তামিম-সাকিবরা ব্যর্থ হলেও ‘মিস্টার ডিপেন্ডেবল’ খ্যাত মুশফিকুর রহিমের অনবদ্য ইনিংসের বদৌলতে আয়ারল্যান্ডকে সিরিজরে প্রথম ওয়ানডেতে শেষ পর্যন্ত ২৪৭ রানের লক্ষ্য দিতে পেরেছে বাংলাদেশ।
১০২ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর মাঠে নেমেছিলেন মুশফিকুর রহিম। মাস খানেক আগে আইরিশদের বিপক্ষে দেশের মাটিতে যেখানে শেষ করেছিলেন, আজ যেন সেখান থেকেই শুরু করলেন। অতঃপর যখন ফিরলেন, বলা যায় ৩৬তম জন্মদিনটা অনেকাংশেই রাঙিয়ে ফেলেছেন। খেলেন ৭০ বলে ৬১ রানের ইনিংস।
মঙ্গলবার ইংল্যান্ডের চেমসফোর্ডের এ ম্যাচে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমেই বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ। দ্রুত ফেরেন দলের উভয় ওপেনার। তামিম ইকবাল কিংবা লিটন দাস, কেউ দিতে পারেননি আস্থার প্রতিদান। খোলনলচে থেকে বের হবার আগেই এই দুজনকে হারায় টাইগাররা।
বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি টেকে মাত্র ৪ বল। দলীয় প্রথম ওভারেই জশুয়া লিটিলের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে ফেরেন লিটন দাস। গোল্ডেন ডাক মারেন তিনি।
তামিম শিকার হন মার্ক অ্যাডাইরের। ১৯ বলে ১৪ রান করা তামিমকে চতুর্থ ওভারে লরকান টাকারের ক্যাচ বানান তিনি। ৪ ওভার শেষে দলের সংগ্রহ তখন মাত্র ১৫ রান।
১৫ রানে ২ উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরে আছেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও সাকিব আল হাসান। দু’জনেই নিজের মতো খেলার চেষ্টায় রত থাকেন। কাউন্টার অ্যাটাকে চাপ সামলে ৪৭ বলের জুটিতে আনেন ৩৭ রান। সুবাদে পাওয়ার প্লে শেষে বাংলাদেশ সংগ্রহ পায় ২ উইকেটে ৫০ রান।
তবে পাওয়ার প্লে থেকে ফিরে পরের ওভারেই ফেরেন সাকিব। দলের হাল ধরতে ব্যর্থ হন তিনি। ভালো শুরু পেয়েও ইনিংসটা তার থেমেছে ২১ বলে ২০ রানে। তার বিদায়ে ৫২ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশের। যা বিপদের মুখে ফেলে দেয় দলকে।
যদিও এরপর নাজমুল হোসেন শান্ত ও তরুন তাওহিদ হৃদয় চেষ্টা করছেন ইনিংস মেরামতের। তবে শেষ পর্যন্ত সাকিব-তামিমের দেখানো পথেই হাঁটেন দুজনে। ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ উভয়েই। শুরু থেকেই এক প্রান্ত আগলে রাখা শান্ত যখন অশান্ত হতে শুরু করবেন, তখনই আউট হন তিনি। এর আগে অবশ্য খেলেন ৬৬ বলে ৪৪ রানের ইনিংস।
ভালো শুরুর পরও তাওহিদ হৃদয় পূর্ণতা দিতে পারেননি ইনিংসটা, তুলতে পারেননি তৃপ্তির ঢেঁকুর। ৩১ বলে ২৭ রান করে ফেরেন তিনি। দলীয় সংগ্রহ তখন ২৬.৩ ওভারে ১২২/৫। তবে ৬৪ বলে ৫০ রান যোগ হয় দু’জনের জুটি থেকে। দলীয় ১০২ রানে শান্ত, আর আরো ২০ রান যোগ করে ফেরেন তাওহিদ হৃদয়।
ততক্ষণে অবশ্য মাঠে নেমে গেছেন মুশফিকুর রহিম। পরের অধ্যায়টা একান্তই তার বলা যায়। অবশ্য ভালো একটা প্রভাব রাখেন মেহেদী মিরাজও, তবে সাকিব-শান্তের মতো ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ হন তিনি। তবে মুশফিকের সাথে তার ৭০ বলে ৬৫ রানের জুটিটাই লড়াইয়ে রাখে বাংলাদেশকে।
মিরাজ ৩৪ বলে ২৭ রানে আউট হবার পর তাইজুলের সাথেও একটা মানসম্মত জুটি গড়েন মুশফিক। যেই জুটি ভাঙে ৪৫তম ওভারে মুশফিকের বিদায়েই, তবে ৪৫ বলে ৩৩ রান আসে সেখান থেকে। শেষ দিকে তাইজুল ১৪ ও শরিফুল ১৬ রান করলে ৯ উইকেটে ২৪৬ রান তুলতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ।
জশুয়া লিটিল ৬১ রানে ৩টি ও মার্ক অ্যাডাইর ৪৪ রানে ২ আর গ্রাহাম হুম ৩২ রানে নেন দুটো করে উইকেট।