শনিবার, ০৬:৫৮ পূর্বাহ্ন, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১লা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।
শিরোনাম :
ফ্যাসিবাদের শেকড় অনেক দূর ছড়িয়ে আছে: আইন উপদেষ্টা দেশে চালু করা হচ্ছে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট আন্তর্জাতিক ভূরাজনৈতিক সম্মেলন শনিবার, উদ্বোধনী ভাষণ দেবেন ড. ইউনূস আইসিটির চিফ প্রসিকিউটরকে নিয়ে নুরের বক্তব্য প্রত্যাহার ব্যাংকে তারল্য সংকট : টাকা উত্তোলনে ভোগান্তিতে ৬ ব্যাংকের গ্রাহক বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করল নেপাল গৌরনদীতে নিত্যপণ্যের বাজার দর নিয়ন্ত্রনে রাখতে বসানো হল ন্যায্য মূল্যের বাজার অপহরণের ৯ দিনেও খোজ মিলছেনা গৌরনদীর অপহৃতা কিশোরী নন্দিনি’র দেশ নায়ক তারেক রহমানের বিজ্ঞ নেতৃত্বের কারনে আমরা গনঅদ্ভুত্থানের মধ্যদিয়ে ফ্যাসিবাদের প্রধান নেত্রী শেখ হাসিনাকে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছি-এম. জহির উদ্দিন স্বপন ভয়াবহ দূষণের কবলে দিল্লি, সকল প্রাইমারি স্কুল বন্ধ ঘোষণা

বেসরকারি হাসপাতালের সেবামূল্য নির্ধারণে প্রস্তাব বাস্তবায়নই বড় চ্যালেঞ্জ

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২২
  • ৬৫ বার পঠিত

দেশের মোট স্বাস্থ্যসেবার প্রায় ৭০ শতাংশ আসে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে। এটাকে সুযোগ হিসেবে নিয়ে রোগীদের কাছ থেকে ইচ্ছামতো অর্থ আদায় করে প্রতিষ্ঠানগুলো। এমনকি একেক প্রতিষ্ঠানে একই সেবার মূল্য একেক রকমের হয়। তাই বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবায় (হাসপাতাল/ক্লিনিক/ ডায়াগনস্টিক) শৃঙ্খলা ফেরাতে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মূল্য নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

গত বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে এসংক্রান্ত এক সভায় প্রস্তাবিত মূল্য তুলে ধরা হয়। সেখানে ১৩টি বিশেষ শ্রেণির ১০৮ ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার সেবামূল্যের প্রস্তাব করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আইসিইউ-সিসিইউসহ অন্যান্য সেবামূল্যও নির্ধারণ হবে।তবে প্রস্তাবনা অনুমোদন ও বাস্তবায়ন করতে কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, এর আগে একাধিকবার বেসরকারি হাসপাতালের সেবামূল্য নির্ধারণের বিষয়ে আলোচনা হলেও শেষ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি। বড় বড় বেসরকারি হাসপাতাল এ ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায়। এবারও সেবামূল্য নির্ধারণের নামে শুধু পরীক্ষা-নিরীক্ষার মূল্য প্রস্তাব করা হয়েছে। কিন্তু হাসপাতালের শয্যা ভাড়া, অস্ত্রোপচার ব্যয়, আইসিইউ, সিসিইউ, ডায়ালাইসিস, চিকিৎসকের কনসালটেন্সি ফি নির্ধারণ করাটাও জরুরি।

পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, মুক্তবাজার অর্থনীতির সুযোগে বেসরকারি হাসপাতালগুলো ইচ্ছামতো রোগীর পকেট কাটছে। দেশে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর সুদের হার সরকার নির্ধারণ করে দিয়েছে, পোশাকশিল্পের বেতন নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। তা হলে হাসপাতালের সেবামূল্য নির্ধারণে বাধা কোথায়। তিনি বলেন, এ প্রস্তাব চূড়ান্তকরণে ও বাস্তবায়নে যারা বাধা দেবেন, বুঝতে হবে তারা জনগণের পক্ষের নন।
এ প্রসঙ্গে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এমএ আজিজ বলেন, এ প্রস্তাব সরকার চূড়ান্ত করলেও বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ রয়েছে। অনেকেই এ মূল্য তালিকা অনুযায়ী সেবা প্রদানে অনিহা প্রকাশ করতে পারেন। যেহেতু সরকার একটি ভালো উদ্যোগ নিয়েছে, আমি আশা প্রকাশ করি, যে কোন মূল্যে এটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে হবে।

গত ৬ অক্টোবর স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সভাকক্ষে এ সংক্রান্ত যেসব প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয় সেগুলো হলো স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিবন্ধিত বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান- হাসপাতাল/ক্লিনিক মূলত দুই ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। (ক) জেনারেল হাসপাতাল (খ) স্পেশালাইজড হাসপাতাল।

(ক) জেনারেল হাসপাতালের ক্ষেত্রে ক্যাটাগরি ‘এ’ : ন্যূনতম ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল হতে হবে। আইসিইউ (ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট), সিসিইউ (করোনারি কেয়ার ইউনিট) এবং ডায়ালাইসিস সুবিধা অবশ্যই থাকতে হবে।

ক্যাটাগরি ‘বি’ : ৫০-৯৯ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল। এখানেও আইসিইউ, সিসিইউ এবং ডায়ালাইসিস সেবা থাকতে হবে। ক্যাটাগরি ‘সি’ : ১০-৪৯ শয্যার হাসপাতাল। এ হাসপাতালেও আইসিইউ অবশ্যই থাকতে হবে। ক্যাটাগরি ‘ডি’: আইসিইউ এবং ডায়ালাইসিস সুবিধা ছাড়া যে কোনো শয্যার হাসপাতাল/ ক্লিনিক। তবে যেসব জেনারেল হাসপাতালে প্রসূতি মায়েদের চিকিৎসার জন্য নরমাল ডেলিভারি নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় সুবিধা না থাকবে, সে হাসপাতাল/ক্লিনিকের লাইসেন্স বন্ধ করে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।

(খ) স্পেশালাইজড হাসপাতালের ক্যাটাগরি ‘এ’ : ন্যূনতম ১০০ শয্যার হাসপাতাল হতে হবে। আইসিইউসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে চিকিৎসা প্রদানে সর্বোচ্চ সুবিধা থাকতে হবে। ন্যূনতম সুবিধা নিশ্চিতে বিশেষজ্ঞের মতামত পর্যালোচনা করে বেসরকারি কর্তৃপক্ষকে যথাযথ প্রক্রিয়ায় অবহিত করতে হবে।

ক্যাটাগরি ‘বি’ : ৫০-৯৯ শয্যার বিশেষায়িত সেবার হাসপাতাল হতে হবে। যেখানে আইসিইউসহ অন্যান্য সুবিধা থাকতে হবে। ক্যাটাগরি ‘সি’ : ১০-৪৯ শয্যার সুনির্দিষ্ট বিশেষায়িত সেবার হাসপাতাল হতে হবে। বিশেষায়িত সেবাগুলোর ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধাসংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের মতামত অনুসারে নির্ধারণ করা হবে।

২। বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের (প্যাথলজি ল্যাবগুলোর বর্তমান প্রচলিত ক্যাটাগরি) : ক্যাটাগরি ‘এ’ : রুটিন প্যাথলজি, বায়োকেমিস্ট্রি, হেমাটোলজি পরীক্ষা, এক্সরে, আল্ট্রাসনোগ্রাম, হিস্টোপ্যাথলজি, মাইক্রোবায়োলজি, ইমিউনোলজি, হরমোন পরীক্ষা, রেডিওলজি ও ইমেজিং সেবা, সিটি স্ক্যান এবং এমআরআই থাকতে হবে। ক্যাটাগরি ‘বি’ : রুটিন প্যাথলজি, বায়োকেমিস্ট্রি, হেমাটোলজি পরীক্ষা, এক্সরে, আল্ট্রাসনোগ্রাম, হিস্টোপ্যাথলজি, মাইক্রোবায়োলজি, ইমিউনোলজি, হরমোন পরীক্ষা, অন্যান্য রেডিওলজি ও ইমেজিং সেবা থাকতে হবে। ক্যাটাগরি ‘সি’ : রুটিন প্যাথলজি, বায়োকেমিস্ট্রি, হেমাটোলজি, এক্সরে এবং আল্ট্রাসনোগ্রাম। মেডিক্যাল চেক-আপ সেন্টার : শুধু বিদেশ গমনের উদ্দেশ্যে যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য স্থাপিত হবে।

৩। বেসরকারি রক্ত-পরিসঞ্চালন কেন্দ্রের প্রস্তাবিত ক্যাটাগরি ‘এ’ : অ্যাফোরেসিস সুবিধা, কম্পোনেন্ট সেপারেশন করার ব্যবস্থা, স্ক্রিনিং, ক্রাসম্যাচিং এবং রক্ত সংরক্ষণ সুবিধা থাকতে হবে। ক্যাটাগরি ‘বি’ : কম্পোনেন্ট সেপারেশন করার ব্যবস্থা, স্ক্রিনিং ও ক্রাসম্যাচিং এবং রক্ত সংরক্ষণ সুবিধা থাকতে হবে। ক্যাটাগরি ‘সি’ : স্ক্রিনিং ও ক্রাসম্যাচিং এবং রক্ত সংরক্ষণ সুবিধা থাকতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বেসরকারি স্বাস্থসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে তিন ক্যাটাগরিতে ভাগ করার পাশাপাশি ১৩টি বিশেষ শ্রেণির ১০৮ ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার সেবামূল্যের প্রস্তাব করেছে। সেগুলো হলো সিটি স্ক্যান প্রকারভেদে চার হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা; এমআরআই সাত হাজার থেকে ১২ হাজার; আল্ট্রাসনোগ্রাম ১৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা। হেপাটো/পালমনো ২ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা। এ ছাড়া ইউরোফ্লোমিটার এক হাজার টাকা; কার্ডিয়াক পরীক্ষা ৩৫০ থেকে তিন হাজার; এক্সরে পাঁচশ থেকে আড়াই হাজার; বিভিন্ন ধরনের প্যাথলোজি পরীক্ষা তিনশ থেকে এক হাজার টাকা; বায়োকেমিস্ট্রি পরীক্ষা ২০০ থেকে এক হাজার টাকা; মাইক্রোবায়োলজি ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা এবং আট ধরনের হরমোন পরীক্ষার প্রত্যেকটির ক্ষেত্রে এক হাজার টাকা। হেমাটেলাজির বিভিন্ন পরীক্ষা ফি প্রস্তাব করা হয়েছে ৪০০ থেকে আড়াই হাজার টাকা। সেরোলজিক্যাল পরীক্ষার ফি নির্ধারণ হয়েছে ২০০ থেকে ১৫০০ টাকা।

ওই দিন সভা শেষে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, একেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে একেক রকম ফি থাকায় মানুষের চিকিৎসা ব্যয় বেড়ে গেছে। এক হাসপাতালে ফি ১০ হাজার টাকা হলে অন্য হাসপাতালে বিল ওঠে ৫০ হাজার বা ১ লাখ টাকা। এটি চলতে পারে না। আমরা আগেও বেসরকারি হাসপাতালের ফি নির্ধারণ বিষয়ে সভা করেছি। এবার বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভাগ করে দিচ্ছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com