সোমবার, ০২:৪৬ পূর্বাহ্ন, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।
শিরোনাম :

যেভাবে গ্রেপ্তার হলেন নাথান বমের সহযোগী চেওসিম

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৪
  • ৪০ বার পঠিত

স্টিলের আলমারির ভেতরে লুকিয়ে ছিলেন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) ‘প্রধান সমন্বয়ক’ চেওসিম বম (৫৫)। আজ রবিবার বিকেলে বান্দরবান জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‌্যাব-১৫-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ।

এর আগে গতকাল শনিবার রাতে সদর উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়নের শ্যারনপাড়ার বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ তথ্য আজ প্রকাশ্যে আনা হয়।

গ্রেপ্তার চেওসিম বম শ্যারনপাড়ার মৃত বোয়াল খুব বমের ছেলে। তিনি কেএনএফের কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক। কেএনএফ প্রধান নাথান বমের সহযোগী হিসেবে পরিচিত তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ বলেন, ‘গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে চেওসিম বমের বাড়ি ঘেরাওয়ের পর ভেতরে প্রবেশ করে র‌্যাব। কিন্তু কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। একপর্যায়ে ঘরে থাকা স্টিলের আলমারির ভেতর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি আলমারিতে লুকিয়ে ছিলেন। তার কাছ থেকে দু‌টি বন্দুক উদ্ধার করা হয়েছে।’

কেএনএফ প্রধান নাথান বমের সঙ্গে চেওসিম বমের আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে জানিয়ে এইচ এম সাজ্জাদ বলেন, ‘বান্দরবানে কেএনএফের সশস্ত্র হামলা ও ব্যাংক লুটের বিষয়ে আমরা চেওসিমকে জিজ্ঞাসাবাদ করবো। একইসঙ্গে কেএনএফ প্রধান নাথান বম কোথায় আছে, তাও জানার চেষ্টা করবো। কারা হামলা করেছে, কাদের সহযোগিতা ছিল—তাও জিজ্ঞাসাবাদ করবো। পাশাপাশি তার সহযোগীদের অবস্থান ও পরিকল্পনা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবো।’

চেওসিম বম বান্দরবান জেলায় প্রথম কেএনএফের কমিটি গঠন করেছিলেন উল্লেখ করে এইচএম সাজ্জাদ আরও বলেন, ‘জ‌ঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার নেতা শামীম মাহফুজ এবং নাথান বমের সঙ্গে অর্থের বিনিময়ে দুই সংগঠনের সদস্যদের প্রশিক্ষণের চুক্তি নিজ বাড়িতে বসে করেছিলেন চেওসিম। এখনো নাথান বমের সঙ্গে তার যোগাযোগ হয় বলে আমাদের কাছে তথ্য আছে।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপ‌স্থিত ছি‌লেন র‍্যাব-১৫-এর উপ-অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ শরীফুল আহসান এবং কোম্পানি অধিনায়ক সিপিসি-৩ স্কোয়াড্রন লিডার তৌহিদুল মুবিন খানসহ র‌্যাব কর্মকর্তারা।

এর আগে গতকাল শনিবার থেকে বান্দরবানে সন্ত্রাসী সংগঠনটির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে র‍্যাব। অভিযানে অংশ নেন এলিট ফোর্সটির শতাধিক সদস্য। র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন শুক্রবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযানের কথা জানান। আজ থেকে বান্দরবানের থানচি ও রুমা উপজেলায় শুরু হয় যৌথ অভিযান।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার রাতে তারাবি নামাজের সময় বান্দরবানের রুমা শাখা সোনালী ব্যাংক ও আশেপাশের এলাকা ঘিরে ফেলে শতাধিক সশস্ত্র দুর্বৃত্ত। এরপর মসজিদ থেকে ব্যাংক ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে ধরে নিয়ে ব্যাংকের ভেতরে মারধর করে তারা। পরে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

এ সময় ব্যাংকের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ১০ পুলিশ ও ৪ আনসার সদস্যকে নিরস্ত্র করে ৮টি চাইনিজ অটোমেটিক রাইফেল, ২টি এসএমজি, ৪টি শটগান ও ৪১৫ রাউন্ড গুলি ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এ সময় ২ পুলিশ সদস্য আহত হন। এ ঘটনার ১৬ ঘণ্টা পর থানচিতে আরও দুটি ব্যাংকে ডাকাতি হয়।

গত বৃহস্পতিবার রাতে অপহৃত সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা নেজাম উদ্দিনকে রুমা বাজার থেকে উদ্ধার করে র‌্যাব। এর পরপরই থানচি থানা থেকে গোলাগুলির শব্দ শোনেন স্থানীয়রা। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এই গোলাগুলি চলে।

এর রেশ কাটতে না কাটতেই মধ্যরাতে আলীকদমের ২৬ মাইল ডিম পাহাড় এলাকায় যৌথবাহিনীর চেক পোস্টে হামলা হয়। সবগুলো ঘটনার সঙ্গেই কেএনএফ জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরপর থেকেই পার্বত্য অঞ্চলে অভিযান শুরু করে যৌথবাহিনী।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com