বেতনের দাবিতে চন্দ্রা-নবীনগর সড়ক অবরোধ করেছে গাজীপুর মহানগরীর জিরানী ও চক্রবর্তী এলাকায় ডরিন ফ্যাশন লিমিটেড এবং বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকেরা। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে তারা সড়ক দখল করে বিক্ষোভ করছেন। এ কারণে ওই সড়কের উভয় দিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রী ও চালকেরা।
জানা গেছে, এক মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে গাজীপুর মহানগরের সারাবোয় চক্রবর্তী এলাকায় ৮ ঘণ্টা বিরতি দিয়ে ফের চন্দ্রা–নবীনগর মহাসড়ক অবরোধ করেছেন বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকেরা।
চতুর্থ দিনের মতো আজও মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন তারা। এতে বন্ধ রয়েছে ওই সড়ক। চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষের। পরিবহনগুলো চলছে বিকল্প রাস্তায়।
জানা গেছে, অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে শনিবার চন্দ্রা-নবীনগর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকেরা। গতকাল সোমবার সকাল থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত সড়কটি অবরোধ করে রাখেন তারা। পরে ৮ ঘণ্টা বিরতি দিয়ে আবারও মঙ্গলবার সকালে তারা সড়কে অবস্থান নিয়েছেন।
শিল্প পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বেক্সিমকো পার্কে স্টাফসহ ৪১ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। প্রতি মাসে তাদের বেতনের পরিমাণ হয় ৮০ থেকে ৮২ কোটি টাকা। প্রতিমাসের ৭ থেকে ১০ তারিখের মধ্যে তাদের বেতন দেওয়া হতো। কিন্তু মালিকদের কেউ না থাকায় এখন বেতন ঠিকমতো পাচ্ছেন না তারা। যার কারণে গত শনিবার থেকে আন্দোলন শুরু করেন শ্রমিকরা। বেক্সিমকো কারখানার এই সমস্যার কারণে গতকাল সোমবার আরেকটি কারখানা ও এলাকাবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। উত্তেজিত হয়ে একটি কারখানায় আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। ওই ঘটনার পর থেকে আশপাশের বেশ কিছু কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়।
কারখানার শ্রমিক ও শিল্প পুলিশ জানায়, গাজীপুর মহানগরের সারোবো এলাকায় বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে বেশ কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর গত কয়েক মাস ধরে শ্রমিকরা প্রতি মাসেই আন্দোলন করে বেতন আদায় করছেন। আশপাশের প্রায় সব কারখানার বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হলেও চলতি মাসের ১৯ তারিখ হয়ে গেলেও বেক্সিমকোর শ্রমিকরা বেতন পায়নি। যার কারণে বেতনের দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছেন তারা।
কাশিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিদিনের মতোই আজও সড়ক অবরোধ করেছেন বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকেরা। তারা সারাদিন অবরোধ করে রেখে স্বেচ্ছায় রাতে সড়ক ছেড়ে দেন। তারা বেতন না পেলে সড়ক থেকে যাবে না বলে জানিয়েছেন। কারখানা কর্তৃপক্ষও বেতন দিবেন এমন কোনো আশ্বাস এখন পর্যন্ত দেননি।’