বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, ‘ভারতে সাথে আর কোনো নতজানু সম্পর্ক নয়। এখন থেকে কথা হবে চোখে চোখ রেখে। ভারত চেয়েছে সংখ্যলঘুদের উসকে দিয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে। কিন্তু আমরা ভারতে ফাঁদে পা দেইনি।’
তিনি বলেছেন, ‘তাদের সাথে আর কোনো সমঝোতার রাজনীতি চলবে না। আর কোনো গুম নয়, আর কোনো খুন নয়। হয় মাতৃভূমি না হয় মৃত্যু।’
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গঠন করা সংগঠন ‘মায়ের ডাক’-এর আয়োজনে গণজমায়েতে যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ মদদে নির্বিচারে গুম, খুন ও নির্যাতন চালানো হয়েছে। এসব ঘটনার সাথে জড়িত অনেক ব্যক্তিদেরকে ক্যান্টনমেন্ট থেকে নিরাপদে বের হয়ে যাওয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছে। কারা এই সুযোগ দিয়েছে তাদের খুঁজে বের করতে হবে। যারা আমাদের নিরীহ পুলিশকে গুম-খুনের কাজে ব্যবহার করেছে এবং ফ্যাসিবাদীকে নিয়ে ছবি বানিয়েছে, তাদেরকে পক্ষে লিখেছে, তাদেরকেও খুঁজে বের করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালকে পুঁজি করে যাদের ইজ্জত নেয়া হয়েছে, তাদেরকে ইজ্জত ফিরিয়ে দিতে হবে। বিচার নিশ্চিত না করে আমরা রাজপথ ছাড়ছি না। ক্ষমতায় যাওয়ার আশায় যে সব রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে ক্ষমা করার কথা বলেছে, তাদের উদ্দেশ্য কখনো সফল হবে না। যারা বিচারের আগেই আওয়ামী লীগকে আবার রাজনীতির মাঠে আনতে চান, তাদের শহীদের রক্তের ওপর দিয়ে যেতে হবে।’
গণজমায়েতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বলেন, ‘একজন ফ্যাসিবাদী শাসক কতটা স্বৈরাচারী হতে পারে তা গত ১৫-১৬ বছরে দেশের জনগণ প্রত্যক্ষ করেছে। শেখ হাসিনা জননেত্রী ও গণনেত্রী ছিল না। সে ছিল জনগণের গণশত্রু।’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘মঈন উদ্দিন-ফখরুদ্দীনের কাঁধে ভর করে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসে। আমাদের ১২ জন নিরীহ ব্যক্তিকে ফাঁসি দিয়েছে খুনি হাসিনা সরকার। আয়নাঘরে বন্দী রেখেছিল বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) আব্দুল্লাহিল আমান আযমীকে। আমরা আর কোনো ফ্যাসিবাদের চেহারা দেখতে চাই না। আমরা ১৮ কোটি জনগণের মুখে হাসি দেখতে চাই।’
এ সময় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের বিচারের দাবি জানিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র শামান্তা শারমিন বলেন, ‘বিগত বছরগুলোতে গুম-খুনের সাথে জড়িত পতিত আওয়ামী ফ্যাসিবাদ সরকারকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। উচ্চপর্যায় থেকে শুরু করে নিম্নস্তর পর্যন্ত যারা মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনতে হবে।’
গণজমায়েতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, জামায়াত ইসলামী, ঢাকা মহানগর উত্তরের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী, জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সদস্য সচিব আক্তার হোসেন, আমার বাংলাদেশ পার্টির সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান মঞ্জু, বিএনির নির্বাহী কমিটির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরী, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ইশরাক হোসেন, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জুনায়েদ সাকি উপস্থিত হয়ে সংহতি জানিয়েছেন।