শনিবার, ০৫:১০ অপরাহ্ন, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

মিয়ানমারে ৩৫ বাংলাদেশীর সাজা শেষ হলেও ফেরত দেয়া হচ্ছে না

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৩
  • ৪৪ বার পঠিত

সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া যেতে চেয়েছিলেন মানুষগুলো। সহায়-সম্বল বিক্রি করে উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু সংঘবদ্ধ একটি অপরাধী চক্রের ফাঁদে পড়ে মিয়নামারের কারাগারে বন্দী এখন। প্রায় এক বছর ধরে ৩৫ জন বাংলাদেশীর দিন কাটছে চার দেয়ালের ভেতর। সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও তাদের দেশে ফেরত দেয়া হচ্ছে না।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কয়েকবার চিঠি চালাচালি করেও মিয়ানমার থেকে এখনো কোনো সদুত্তর মেলেনি। ভুক্তভোগীদের স্বজনরা জানিয়েছেন, তাদের সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর রেঙ্গুন থেকে মংডুর বুচিডং কারাগারে পাঠানো হয়েছে। কারাবন্দিরা দেশে ফেরার আকুতি জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে কক্সবাজারের টেকনাফের একজন মানবাধিকার কর্মী বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তাদের ফেরত আনার জন্য লিখিত আবেদন করেছেন।

আবদুর রহিম নামে ওই মানবাধিকার কর্মী বলেন, কারাবন্দি ৩৫ জনের মধ্যে ১৩ জনের নাম ও জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর উল্লেখ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কল্যাণ শাখায় আবেদন করা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি অবগত করে মিয়ানমারের রেঙ্গুনে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনে চিঠিও দিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা ফেরত আসেনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে টেকনাফ থেকে অবৈধ পথে ট্রলারযোগে ৩৫ জন বাংলাদেশী মালয়েশিয়ার উদ্দেশে রওনা দেয়। কিন্তু মালয়েশিয়ায় যেতে পারেনি। মিয়ানমারের কারাগারে বন্দি রয়েছে তারা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েলফেয়ার উইংয়ের পরিচালক মোস্তফা জামিল খান গত ৪ অক্টোবর ও ৯ অক্টোবর ট্রলারটি মিয়ানমারের জলসীমা দিয়ে যাওয়ার পথে থাইল্যান্ড জলসীমার কাছে এলে মিয়ানমারের নৌবাহিনীর সদস্যরা তাদের আটক করে। পরে ৩৫ জনকে আটক করে ইয়াঙ্গুনের একটি কারাগারে বন্দি করে। এ নিয়ে ইয়াঙ্গুনের একটি থানায় তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে মামলা হয়। ওই মামলায় চলতি বছরের এপ্রিল মাসে তাদের খালাস দিয়ে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেয়। এরপরই তাদের ইয়াঙ্গুন কারাগার থেকে বাংলাদেশের টেকনাফের বিপরীত পাশে অবস্থতি মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের মংডু বন্দরের বুচিডং কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।

বুচিডং কারাগার মংডু বন্দর থেকে প্রায় দুই শ’ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত। বুচিডং কারাগারে বন্দি ৩৫ জন বাংলাদেশীদের মধ্যে অন্তত ১৩ জনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন সালামত উল্লাহ, মোহাম্মদ রেদোয়ান, মোহাম্মদ ইব্রাহিম, সৈয়দ আকবর, মো: নজরুল ইসলাম, মো: হামিদুল হক, মোসতাক আহমেদ, মাহমুদুল হক, বেলাল উদ্দিন, মোহাম্মদ সোহেল, আবদুল হাকিম, সিরাজুল মোস্তফা ও রিদওয়ানুল ইসলাম।

এই ১৩ জন বন্দির একজনের নিকটাত্মীয় বলেন, আমার স্বজন মংডুর একটি কারাগারে বন্দী। তিন মাস আগে কারাগার থেকে মোবাইল ফোনে টেকনাফের একজনের কাছে ফোন করে তথ্য জানিয়েছে। তখনই জানতে পেরেছি যে আমার স্বজন মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের হেড অব চেনচারির কাছে পৃথক তিনটি মেইলে ৩৫ জনের সন্ধান চেয়ে বার্তা পাঠিয়েছেন। কারাবন্দি বাংলাদেশীদের বিষয়ে দ্রুত সন্ধান নিতে এবং এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েলফেয়ার উইং।

মানবাধিকার কর্মী আবদুর রহিম বলেন, টেকনাফে এক শ্রেণির দালাল সিন্ডিকেট রয়েছে যারা স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় অবৈধ সাগরপথে ট্রলারে করে থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় আদম পাচার করে। ওই সিন্ডিকেটই এই ৩৫ জনকে ট্রলারে করে মালয়েশিয়ার উদ্দেশে পাঠিয়েছিল। তারা মিয়ানমারে আটক হওয়ার পর পাচারকারী সিন্ডিকেট গা ঢাকা দেয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com