শুক্রবার, ০৫:৫৮ পূর্বাহ্ন, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ১৭ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।
শিরোনাম :

মঙ্গলবার আদালতে হাজির হচ্ছেন ট্রাম্প!

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ৩১ মার্চ, ২০২৩
  • ৬৪ বার পঠিত

একজন পর্ন তারকার মুখ বন্ধ রাখতে ঘুষ দেয়ার জন্য আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট ডেনাল্ড ট্রাম্পকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাকে আগামী মঙ্গলবার তিনি আদালতে হাজির হচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঠিক আগে এই ঘটনা ঘটেছিল। তবে অভিযোগের বিস্তারিত এখনো প্রকাশ করা হয়নি।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি স্টর্মি ড্যানিয়েলস নামে ওই নারীর সাথে তার সম্পর্ক গোপন রাখার বিনিময়ে এক লাখ ৩০ হাজার ডলার অর্থ প্রদান করেছে। বিষয়টি তদন্তের পর যুক্তরাষ্ট্রের গ্র্যান্ড জুরি ট্রাম্পকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযুক্ত করার পক্ষে ভোট দিয়েছে।

ছিয়াত্তর বছর বয়সী ট্রাম্প, তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনিই প্রথম কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট যিনি দেশটির ফৌজদারি অভিযোগের মুখোমুখি হলেন।

এই মামলার তদন্ত করছেন ম্যানহাটন ডিসট্রিক্ট অ্যাটর্নি আলভিন ব্র্যাগের দফতর।

সেখান থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে যে তারা ট্রাম্পের আইনজীবীদের সাথে যোগাযোগ করেছেন যাতে তার আত্মসমর্পণের বিষয়টি সমন্বয় করা হয়।

ফ্লোরিডায় বসবাসকারী সাবেক এই প্রেসিডেন্ট সোমবার নিউইয়র্কে যাবেন বলে আশা করা হচ্ছে এবং মঙ্গলবার তাকে আদালতে হাজির করা হতে পারে। বিষয়টির সাথে পরিচিত দুটি সূত্র সিবিএস নিউজকে এই তথ্য জানিয়েছে।

শুনানির সময় তাকে অভিযোগ পড়ে শোনানো হবে, যা প্রায় ১০ থেকে ১৫ মিনিট স্থায়ী হবে।

ট্রাম্প আদালতে উপস্থিত হলে যুক্তরাষ্ট্রের সিক্রেট সার্ভিস তার নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে। এই সিক্রেট সার্ভিস সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টদের সুরক্ষায় কাজ করে।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি প্রাক্তন পর্ণ অভিনেত্রী এবং স্ট্রিপার স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে অর্থ প্রদানের জন্য তার তৎকালীন আইনজীবী মাইকেল কোহেনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দুই সপ্তাহেরও কম সময় আগে এই ঘটনা ঘটে। যেন মি. ট্রাম্পের সাথে ওই নারীর কথিত সম্পর্কের বিষয়টি ধামাচাপা দেয়া যায়। মূলত এই অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু হয়।

ড্যানিয়েলস বলেছেন যে ট্রাম্প ২০০৬ সালে লেক তাহো হোটেলে তার সাথে যৌন মিলন করেছিলেন -এটি ট্রাম্পের বর্তমান স্ত্রী মেলানিয়াকে বিয়ে করার পরের বছরের ঘটনা।

কোহেন আদালতে বলেছেন যে তিনি ‘সাবেক প্রেসিডেন্টের নির্দেশনায়’ এক লাখ ৩০ হাজার ডলারের বিষয়টি দফারফা করেছেন। কোহেন ২০১৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত একাধিক অভিযোগে জেলে ছিলেন।

এক বিবৃতিতে ট্রাম্প ম্যানহাটনের ডিসট্রিক্ট অ্যাটর্নিকে কটাক্ষ করেন। তিনি প্রসিকিউটরকে ‘কলঙ্ক’ হিসেবে অভিহিত করেন এবং তাকে ‘জো বাইডেনের নোংরা কাজ করার’ জন্য অভিযুক্ত করেন।

”ডেমোক্র্যাটরা ‘ট্রাম্পকে পাকরাও করতে’ মিথ্যা বলছে, প্রতারণা করছে এবং চুরি করছে, কিন্তু এখন তারা যা করছে তা অকল্পনীয়- একটি সম্পূর্ণ নির্দোষ ব্যক্তির বিরুদ্ধে নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলেছে,” তিনি বলেন।

ট্রাম্প তার বিরুদ্ধে নিউইয়র্কের এই তদন্তকে বিরোধী পক্ষের পরিচালিত রাজনৈতিক চক্রান্ত বলে কটাক্ষ করেছেন।

ব্র্যাগ, যিনি একজন নিবন্ধিত ডেমোক্র্যাট, তিনি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এই মাসের শুরুর দিকে তিনি টুইট করেন, ‘আমরা ঘটনা, আইন এবং তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আমাদের মামলাগুলো মূল্যায়ন করি।’

ট্রাম্পের আইনজীবী সুসান নেচেলেস এক বিবৃতিতে বলেছেন : ‘তিনি কোনো অপরাধ করেননি। আমরা আদালতে এই রাজনৈতিক মামলার বিরুদ্ধে জোরেশোরে লড়াই করব।’

ট্রাম্পের অভিযুক্ত হওয়ার বিষয়ে, ড্যানিয়েলস তার সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এক টুইট বার্তায় তিনি বলেছেন, ‘আমার কাছে এতো এতো মেসেজ আসছে যে আমি সবাইকে তার উত্তর জানাতে পারছি না…এছাড়াও আমি এখনই সব কথা উগরে দিতে চাই না।’

ফৌজদারি মামলাটি ২০২৪ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের লড়াইয়ের দৃশ্যপট বদলে দিতে পারে।

ট্রাম্প বর্তমানে রিপাবলিকান হোয়াইট হাউস মনোনয়ন পাওয়া সম্ভাব্য সব প্রার্থীদের মধ্যে এগিয়ে আছেন।

কিন্তু মার্কিন আইন অনুযায়ী, কোনো প্রার্থী অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত হলেও তার নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে এবং প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ করতে- এমনকি কারাগার থেকেও রাজনীতি করে যেতে কোনো বাধা নেই।

ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের উদ্ধৃতি দিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তহবিল সংগ্রহের ইমেইল পাঠিয়েছে। কংগ্রেসের শীর্ষস্থানীয় রিপাবলিকানরা ট্রাম্পের সাথে আছেন।

হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভের স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থি বলেছেন : ‘আলভিন ব্র্যাগ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার মাধ্যমে আমাদের দেশের অপূরণীয় ক্ষতি করছে।’

তিনি বলেন, ‘যেহেতু তিনি জনমনে আতঙ্ক বাড়াতে সব সময় দাগী অপরাধীদের মুক্ত করেন, এখন তিনি সেই বিচারব্যবস্থাকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অস্ত্রের মতো ব্যবহার করছেন।’

তবে ডেমোক্র্যাটরা ট্রাম্পের অভিযুক্ত হওয়ার বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছে, তাদের যুক্তি যে কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।

কংগ্রেসম্যান অ্যাডাম শিফ বলেছেন : ‘একজন প্রেসিডেন্টের অভিযুক্ত এবং গ্রেফতার হওয়া আমেরিকার ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা। কিন্তু বেআইনি আচরণের জন্য তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে করা আরো আরো কয়েকটি মামলারও তদন্ত করা হচ্ছে।’

এর মধ্যে ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলের সংঘর্ষে ট্রাম্পের যোগসাজশ থাকা, ২০২০ সালের নির্বাচনে জর্জিয়া রাজ্যে তার পরাজয়ের ফল উল্টে দেয়ার চেষ্টা এবং হোয়াইট হাউজ ছাড়ার পরে গোপন নথিগুলো পরিচালনা নিয়ে গাফেলতির মামলাগুলো রয়েছে।

ট্রাম্প– ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন- হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস দ্বারা দুবার অভিশংসিত হয়েছেন তিনি। যদিও দুবারই সিনেট থেকে খালাস পেয়ে যান।
সূত্র : বিবিসি

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com