জাতিসঙ্ঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর বলছে, ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে যাবার পথে প্রাণহানির সংখ্যা বাড়ছে। এমনকি কম অভিবাসন প্রত্যাশী লোকজন ও শরণার্থী বিপজ্জনক ওই পথে যাত্রা করলেও থেমে নেই মৃত্যুর মিছিল।
২০১৫ সালে অভিবাসন সঙ্কট চরমে পৌঁছেছিল, সে সময়ে প্রায় দশ লাখেরও বেশি উদ্বাস্তু এবং অভিবাসন প্রত্যাশী লোকজন ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে গিয়েছিল। ২০২১ সালে এই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছিল ১ লাখ ২৩ হাজার ৩০০ জনে।
তবে, জাতিসঙ্ঘের শরণার্থী সংস্থা বলছে, গত বছর সমুদ্র পথে পার হতে গিয়ে ৩ হাজার ২০০ জনের বেশি মানুষ মারা গেছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন, যা ২০১৮ সালে রেকর্ডকৃত মৃত্যুর চেয়ে প্রায় ১ হাজার জন বেশি।
সমুদ্রে ক্রমবর্ধমান মৃতের সংখ্যা ছাড়াও ইউএনএইচসিআরের মুখপাত্র শাবিয়া মান্টু বলেছেন, সাহারা মরুভূমি এবং প্রত্যন্ত সীমান্ত অঞ্চলের মধ্য দিয়ে স্থল পথে আরো বেশি সংখ্যক মানুষ মারা যেতে পারে বা নিখোঁজ হতে পারে।
তিনি বলেন, এ ধরনের ঘটনাগুলো ঘটছে সাধারণত ইত্রিয়া, সোমালিয়া, জিবুতি, ইথিওপিয়া, সুদান লিবিয়াসহ দেশান্তরী মানুষের উৎস এবং গন্তব্যের দেশগুলোতে।
মান্টু বলেন, ইউএনএইচসিআর ক্রমাগত ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা এবং বিপদের সম্মুখীন হওয়া উদ্বাস্তু এবং অভিবাসন প্রত্যাশীদের এই বিপজ্জনক যাত্রাপথে ভ্রমণ না করার বিষয়ে সতর্ক করে আসছে। ভুক্তভোগীদের মধ্যে অনেকেই আছেন, যারা সংঘর্ষ, সহিংসতা এবং নিপীড়ন থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
মান্টু বলেছেন, উদ্বাস্তু এবং অভিবাসন প্রত্যাশীদের কাছে চোরাকারবারীদের উপর নির্ভর করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই ।
তিনি বলেছেন, তারা সাহারা মরুভূমির মধ্য দিয়ে স্থলপথে কিংবা লিবিয়া এবং তিউনিসিয়া থেকে সমুদ্র পাড়ি দিয়ে ইতালি বা মাল্টার দিকে যে পথেই যাক না কেন, তারা চোরাকারবারীদের কাছ থেকে বড় রকমের ঝুঁকির সম্মুখীন হয়।
প্রতি বছর, হাজার হাজার মানুষ সমুদ্রে মারা যায় কিংবা নিখোঁজ হয়, যাদের কোনো চিহ্নই আর থাকে না।
মৃত্যুযাত্রা রোধ করতে, বিপজ্জনক যাত্রার বিকল্প খুঁজতে এবং মানব পাচার রোধ করতে বৃহত্তর পদক্ষেপের আহ্বান জানাচ্ছে ইউএনএইচসিআর। সংস্থাটি আন্তর্জাতিক সুরক্ষার প্রয়োজনে মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি এবং সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে।