পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থেকে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ট্রলার ডুবিতে ৫ জেলে নিখোঁজ হয়েছেন। এছাড়া ৭ জেলে উদ্ধার হয়েছেন।
এই ঘটনায় জেলে পল্লীর নিখোঁজ জেলেদের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। নিখোঁজ জেলেরা হলেন- উপজেলার তুষখালী ইউনিয়নের ছোট মাছুয়া গ্রামের হাফেজ আকনের ছেলে বাহাদুর আকন, একই গ্রামের উজ্জত আলীর ছেলে এমাদুল আকন, আকবর শাহ’র ছেলে আল আমিন শাহ, মোসলেম হাওলাদারের ছেলে সালাম হাওলাদার ও পার্শ্ববর্তী ভান্ডারিয়া উপজেলার উত্তর জুনিয়া গ্রামের মোখলেস হাওলাদারের ছেলে ওই ট্রলারের বাবুর্চি আব্দুর রহমান।
‘এফবি ভাই-ভাই’ নামের ট্রলারটির মালিক নজরুল ইসলাম মাঝি বলেন, গত ২৬ জুন বিকেলে উপজেলার তুষখালী বাজার থেকে ১২ জন জেলে ও মাঝি নিয়ে ট্রলারটি মাছ ধরার জন্য বঙ্গোপসাগরে উদ্দেশে রওনা হয়েছিল। গত রোববার রাতে ট্রলারটি বঙ্গোপসাগরের নারকেলবাড়িয়া এলাকায় ছিল।
রাত ১২টার দিকে হঠাৎ ঢেউয়ের আঘাতে ট্রলারটি ডুবে যায়। এতে ট্রলারে থাকা ১২ জেলে ও মাঝি পানিতে পড়ে যান। পরে ওই রাতেই তিনটার দিকে একটি মাছ ধরার ট্রলার সাত জেলেকে উদ্ধার করে পটুয়াখালীর মহিপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে নিয়ে যায়। বাকি পাঁচ জেলে নিখোঁজ রয়েছেন।
উদ্ধার হওয়া জেলে মোশারেফ শাহ বলেন, ‘গতকাল সোমবার দুপুর ১২টার দিকে আমাদের সাত জেলেকে নিয়ে উদ্ধারকারী ট্রলারটি মহিপুর পৌঁছায়। ট্রলারডুবির পর আমরা প্রায় চার ঘণ্টা বঙ্গোপসাগরে ভেসে ছিলাম। দীর্ঘ সময়ে ভেসে থাকায় সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েছি।
নিখোঁজ জেলে বাহাদুর আকনের বড় ভাই সোহেল আকন বলেন, ‘জানি না আমার ভাই বাহাদুর বেঁচে আছে কি না। আমাদের বাড়িতে কান্নাকাটি চলছে।
এদিকে পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন নিখোঁজ জেলেদের বৃদ্ধ পিতা-মাতা সহ স্ত্রী ও সন্তানরা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম ছলিম জানান, ‘মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত নিখোঁজ জেলেদের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। তিনি আরো জানান, নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারে মহিপুরের আড়ৎ মালিকরা বেশ কয়েকটি ট্রলার নিয়ে সাগরে তল্লাশি চালাচ্ছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা নিখোঁজ জেলেদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। তবে এ সময়ে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আছে। ওই জেলেরা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। আমরা কোষ্টগার্ড ও নৌবাহিনীর কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। নৌবাহিনী নিখোঁজদের উদ্ধারের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল কাইয়ূম বলেন, আমরা নিখোঁজ জেলের ব্যাপারে খোঁজ খবর নিচ্ছি। ক্ষতিগ্রস্থ জেলে পরিবারকে সরকারিভাবে সহায়তা করা হবে।