বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, অন্যায়কারী যে-ই হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ব্যক্তিগত স্বার্থে কেউ দলকে ব্যবহার করলে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, মানুষ বিএনপির ওপর আস্থা রাখতে চাইছে, যারা এ আস্থা নষ্ট করবে তাদের দলে রাখা হবে না। গতকাল বিকালে খুলনা প্রেস ক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে অনুষ্ঠিত ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’বিষয়ক কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। একই বিষয়ে ও একই সময়ে সাতক্ষীরা তুফান কনভেনশন সেন্টারে এবং বাগেরহাট শহরের জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এসব কর্মশালায় সংশ্লিষ্ট জেলা ও মহানগরীর দলীয় নেতা-কর্মীরা অংশ নেন। খুলনা প্রতিনিধি জানান, জনগণের স্বার্থে দলকে কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, মানুষ বিশ্বাস করে সামনে বিএনপির সরকার গঠন করার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। তাই জনগণের বিপক্ষে গেলে ৫ আগস্টের মতো পরিণতি হবে। কর্মশালায় বিএনপির কেন্দ্রীয় তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ড. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেলসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। সাতক্ষীরা প্রতিনিধি জানান, সাতক্ষীরার কর্মশালার পর প্রশ্নোত্তর পর্বে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, আগামী নির্বাচনে বিএনপি জয়ী হলে ১৭ বছর ধরে যারা নির্যাতিত হয়েছেন তাদের সঙ্গে নিয়ে সরকার গঠন করা হবে। সব ধর্মের মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করা হবে। কারণ আমরা সবাই বাংলাদেশি। বিএনপি আগামীতে ক্ষমতায় গেলে সাতক্ষীরায় রেললাইন স্থাপন করা হবে। এ ছাড়া প্রত্যেক পরিবারের নারীদের জন্য একটি কার্ড প্রদান করা হবে। এর মধ্যে যে অর্থ সরবরাহ করা হবে তা দিয়ে নারীরা তাদের সন্তানদের শিক্ষা ও চিকিৎসার বিষয়টি নিশ্চিত করবেন। তিনি বলেন, ৩১ দফা কেবল বিএনপির একার দফা নয়, বিএনপির সঙ্গে যারা জোটবদ্ধভাবে আছে তাদের সবাই মিলে এ ৩১ দফা তৈরি করেছে।
সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ ইফতেকার আলীর সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশারফ হোসেন, প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিব, নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. শহিদুল আলম, কাজী আলাউদ্দীন, কেন্দ্রীয় বিএনপি সদস্য আতিকুর রহমান রুমন, রেহেনা আখতার রানু, মাহমুদা হাবিবা, সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি রহমাতুল্লাহ পলাশ, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক তারিকুল হাসান প্রমুখ বক্তব্য দেন। কর্মশালায় জেলা বিএনপিসহ উপজেলা বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সুপার ফাইভ নেতারা অংশ নেন। একই কর্মশালা সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট জেলায় একযোগে অনুষ্ঠিত হয়। দিনব্যাপী কর্মশালার শেষ পর্বে বিকাল সাড়ে ৪টায় ভার্চুয়ালি যোগ দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ সময় তিন জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী তাঁর কাছে ৩১ দফাসহ বিভিন্ন প্রসঙ্গ নিয়ে প্রশ্ন করেন। তিনি তাঁর দলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার আলোকে সাবলীল ভাষায় উত্তর দেন। বাগেরহাট প্রতিনিধি জানান, বাগেরহাটের কর্মশালায় তারেক রহমান বলেন, সমাজে ভালো-খারাপ দুই ধরনের মানুষ আছে। যে খারাপ মানুষ তার সঙ্গে আমরা সম্পর্ক রাখতে চাই না। তিনি বলেন, বিগত ১৫ বছর দেখেছি সামগ্রিকভাবে দেশ পিছিয়ে। বাংলাদেশের প্রতিটি সেক্টর পিছিয়েছে। দেশের মানুষকে মুক্তি দিতে হলে দুটি বিষয় নিশ্চিত করতে হবে। একটি রাজনৈতিক অধিকার, আরেকটি সব শ্রেণির মানুষের অর্থনৈতিক অধিকার। এটা বাস্তবায়নে একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি কাজ করছে। এজন্য জনগণের সঙ্গে নেতা-কর্মীদের সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে। এজন্য সবাইকে দলীয় শৃঙ্খলা মেনে চলার আহ্বান জানান তিনি। বাগেরহাট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এ টি এম আকরাম হোসেন তালিমের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা ড. মাহাদি আমিন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, জেলা বিএনপি নেতা মনিরুল ইসলাম খান, এম এ সালাম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শেখ মুজিবুর রহমান, অ্যাডভোকেট ওয়াহিদুজ্জামান দিপু, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ড. ফরিদুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন। কর্মশালায় জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক খাদেম নিয়ামুল নাসির আলাপ, জেলা বিএনপি নেতা মাহবুবুর রহমান টুটুল, মহিলা দল সভাপতি শাহিদা আক্তার, যুবদল নেতা হারুন অর রশীদ, সুজা উদ্দিন মোল্লা সুজন, ছাত্রদল নেতা আলী সাদ্দাম দীপসহ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের সহস্রাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।