আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভা আজ। বিএনপির ছেড়ে দেওয়া পাঁচটি আসনে কারা হচ্ছেন নৌকার মাঝি সেটি নির্ধারণ হবে আজই। ওইসব আসনে ভোট হবে ১ ফেব্রুয়ারি।
আসনগুলো হচ্ছে- চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩, ঠাকুরগাঁও-৩, বগুড়া-৪, বগুড়া-৭ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২। এগুলোর মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ (ভোলাহাট-গোমস্তাপুর-নাচোল) আসনে ভোট করতে চান ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা মাহিয়া মাহি। আসনটিতে নৌকার টিকিট প্রত্যাশী আওয়ামী লীগের অনেক নেতা। তবে মাহি মনোনয়ন নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে রোববার বিকাল সাড়ে ৪টায় আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সভায় চূড়ান্ত হবে দলীয় প্রার্থী।
মাহিয়া মাহি গত ২৯ ডিসেম্বর দুপুরে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন। সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, চিত্রনায়িকা মাহি উপনির্বাচনে প্রার্থী হতে চান। আমি বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছি। আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি, মাহির পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। মাহি নিজেও আওয়ামী লীগ করেন। ফলে তাকে মনোনয়নপত্র কেনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের জানান, আমাদের দলের মনোনয়ন বোর্ড প্রার্থী চূড়ান্ত করবে।
এরপর ৩০ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে গিয়ে মনোনয়ন ফরম জমা দেন মাহি। পরে তিনি আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় মাহির সঙ্গে ছিলেন তার স্বামী রকিব সরকার।
কিছুদিন আগে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় কমিটিতে (একাংশ) পদ পেয়েছেন মাহিয়া মাহি। আগামী ২ বছরের জন্য তিনি কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করবেন।
উল্লেখ্য, গত ১০ ডিসেম্বর রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে আয়োজিত ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ থেকে ই-মেইলযোগে স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠানোর কথা জানান বিএনপির সাত এমপি আমিনুল ইসলাম (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২), হারুনুর রশীদ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩), জাহিদুর রহমান (ঠাকুরগাঁও-৩), মোশাররফ হোসেন (বগুড়া-৪), জিএম সিরাজ (বগুড়া-৭), আব্দুস সাত্তার (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২) ও রুমিন ফারহানা (সংরক্ষিত নারী আসন)।
পরে ১১ ডিসেম্বর সশরীরে গিয়ে স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন বিএনপির ৬ এমপি। এরপর ১৮ ডিসেম্বর তাদের মধ্যে পাঁচজনের ছেড়ে যাওয়া আসনে ১ ফেব্রুয়ারি উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
তবে সেদিন এমপি হারুন বিদেশে থাকায় তার পদত্যাগপত্র স্পিকার গ্রহণ করেননি। স্পিকার তখন জানান, হারুনকে সশরীরে এসে পদত্যাগপত্র দিতে হবে। এরপর ২২ ডিসেম্বর সশরীরে হাজির হয়ে স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন হারুন। ওই দিনই আসনটি শূন্য ঘোষণা করে সংসদ সচিবালয়। পরে ২৬ ডিসেম্বর হারুনের আসনেও ভোটের তারিখ একই দিনে রেখে তফসিল ঘোষণা করে ইসি। ফলে বিএনপি ছেড়ে যাওয়া ৬ আসনে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
ইসি জানিয়েছে, রুমিন ফারহানার পদত্যাগে শূন্য হওয়া সংরক্ষিত নারী আসনে (মহিলা আসন-৫০) ভোটের তারিখ এই ছয় আসনের ফয়সালা হওয়ার পর ঘোষণা করা হবে।