সিরিয়ায় ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে নতুন করে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে ইসরায়েলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের সঙ্গে ছায়া যুদ্ধে লিপ্ত থাকা ইরান প্রথমবার ইসরায়েলে সরাসরি হামলা চালিয়েছে। ইরান ও ইসরায়েলে যাদের একসময় সুসম্পর্ক ছিল, তাদের এই ‘সম্মুখ-সমর’ পুরো বিশ্বের কাছে চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ইসরায়েলকে প্রথম থেকেই সরাসরি সহযোগিতা করছে পশ্চিমা দেশগুলো। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের মিত্র কারা রয়েছেন, তা তুলে ধরেছে বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্যে মিত্র গোষ্ঠী ও প্রক্সি বাহিনীর একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে ইরান। তাদের দাবি, সেটি ওই অঞ্চলে মার্কিন ও ইসরায়েলি স্বার্থকে চ্যালেঞ্জ করতে গঠিত একটি ‘প্রতিরোধ অক্ষের’ অংশ। বিভিন্নভাবে ইরানকে সমর্থন করে থাকে এই নেটওয়ার্ক।
ইরানের মিত্রদের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো সিরিয়া। সেখানে এক দশক ধরে চলা গৃহযুদ্ধের মাঝে বাশার আল আসাদ সরকারকে টিকিয়ে রাখতে রাশিয়ার পাশাপাশি সহায়তা করেছে ইরান।
ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী হলো লেবাননের হেজবুল্লাহ। ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই আন্তঃসীমান্তে ইসরায়েলের সঙ্গে তাদের গোলাগুলি চলছে। সীমান্তের দুই দিক থেকেই হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিক বাধ্য হয়েছেন তাদের বাড়িঘর ছাড়তে।
বেশ কয়েকটি শিয়া মিলিশিয়া গোষ্ঠীকে ইরান সমর্থন করে। সিরিয়া ও জর্ডানে থাকা মার্কিন ঘাঁটিতে রকেট হামলা চালিয়েছে এসব গোষ্ঠী। জর্ডনে একটি সামরিক চৌকিতে মোতায়েন থাকা তিন মার্কিন সেনার মৃত্যু ও এর পাল্টা জবাব দিতে দেখা গেছে যুক্তরাষ্ট্রকে।
ইয়েমেনের হুথি আন্দোলনকে সমর্থন করে ইরান। যারা দেশটির সবচেয়ে জনবহুল অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
প্রসঙ্গত, গাজায় হামাসের প্রতি সমর্থন প্রদর্শনের জন্য হুথিরা ইসরায়েলকে নিশানা করে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ছুড়েছে। শুধু তাই নয়, উপকূলের কাছে বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা চালিয়ে কমপক্ষে একটি জাহাজকেও ডুবিয়ে দিয়েছে। পাল্টা জবাব দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। হুথিদের নিশানায় রেখে হামলা চালিয়েছে তারা।
হামাস ও সশস্ত্র ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলো অস্ত্র সরবরাহ করে এবং প্রশিক্ষণ দেয় ইরান। হামাস গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ওপর হামলা চালায়। তবে এই হামলায় কোনো ভূমিকা থাকার কথা স্বীকার করেনি ইরান।