্ত গল্পটা পুরনো আদলের মনে হলেও, ভিন্নতা তৈরি হয় টেলিছবিটির পরের অংশে; যা আগাম বলতে নারাজ নির্মাতা।
এ প্রসঙ্গে নির্মাতা হিমু আকরাম বলেন, ‘এটা একটা মিস্টিরিয়াস স্টোরি। যে গল্পটা চলতে চলতে মিশে যায় হাওরের জলে। স্টোরি টেলিংয়ের ক্ষেত্রে আমি অলওয়েজ অনেকগুলো লেয়ার খুঁজি। এখানেও তাই চেষ্টা করেছি। নাট্যনির্মাতাদের মধ্যেও যেমন দু’দল আছে। একদল কেবল গল্প বলার ইচ্ছে থেকে কাজ করেন, অন্যদল থাকে হিট হওয়ার তরিকায়। আমি গল্প বলার দলে ছিলাম সবসময়। যে গল্পগুলোকে আমার কাছে মনে হয় সময়ের এক একটা দলিল, যা কিনা সবাই বলতে পারে না। অথবা বলে না। সেই না বলা গল্পের মিছিলেই থাকবে ‘সন্ধ্যা নামের নদীটা।’
শ্যামল মাওলা এবং মিহি আহসান টেলিছবির গল্প প্রসঙ্গে জানান, মুগ্ধ হওয়ার মতো লোকেশন এবং দারুন সব চরিত্রের টেলিছবি ‘সন্ধ্যা নামের নদীটা।’ এই সময়ে এসে এভাবে গল্প বলার সাহস রাখেন অল্প কজন নির্মাতা। সেই দিক থেকে এটা অবশ্যই মনে রাখার মতো কাজ হবে।
আসন্ন ঈদুল আজহায় আরটিভিতে প্রচার হবে টেলিছবিটি। শ্যামল-মিহি ছাড়াও এতে অভিনয় করেছেন আশীষ খন্দকার, ম ম মোরশেদ, শম্পা নিজাম, শতাব্দী ওয়াদুদ, হেদায়েত নান্নু প্রমুখ।