অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের প্রথম সেমিফাইনালে পাকিস্তানকে হেসেখেলে হারিয়েছে বাংলাদেশ। তাদের দেয়া ১১৭ রানের টার্গেট মাত্র ২২ ওভার ১ বল ব্যাট করেই পেরিয়ে যায় বাংলাদেশ। এদিকে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে সমান ৭ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে ভারত।
আগামী ৮ ডিসেম্বর দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।
শুক্রবার দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে যুব এশিয়া কাপের প্রথম সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের অনূর্ধ্ব-১৯ দল। ইকবাল হোসেন ইমন ও মারুফ মৃধাদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে পাকিস্তানকে মাত্র ১১৬ রানেই গুটিয়ে দেয় যুব টাইগাররা।
টস জিতে পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ। মারুফ মৃধা প্রথম ওভারেই আঘাত হানেন। দলীয় ২ রানে আউট করেন ওপেনার উসমান খানকে (০)। এরপর নিজের দ্বিতীয় ওভারে আরো আরেক ওপেনার শাহজাইব খানকেও ০ রানে ফেরান এই পেসার।
মাঝে অধিনায়ক সাদ বাইগ আর মোহাম্মদ রিয়াজুল্লাহ প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছিলেন। সেট এই দুই ব্যাটারকেই আউট করেন আরেক পেসার ইকবাল হোসেন ইমন।
৭৯ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে পাকিস্তান। এরপর ফারহান ইউসুফ (৩২) ছাড়া আর কোনো ব্যাটারকে দাঁড়াতে দেয়নি বাংলাদেশ।
টাইগার পেসার ইকবাল হোসেন ইমন ২৪ রান দিয়ে নেন ৪টি উইকেট। ২৩ রানে ২ উইকেট শিকার করেন আরেক পেসার মারুফ মৃধা।
ছোট লক্ষ্য তাড়ায় যুব টাইগাররা দেখেশুনে শুরুর পর স্ট্রাইকরেট বাড়িয়েছেন প্রয়োজনমতো। মাত্র ৩৯ বলে ব্যক্তিগত ফিফটি তুলে নিয়েছেন গ্রুপপর্বে একটি করে সেঞ্চুরি ও হাফসেঞ্চুরি করা তামিম। ফলে বাংলাদেশও ওয়ানডে ফরম্যাটের ম্যাচটি মাত্র ২২.১ ওভারেই জিতেছে।
এদিকে একই দিনে শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে যুব এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠেছে ভারত।
শারজায় চলতি যুব বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মাঠে নামে ভারত ও শ্রীলঙ্কা। টস জিতে শুরুতে ব্যাট করতে নামে শ্রীলঙ্কা। শুরতে মাত্র ৮ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় শ্রীলঙ্কার যুব দল।
নিয়মিত উইকেট হারাতে থাকা শ্রীলঙ্কা ৪৬ দশমিক ২ ওভারে ১৭৩ রানে অল-আউট হয়ে যায়। দলের হয়ে সব থেকে বেশি ৬৯ রান করেন লাকভিন আবেসিংহে। ১১০ বলের সতর্ক ইনিংসে তিনি ৩টি চার ও ২টি ছক্কা মারেন। ৭৮ বলে ৪২ রান করেন শরুজান শানমুগানাথন। তিনি ২টি চার মারেন।
বাকিদের মধ্যে দুই অঙ্কের রান করেন কেবল কবিজা গামাগে (১০) ও বিহাস থিউমিকা (১৪)। ভারতের হয়ে ৮ ওভারে ৩৪ রান খরচ করে ৩টি উইকেট দখল করেন চেতন শর্মা। ১০ ওভারে ৩২ রান খরচ করে ২টি উইকেট নেন কিরণ। ১০ ওভারে ৩৭ রান খরচ করে ২টি উইকেট নেন আয়ুষ মাত্রে। ১টি করে উইকেট নেন যুধাজিৎ গুহ ও হার্দিক রাজ।
পালটা ব্যাট করতে নেমে ভারতের দুই ওপেনার বৈভব সূর্যবংশি ও আয়ুষ শুরু থেকে ঝড় তোলেন। প্রথম ২ ওভারে ৪৫ রান সংগ্রহ করে ভারত। তিন ওভারেই দলগত ৫০ রান টপকে যায় ভারতীয় দল। ওপেনিং জুটিতে ৮ দশমিক ৩ ওভারে ৯১ রান তুলে ফেলে ভারত।
শেষে ব্যক্তিগত ৩৪ রানের মাথায় আউট হয়ে মাঠ ছাড়েন আয়ুষ। ২৮ বলের ইনিংসে তিনি ৭টি চার মারেন। চলতি যুব এশিয়া কাপের দ্রুততম অর্ধশতরান করেন ১৩ বছরের বৈভব সূর্যবংশি। তিনি ৫টি চার ও ৪টি ছক্কার সাহায্যে মাত্র ২৪ বলে হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন।
বৈভব ৩৬ বলে ৬৭ রানের মারকাটারি ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরেন। তিনি ৬টি চার ও ৫টি ছক্কা মারেন। ২টি বাউন্ডারির সাহায্যে ২৭ বলে ২২ রান করে আউট হন আন্দ্রে সিদ্ধার্থ। অধিনায়ক মহম্মদ আমন ২৬ বলে ২৫ রান করে অপরাজিত থাকেন। তিনি ২টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন। ১৪ বলে ১১ রান করে নট-আউট থাকেন কেপি কার্তিকেয়া।
ভারত ২১ দশমিক ৪ ওভারে ৩ উইকেটের বিনিময়ে ১৭৫ রান তুলে ম্যাচ জিতে যায়। ১৭০ বল বাকি থাকতে ৭ উইকেটে ম্যাচ জিতে ফাইনালের ওঠে ভারতীয় দল। ম্যাচের সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার জেতেন বৈভব সূর্যবংশি।