সাইদেয়া মারুফা। একজন কলেজ শিক্ষার্থী। তিনি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য মেকআপ করেন। গরমের সময় ঘামে নষ্ট হয় না অথবা সামান্য পানিতে নষ্ট হয় না এমন মেকআপও তিনি করে থাকেন। কখনো কখনো মেকআপ পুরোপুরি পরিষ্কার না করেই তাঁকে অজু করতে হয়। তাঁর প্রশ্ন হলো, মেকআপ অবস্থায় অজু করলে কি অজু হয়?
প্রাজ্ঞ আলেমরা বলেন, মেকআপের উপকরণ পানিরোধক না হয় এবং সে মুখে রেখে অজু করলে যদি চামড়া পর্যন্ত পানি পৌঁছানোর নিশ্চয়তা থাকে, তবে মেকআপ অবস্থায় অজু করলে অজু হয়ে যাবে। আর যদি মেকআপ পানিরোধক হয়, তবে অজু হবে না। মেকআপ অপসারণ করে অজু করতে হবে। কেননা চামড়া পর্যন্ত পানি পৌঁছানো ফরজ।
এ বিষয়ে ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে লেখা হয়েছে, ‘যদি অজুর কোনো স্থানে সুইয়ের আগা পরিমাণ জায়গা শুকনা থাকে অথবা নখের গোড়ায় শুকনা বা ভেজা মাটি লেগে থাকে, তবে তা জায়েজ হবে না (অজু হবে না)। তবে হাতে যদি খামির বা মেহদির দাগ দেয়, তবে অজু হবে। আল্লামা দাবুসি (রহ.)-কে জিজ্ঞাসা করা হলো, এক ব্যক্তি খামির (আদা বা ময়দার) তৈরি করে। তার হাতে খামির লেগে থাকে এবং তা শুকিয়ে যায়। এমন ব্যক্তি অজু করলে হবে? তিনি বলেন, অল্প পরিমাণ হলে জায়েজ যাবে। এমনিভাবে নখের নিচে যদি কিছু আটা আটকে থাকে, তবে সেখানে পানি পৌঁছানো ওয়াজিব। কেননা সেখানে অজুর কিছু অংশ রয়েছে।
ইমাম জাহেদ আবু নসর সাফফার (রহ.) লেখেন, যদি নখ এত লম্বা হয় যে আঙুলের কিছু অংশ ঢেকে যায়, তবে তার নিচে পানি পৌঁছানো ওয়াজিব। আর নখ ছোট হলে তা ওয়াজিব নয়।
জামিউস সগিরে লেখা হয়েছে, যে ব্যক্তির নখ বড় এবং তার নখে ময়লা থাকে, অথবা যে ব্যক্তি মাটির কাজ করে, অথবা যে নারী মেহদি দিয়ে আঙুল রাঙিয়েছেন বা যাঁর হাতে চামড়ার আবরণ লেগে থাকে, এদের প্রত্যেকের ব্যাপারে বিধান হলো এদের অজু হয়ে যাবে।
শর্ত হলো- এগুলো চামড়া পর্যন্ত পানি পৌঁছানোর ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক হবে না, পানি পৌঁছাতে কোনো সমস্যা হবে না। কেউ যদি চুল-দাঁড়িতে খিজাব ব্যবহার করে এবং শুকিয়ে যাওয়ার পানি পৌঁছাতে বাধা দেয়, তবে ব্যক্তির অজু ও গোসল হবে না। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া, পবিত্রতা অধ্যায় : ১/৪)
সর্বোপরি বলতে চাই- আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সবচেয়ে ভালো জানেন।