‘টসে জেতো, ফিল্ডিং নাও, ম্যাচ জেতো’। এবারের বিপিএলে মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পিচের আচরণ বেশিরভাগ ম্যাচেই এমন ছিল। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে এলিমিনেটরের ম্যাচে টস জিতে তাই ফিল্ডিং নিতে দ্বিতীয়বার ভাবতে হয়নি ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবালকে। টস হেরে শুরু, তবে চট্টগ্রামের ফাইনালের স্বপ্ন ফিঁকে হয়ে যায় নিজেদের ব্যাটিং ইনিংসের পর।
হারলেই বাদ; এমন বাস্তবতার ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১৩৫ রান করে চট্টগ্রাম। জবাব দিতে নেমে কাইল মেয়ার্স ও তামিম ইকবালের ৫৪ বলে ৯৮ রানের ঝোড়ো জুটিতে ৩১ বল ও ৭ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বরিশাল। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে এখন বরিশাল খেলবে প্রথম কোয়ালিফায়ারে হারা দলের বিপক্ষে। মানে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স বা রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে।
১৩৬ রানের ছোট লক্ষ্যেও শুরুটা ভালো করতে পারেনি বরিশাল। কোনো রান না করেই ফেরেন ব্যাটিং অর্ডারে উন্নতি পেয়ে ওপেনিংয়ে নামা সৌম্য সরকার। তবে শুরুর সেই ধাক্কাকে পাত্তা না দিয়ে ঝোড়ো ব্যাটিং শুরু করেন তামিম ও মেয়ার্স। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ওই ১ উইকেট হারিয়েই ৭৩ রান তুলে ফেলে বরিশাল।
মাত্র ২৫ বলে ৫০ রান করেন মেয়ার্স। এর মধ্যে শুভাগত হোমের করা তৃতীয় ওভারে ৩টি ছয় ও ২টি চারে তুলে নেন ২৬ রান। বরিশাল তাদের দলীয় শতরান পূর্ণ করে ৯ ওভার ১ বলে। তার পরের বলেই ফেরেন মেয়ার্স। ভাঙে তামিমের সঙ্গে তার ৯৮ রানের জুটি। ৫০ রানের ইনিংসে ৩টি চার ও ৫টি ছক্কা মারেন মেয়ার্স। এরপর ব্যাটিংয়ের গতি কমে যায় তামিমের। ১৭ রান করে আউট হন চারে নামা মিলার। তবে জয়ের বন্দরে মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে সাবলীলভাবেই পৌঁছান তামিম। ৪১ বলে পঞ্চাশ পূর্ণ করা বরিশাল অধিনায়ক অপরাজিত ছিলেন ৫২ রানে। ৯টি চারে এই রান করেন তিনি। ৬ রানে অপরাজিত ছিলেন মুশফিক।
এর আগে, বরিশালের বোলারদের সম্মিলিত আক্রমণে ১৩৫ রানেই থামে চট্টগ্রাম। বরিশালের ৩ পেসার কাইল মেয়ার্স, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও ওবেড ম্যাককয় ২টি করে উইকেট তুলে নিয়েছেন। এর মধ্যে মেয়ার্স ও সাইফউদ্দিন ২৮ রান আর ম্যাককয় ২৯ রান দেন। তাইজুল ইসলাম নির্ধারিত ৪ ওভারে মাত্র ২২ রান দিয়ে ১ উইকেট ও জেমস ফুলার সমান ওভারে ২৬ রান দিয়ে একটি উইকেটই নেন।
মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে শুরু থেকেই চট্টগ্রামকে চেপে ধরে বরিশাল। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৪০ রান তোলে দলটি। রান পাননি তানজিদ হাসান তামিম ও ইমরানুজ্জামানরা। ৮৪ রান তুলতেই ফেরেন আরও ৩ ব্যাটার। জশ ব্রাউন ২২ বলে ৩৪ রান করে আউট হন। তবে টম ব্রুস (১৭) ও সৈকত আলী (১১) উইকেটে সেট হয়েও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি।
ছয়ে নামা অধিনায়ক শুভাগত হোম ২৪ রান করলেও বাকিদের ব্যর্থতায় শেষ দিকেও রান করতে পারেনি চট্টগ্রাম। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৩৫ রানে থামে চট্টগ্রাম।