মৃত্যুদন্ড সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী গোলাম মাওলা(৫৮)’কে দীর্ঘ চৌদ্দ বছর পর কুমিল্লার কোতোয়ালি থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-২।
২০০৯ সালের ১০ জুলাই যশোরে র্যাব গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বেনাপোল সড়কের গলফ ফিলিং স্টেশনের সামনে চেকপোস্ট স্থাপন করে যানবাহন তল্লাশিকালে একটি কার্গো গাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় আমদানি নিষিদ্ধ ফেনসিডিল উদ্ধার এবং গ্রেফতারকৃত আসামী সহ আরো ২ জনকে আটক করে। এই ঘটনায় র্যাব বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে তিনজনকে আসামি করে যশোর জেলার কোতোয়ালী থানায় মামলা করেন। যাহা মামলা নং-৩২, তারিখ-১০/০৫/২০০৯ ইং। গ্রেফতারকৃত আসামী জামিনে মুক্ত হয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নজর এড়িয়ে চট্টগ্রাম,কুমিল্লার বিভিন্ন এলাকায় ছদ্মবেশ ধারণ করে আত্মগোপনে চলে যায়। মামলাটি তদন্ত শেষে আসামীদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
পরবর্তীতে মামলাটির দীর্ঘ বিচারিক কর্যক্রম শেষে আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় গত ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ খ্রিঃ যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালত এবং স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক বিশেষ ক্ষমতা আইন মামলায় গ্রেফতারকৃত পলাতক আসামী গোলাম মাওলা সহ অপর দুইজনের মৃত্যুদন্ড ও অর্থদন্ড সাজা প্রদান করে গ্রেফতারী পরোয়ানা ইস্যু করেন। পরবর্তীতে মৃত্যুদন্ড সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী গোলাম মাওলা’কে গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাব-২ এর একটি অভিযানিক দল ছায়া তদন্ত শুরু করে ও গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায়, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-২ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল অদ্য ১৮ এপ্রিল ২০২৩ ইং তারিখ কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মৃত্যুদন্ড সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী গোলাম মাওলা(৫৮), পিতা-মৃত এরশাদ উল্লাহ, সাং-পশ্চিম আহাম্মদপুর, থানা-সেনবাগ, জেলা-নোয়াখালী’কে দীর্ঘ ১৪ বছর পর গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃত মৃত্যুদন্ড সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী গোলাম মাওলা’কে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায় যে, মাদক মামলায় পুলিশ কর্তৃক ঘটনাস্থলে মাদক সহ হাতে নাতে ধৃত হওয়ার পর বিজ্ঞ আদালত হতে জামিনে বের হয়ে নিয়মিত হাজিরা না দিয়ে গ্রেফতার এড়ানোর জন্য সে প্রথমদিকে চট্টগ্রাম জেলাধীন বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কখনো দিনমজুর, কখনো কারখানার শ্রমিক সেজে কাজ করে। সর্বশেষ গ্রেফতার হওয়ার ২ বছর পূর্ব হতে কুমিল্লার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নাইট গার্ড হিসেবে কর্মরত ছিল। এভাবে দীর্ঘ ১৪ বছর সে পলাতক থাকে। এছাড়াও গ্রেফতারকৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যাচাই বাছাই করে ভবিষ্যতে র্যাব-২ এই ধরনের অপরাধে জড়িত দীর্ঘদিনের পলাতক দন্ডপ্রাপ্ত অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য অভিযান অব্যাহত রাখবে।
গ্রেফতারকৃত মৃত্যুদন্ড সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়।