মানবপাচার প্রতিবেদন (টিআইপি রিপোর্ট)-২০২২ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। টিআইপি প্রতিবেদন হলো পাচার রোধে বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নথি। এটি মানবাধিকার, আইন প্রয়োগ এবং জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে বিশ্ব নেতৃত্বের প্রতি মার্কিন সরকারের প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত করে।
প্রতিবেদনটিতে বাংলাদেশ সম্পর্কে বলা হয়েছে, সরকার পাচার নির্মূলের ন্যূনতম মানগুলো পূরণে ব্যর্থ হলেও উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। যা কিনা সামগ্রিকভাবে ক্রমবর্ধমান প্রচেষ্টা প্রদর্শন করেছে। তাই বাংলাদেশ টায়ার ২-এ রয়ে গেছে।
এই প্রচেষ্টার মধ্যে রয়েছে শ্রম পাচারের মামলায় জড়িত একজন সংসদ সদস্যের বরখাস্তসহ মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান তদন্ত, বিচার এবং দোষী সাব্যস্ত করা।
আগস্ট ২০২১ সালে সাতটি পাচার বিরোধী ট্রাইব্যুনাল পুনরায় কাজ শুরু করে এবং রংপুর ও রাজশাহী ট্রাইব্যুনাল দোষী সাব্যস্ত করার জন্য তৃতীয় এবং চতুর্থ আদালতে পরিণত হয়। সরকার জোরপূর্বক শ্রমের বিরুদ্ধে প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে আইএলওর বাধ্যতামূলক শ্রম সম্মেলনের প্রটোকল অনুমোদন করেছে। তবে সরকার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে ন্যূনতম মান পূরণ করতে পারেনি। সরকার আগের রিপোর্টিং সময়ের তুলনায় কম সম্ভাব্য পাচারের শিকার চিহ্নিত করেছে এবং শিকারের যত্ন অপর্যাপ্ত রয়ে গেছে।
সরকার রিক্রুটিং এজেন্সিগুলিকে অভিবাসী কর্মীদের কাছে উচ্চ নিয়োগ ফি নেওয়ার অনুমতি দেওয়া অব্যাহত রেখেছে এবং নিয়মিতভাবে অবৈধ নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনাকারী সাব-এজেন্টদের মোকাবেলা করেনি, যা শ্রমিকদের পাচারের ঝুঁকিতে ফেলেছে।
আরও বলা হয়েছে, সরকার অরক্ষিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে পাচারের শিকার ব্যক্তিদের সনাক্ত করার জন্য অভিন্নভাবে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং পদ্ধতি (এসওপি) নিয়োগ করেনি, যার ফলে কিছু প্রত্যাবর্তনকারী অভিবাসী কর্মী এবং সম্ভাব্য পাচারের শিকারদের শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
উপরন্তু সরকার নীতিগত পরিবর্তনগুলো অনুসরণ করেছে যা সম্ভাব্য শ্রম পাচারের শিকার ব্যক্তিদের অপরাধমূলক তদন্ত শুরু করার আগে দেওয়ানি সালিশের মধ্য দিয়ে যেতে বাধ্য করবে। এদিকে মানবপাচার রোধে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে টিআইপি হিরো অর্জন করেছেন জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ারের কান্ট্রি ডিরেক্টর তারিকুল ইসলাম।
উল্লেখ্য যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর প্রতিবছরই মানবপাচার রিপোর্ট প্রকাশ করলেও এবারই প্রথম এ নিয়ে কাজ করা প্রথম ৬ জনকে পুরস্কৃত করেছে।