রবিবার, ০৩:২১ অপরাহ্ন, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ৫ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

মনোনয়নপত্র বাতিলেরর পর ইসির পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ জাহাঙ্গগীরের

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১ মে, ২০২৩
  • ৫০ বার পঠিত

 

স্টাফ রিপোর্টার,গাজীপুরঃ গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বহুল আলোচিত স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের( সাময়িক বরখাস্তকৃত) মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে ইসি।জিসিসি নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র যাচাই বাছাইয়ের দিন রবিবার রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম ব্যাংকের ঋণখেলাপির কারণে তার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন। এসময় পর জাহাঙ্গীর বলেন, আমার প্রতি অবিচার করা হয়েছে,ইসি নিরপেক্ষ ছিল না, পক্ষপাতিত্ব করেছে, আমি ন্যায় বিচার চাই। উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যে ঋণখেলাপির কারণে আমার মনোনয়নপত্র বাতিলকরা হয়েছে ।যে ঋণখেলাপির কারণে আমার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে আমি মানবিক কারণে হাজার হাজার শ্রমিককে বাঁচানোর জন্য ওই ঋণের জামিনদারমাত্র। এছাড়া আরো দুই মেয়র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতলি করা হয়েছে।এদিকে জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খানসহ ৯ মেয়র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছে ইসি।

ব্যাংকের ঋণখেলাপির কারণে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। তবে মনোনয়নপত্রে উলে­খ করা অন্যান্য তথ্য সঠিক রয়েছে। মনোনয়নপত্র বাতিল হলেও সুযোগ আছে আপিলের।

জাহাঙ্গীর ছাড়াও আরও দুজনের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে কমিশন। স্বতন্ত্র প্রার্থী অলিউর রহমান ৩০০ সমর্থনকারী ভোটারের স্বাক্ষরবিহীন মনোনয়নয়পত্র জমা দেওয়ায় ও যথাযথ কাগজপত্র না থাকায় আবুল হোসেনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। অপর প্রার্থী অলিউর রহমানের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়।
বৈধ ঘোষণা করা হয় আওয়ামী লীগের আজমত উল্লাহ খান, জাতীয় পাটির্র এম এম নিয়াজ উদ্দিন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গাজী আতাউর রহমান, গণফ্রন্টের আতিকুল ইসলাম, জাকের পাটির্র মো. রাজু আহমেদ, স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী আব্দুল­াহ আল মামুন মণ্ডল, স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকার শাহনুর ইসলাম ও হারুন অর রশীদের মনোনয়নপত্র।

মনোনয়নপত্র বাতিলের পর জাহাঙ্গীর আলম জানান, আমার প্রতি অবিচার করা হয়েছে। পক্ষপাতিত্ব করা হয়েছে। ব্যাংকের পাওনার ইনস্টলমেন্ট জমা দেওয়ার কথা। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ লিখিত ও মৌখিক জবানবন্দি দিয়েছে। তারপরও নির্বাচন কমিশন যে কাজটি করেছে তাতে পক্ষপাতিত্ব করা হয়েছে। আপনারা নিরপেক্ষতার মধ্যে ছিলেন না। আমি উচ্চ আদালতে আপিল করবো। আমি আশা করি, আপনাদের কাজে যেন নিরপেক্ষতা থাকে এবং সব প্রার্থীর সঙ্গে নিরপেক্ষ আচরণ করা হয়।
তিনি বলেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মধ্যে কোনাবাড়ি এলাকায় কোরিয়ান মালিকানাধীন একটি কম্পোজিট কারখানা রয়েছে। ওই কোম্পানিতে আমার কোনও শেয়ার নেই। কোনও লভ্যাংশও নেই না। তবু হাজার হাজার শ্রমিকদের বাঁচানোর জন্য মানবিক কারণে আমার নিজের সম্পদ তাদের দিয়েছি। ওই ব্যাংকের মরগেজ নিয়ে সেই কোরিয়ান মালিক লোন নিয়ে কারখানাটি চলমান রেখেছে। এক কথায় আমি সেখানে জামিনদার হই। করোনা মহামারির কারণে ইতোপূর্বে কোরিয়ান মালিক ব্যাংকে যথাসময়ে ওই পেমেন্ট দিতে পারেনি।
গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে জয়ী হওয়া জাহাঙ্গীর বলেন, আমি প্রার্থী হওয়ার পর গত ১১ এপ্রিল ও ১৮ এপ্রিল কোরিয়ানরা বাংলাদেশ ব্যাংক ও অগ্রণী ব্যাংকের যে পাওনা ছিল তা পরিশোধ করেছে। কোরিয়ান কোম্পানি অগ্রণী ব্যাংকের পাওনা টাকা পরিশোধ করেছে। সেসব কাগজপত্র আইনজীবী এবং ব্যাংক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জমা দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকে ঋণখেলাপির যে অভিযোগে মনোনয়নপত্রটি বাতিল হয়েছে তা পরিশোধ করেছি। যাচাই-বাছাইয়ের সময় রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে ব্যাংকের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। ব্যাংক কর্মকর্তারা ঋণ পরিশোধের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, তারপরও আমার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। এর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষতা থেকে সরে গেছে। কোনও অদৃশ্য চাপে নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষতা থেকে সরে গেছেন কিনা জানি না। তবে আমি ন্যায়বিচার পেতে আপিল করবো। প্রয়োজনে আমি হাইকোর্টে যাবো। আমি শেষ পর্যন্ত লড়াই করে যেতে চাই।
এর আগে, জাহাঙ্গীর আলম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আওয়ামী লীগের কাছে নৌকা প্রতীক চেয়ে আবেদন করেন। তবে দল তাকে মনোনয়ন না দিলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের ঘোষণা দেন। মেয়র পদে তার মনোনয়নপত্র জমাদানের দিন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তার মা জায়দা খাতুনেরও মনোনয়নপত্র জমা দেন। ১২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিলেও কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর জাহাঙ্গীরসহ তিন জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
এদিকে, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল­াহ খান বলেন, জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় আমি স্বস্তি পেয়েছি। আমার দল, সাধারণ মানুষ ও শান্তিকামী মানুষ যেহেতু আমার সঙ্গে রয়েছে সেজন্য অবশ্যই স্বস্তি আমি পাচ্ছি। নির্বাচনে আমি কাউকে প্রতিপক্ষ মনে করি না, প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করি। আমি সবাইকে নিয়ে স্বচ্ছ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন চাই। আমি এই মেসেজটা দিতে চাই যে কেউ আমাদের শত্রু নয়। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম বলেন, মনোনয়নপত্র সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করেছি। জাহাঙ্গীর আলমের অন্য সব কাগজপত্র সঠিক আছে। তবে এর সপক্ষে তার ব্যাংকে টাকা জমা করার কিছু কাগজপত্র আমাদের কাছে দিয়েছে। আমার কাছে মনে হয়েছে তা যথার্থ ছিল না। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইভি তথ্যে ত্রুটি থাকায় জাহাঙ্গীরের মনোনয়নপত্রটি বাতিল করা হয়েছে। তবে প্রার্থীর আপিল করার সুযোগ রয়েছে। তাই তিনি আপিল করতে পারবেন।

জিসিসি নির্বাচনে আগামী ৮ মে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষদিন। পরদিন প্রতীক বরাদ্দ এবং ২৫ মে ৫৭ সাধারণ ওয়ার্ড ও ১৯টি সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডে ইভিএমের মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
###
মোঃ রেজাউল বারী বাবুল
স্টাফ রিপোর্টার,গাজীপুর।
৩০/০৪/২০২৩ ইং

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com