ধনী মানেই হাতে ব্ল্যাকবেরির মোবাইল ফোন থাকবে! একটা সময় ছিল এমনই। এখন সেই কানাডিয়ান কোম্পানি ব্ল্যাকবেরি একসময় প্রিমিয়াম ফোনের রাজা ছিল। শূন্য শতাংশ মার্কেট শেয়ার নিয়ে আজ পুরোপুরি বাজারের বাইরে ওই সংস্থা।
প্রায় দুদশক আগেও ব্ল্যাকবেরি ছিল ব্যবসায়ী ও ধনীদের প্রথম পছন্দ। ২০০০ সাল নাগাদ ব্ল্যাকবেরি তাদের পুশ ইমেল বৈশিষ্ট্যসহ ব্ল্যাকবেরি ৯৫৭ ফোনটি চালু করে। তখন বাজারে চলত পেজার। তার পরে ২০০২ সালে ব্ল্যাকবেরি ৫৮১০, ২০০৩ সালে ব্ল্যাকবেরি পার্ল ৮১০০, ২০০৭ সালে ব্ল্যাকবেরি কার্ভ ৮৩০০ এবং ২০০৮ সালে ব্ল্যাকবেরি বোল্ড ৯০০০-এর মতো একের পর এক দুর্দান্ত ফোন বাজারে আসে।
২০০৮ সাল পর্যন্ত সময়টা ছিল ব্ল্যাকবেরির জন্য সোনালি সময়। সব কিছুই দুর্দান্ত চলছিল তখন। কিন্তু ২০১০ সাল নাগাদ ধীরে ধীরে সময় ও প্রযুক্তির পরিবর্তিত হতে শুরু করে। ওই পরিবর্তন ব্ল্যাকবেরি উপেক্ষা করেছিল।
অ্যান্ড্রয়েড এবং আইফোন বাজারে চলে আসে। সেগুলো ব্ল্যাকবেরির থেকেও ভালো ফিচার দিচ্ছিল। এই কারণে লোকজন ব্ল্যাকবেরি ফোনের কথা ভুলে যেতে থাকে এবং অ্যান্ড্রয়েড এবং আইফোনের দিকে চলে যান বহু মানুষ।
তবে,শুধুমাত্র আইফোন এবং অ্যান্ড্রয়েডের কারণেই ব্ল্যাকবেরি বাজার থেকে বেরিয়ে যায়নি। তারা আসল সময়ে আরো অনেক ভুল করেছিল। ওই ভুলগুলোই মানুষকে অ্যান্ড্রয়েড এবং আইফোনের দিকে ঝুঁকতে বাধ্য করেছিল। সাধারণ গ্রাহককে উপেক্ষা করা তাদের অন্যতম ভুল ছিল। এছাড়া সঠিক সময়ে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি গ্রহণ না করা এবং বিরক্তিকর অপারেটিং সিস্টেম তাদের ডুবিয়ে দিলো।
২০১০ সালে মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। যার মধ্যে ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, ছাত্র, গৃহিণী, শিশু ও বৃদ্ধরা অন্তর্ভুক্ত ছিল। নতুন মোবাইল গ্রাহকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক চেয়েছিল হাতের ফোনটি যেন মাল্টিমিডিয়া ডিভাইস হয়! বড় স্ক্রিন, ভালো ক্যামেরা, ভালো সাউন্ড, অ্যাপ নির্ভরতা এবং ভালো প্রসেসর চেয়েছিলেন অনেকে। কিন্তু ব্ল্যাকবেরির গ্রাহক সংখ্যা সীমিত ছিল। তার উপর তারা পরিবর্তনে বিশ্বাসী ছিল না।
ব্ল্যাকবেরি সাধারণ গ্রাহকদের কথা মাথায় রেখে ফোন তৈরি করেনি। তারা পুরোনো প্যাটার্নে চলতে থাকে। অ্যান্ড্রয়েড বাজারে পা রাখায় অপারেটিং সিস্টেমের চেহারা বদলে যাচ্ছিল। সেই পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেদের বদলাতে পারেনি সংস্থাটি।
সূত্র : নিউজ ১৮