ঢাকার অদূরে গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে শুরু হয়েছে বিশ্ব ইজতেমা ২০২৩। কয়েক দিন আগেই দেশী-বিদেশী মুসল্লিতে কানায় কানায় ভরে গেছে ইজতেমা ময়দান। বাংলাদেশসহ বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ ছুটে আসছেন এই বিশ্ব ইজতেমায়
কিন্তু কিভাবে এই বিশ্ব ইজতেমা বাংলাদেশের হলো? প্রতি বছর বাংলাদেশেই কেন অনুষ্ঠিত হয় বিশ্ব ইজতেমা। বিষয়টি নিয়ে জানার আগ্রহ সবার।
মূলত মাওলানা ইলিয়াস কান্ধলভির রহ: হাত ধরে উপমহাদেশে দাওয়াত ও তাবলিগের কাজের সূচনা হয় ১৯২৭ সালে ভারতে। পরে মাওলানা আবদুল আজিজের মাধ্যমে ১৯৪৪ সালে বাংলাদেশে শুরু হয় তাবলিগের কাজ। পরে এ কাজ ধীরে ধীরে আরো ব্যাপক হয়ে পড়লে এলাকাভিত্তিক সম্মেলনের পদক্ষেপ নেন মাওলানা ইলিয়াস রহ:।
বিশেষ করে ১৯৪৫ সালে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ভিন্ন ভিন্নভাবে ইজতেমা অনুষ্ঠানের। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের কাকরাইল, ভারতের ভুপাল এবং পাকিস্তানের রাইবেন্ডে ইজতেমা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ধর্মীয়, সামাজিকসহ অন্যান্য পারিপার্শ্বিক কারণে প্রথম থেকেই বাংলাদেশের ইজতেমার আয়তন অন্য দুই ইজতেমার চেয়ে বেশি ছিল।
বিশাল ব্যাপ্তির আয়োজনের বাইরেও অধিকসংখ্যক লোকের অংশগ্রহণ, স্বল্প ব্যয়, ভিসার সহজলভ্যতা, সাধারণ মুসলমান তথা এলাকাবাসীর আন্তরিকতা, সামাজিক ও ধর্মীয় সহিষ্ণুতাসহ সার্বিক অনুকূল পরিবেশের কারণে বাংলাদেশের ইজতেমা সারাবিশ্বের তাবলিগ জামাতের অনুসারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং সমাদৃত হয়। ফলে ক্রমেই বাংলাদেশের ইজতেমাটি বিশ্ব ইজতেমায় পরিণত হয়।
কেউ কেউ বলেন, বাংলাদেশকে বিশ্ব ইজতেমার স্থান হিসেবে বেছে নেয়া হয়েছিল লটারির মাধ্যমে। তবে তাবলিগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেন, বিষয়টি তাদের জানা নেই।
যেভাবে টঙ্গীতে ইজতেমা
বাংলাদেশে প্রথম ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয় ১৯৪৬ সালে, কাকরাইল মসজিদে। ১৯৪৮ সালে সেটা চলে যায় চট্টগ্রামের হাজি ক্যাম্পে। ১৯৫৮ সালে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে অনুষ্ঠিত হয় ইজতেমা। তবে দিন দিন ইজতেমায় অংশগ্রহণ করা লোকসংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ১৯৬৬ সালে টঙ্গীর মনসুর জুট মিলের কাছের একটি মাঠে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হতে থাকে।
১৯৬৭ সালে টঙ্গীর তুরাগ নদীর পাড়ে এই ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। তবে জায়গা নিয়ে এই দৌড়াদৌড়ির অবসান হয় স্বাধীনতার পর। সে সময় সরকার তুরাগ পাড়ের ১৬০ একর জমি এই ইজতেমার জন্য বরাদ্দ দেয়। সেই থেকে টঙ্গীর তুরাগ পাড়ই হয়ে ওঠে ইজতেমার ঠিকানা।