টি-টোয়েন্টি সিরিজে ভরাডুবি হয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের। প্রথমবারের মতো কুড়ি ওভারের সিরিজে হারতে হয়েছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। বিপর্যয় কাটেনি প্রিয় সংস্করণ ওয়ানডেতেও। টানা দুই হারে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ হেরে বসে টাইগাররা। তামিম ইকবালের দল এখন হোয়াইটওয়াশের মুখে। আগামীকাল বুধবার মান বাঁচাতে মাঠে নামবে সফরকারীরা।
হারারে স্পোর্টস গ্রাউন্ডে দুটো ম্যাচই হয়েছে নিখাদ ব্যাটিং উইকেটে। ব্যাটিং স্বর্গে দুটো ম্যাচেই টস হেরে বড় সংগ্রহ তুলেছে বাংলাদেশ। প্রথম ওয়ানডেতে ৩০৩ রান করে ১০ বল বাকি থাকতে হেরেছে টাইগাররা। দ্বিতীয় ম্যাচেও একই চিত্র। ২৯০ রানের পুঁজি আগলে রাখতে ব্যর্থ তামিমরা। এবারের হার ১৫ বল বাকি থাকতে। দুটো ম্যাচেই হার একই ব্যবধানে- ৫ উইকেটে।
২২ গজে এই সিরিজে রাজার সামনে বাংলাদেশকে প্রজার ভূমিকাতেই দেখা গেল। ভয়ডরহীন ক্রিকেটে খেলা জিম্বাবুয়ের যেন পুনর্জন্ম হলো তাতে। কাকতালীয় ব্যাপার হচ্ছে- কঠিন রান তাড়ায় দুটো ম্যাচেই জিম্বাবুয়ের ইনিংসের শুরু ছিল বিপর্যয় দিয়ে। প্রায় ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে রূপকথার জয় তুলে নেন রাজা। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে যেন প্রথম ম্যাচের সাজানো চিত্রনাট্যই দেখা গেল!
বড় সংগ্রহ নিয়েও বাংলাদেশের বোলাররা লড়াকু মানসিকতা দেখাতে পারেননি। বরং আশা জাগিয়ে নিরাশ করেছেন বারবার। হয়েছে একই ভুলের পুনরাবৃত্তি। তাতে বিরক্ত টাইগারদের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। কোনো রাখঢাক না রেখেই দক্ষিণ আফ্রিকান কোচ বলে দিলেন, ‘ভুল থেকে শিক্ষা নেননি বোলাররা।’
প্রথম ম্যাচে ১৩.১ ওভারে জিম্বাবুয়ের রান ছিল ৩ উইকেটে ৬৩। চতুর্থ উইকেটে রাজা-কায়ার ১৯২ রানের জুটি ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয় বাংলাদেশকে। সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচেও হতাশার গল্পটা প্রায় একই। ১৫ ওভারে স্বাগতিকদের রান ছিল ৪ উইকেটে ৪৯। এবার পঞ্চম উইকেট জুটিতে ১৬৯ বলে ২০১ রান যোগ করেন রাজা ও চাকাবা। পরপর দুই ম্যাচে একইভাবে হেরে যাওয়ায় হতাশ বাংলাদেশ কোচ ডমিঙ্গো। তার ভাষায়, ‘ছেলেরা চাপটা যথেষ্ট ধরে রাখতে পারেনি। ফিল্ডিংয়ে ভুল, অনেক বেশি বাজে বোলিং হয়েছে। ছেলেরা চেষ্টা করেছে। কিন্তু ভুল থেকে শেখেনি, একই ভুল বারবার করে গেছে। এটিই সবচেয়ে হতাশার।’ হতাশার সিরিজে এখন মান বাঁচানো দায় হয়ে গেছে বাংলাদেশ দলের। শেষ ওয়ানডেতে হারলে ধবলধোলাইয়ের তিক্ত অভিজ্ঞতা হবে টাইগারদের। জিতলে হয়তো কিছুটা সান্ত¡না পাবে দল। কিন্তু এই সিরিজের ফল যা-ই হোক, তাতে লাভ বা ক্ষতি নেই দুই দলের। কারণ এই সিরিজটা আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগের অংশ নয়। প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক সিরিজ না হলেও, সিরিজটা দুই দলের কাছেই আলাদা গুরুত্ব বহন করছে।
চোটজর্জর জিম্বাবুয়ে আভাস দিচ্ছে সুদিন ফেরানোর। আর বাংলাদেশের কাছে ব্যাটিং স্বর্গে খেলার অভিজ্ঞতা। যা হয়তো ভবিষ্যতে কাজে লাগতে পারে। আগামী বছরই যে ভারতে হবে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। সেখানে স্পোর্টিং কিংবা মন্থর উইকেটে খেলা হলেও দুই একটা ম্যাচ যে ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে খেলতে হবে সেটা অনুমান করাই যাচ্ছে। সেই হিসেবে তৃতীয় ওয়ানডেটা বাংলাদেশের কাছে বিশেষ কিছু। পর পর দুই হারের পর এই ম্যাচে যে একাদশে পরিবর্তন আসছে সেই ইঙ্গিতটা পাওয়া গেছে ইতোমধ্যেই।