বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় বিভাগীয় শহর বরিশালে বিরোধী দল বিএনপি সমাবেশের একদিন আগেই সব ধরণের যান চলাচল বন্ধ হয়ে শহরটি অন্য সব জেলা ও উপজেলাগুলো থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের সাথেই বাস যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে শুক্রবার রাত থেকেই।এমনকি বরিশাল থেকে পার্শ্ববর্তী অন্য জেলা ও উপজেলায় কোন ধরনের গণপরিবহন চলাচল করছে না।
যদিও বিএনপির মিডিয়া সেলের দায়িত্বে থাকা নেতা জহির উদ্দিন স্বপন বলেছেন যে পটুয়াখালী, ভোলাসহ বেশ কিছু জায়গায় বিএনপি কার্যালয়ে হামলা হলেও বরিশালে সমাবেশ আয়োজনের ক্ষেত্রে প্রশাসনের দিক থেকে অসহযোগিতা তারা পাননি।
“বরিশাল ইতোমধ্যেই বিএনপি সমর্থকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে। বাধা দেয়া হতে পারে এমন কিছু জায়গার তালিকা আমরা প্রশাসনকে দিয়েছি। আশা করি তারা সহযোগিতা অব্যাহত রাখবেন।
দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা নানা উপায়ে বরিশালে সমবেত হতে শুরু করেছেন রাত থেকেই। অনেকেই রাতে তাঁবু টাঙ্গিয়ে সেখানেই অবস্থান করেছেন।
বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের কর্মসূচির অংশ হিসেবে বরিশালে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে শনিবার। এতে যোগ দিতে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের শুক্রবার বিকেলে বরিশালে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
মূলত নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী সংসদ নির্বাচন, গুম ও খুনের প্রতিবাদ, দলটির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া মুক্তি ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশের ফেরার সুযোগ তৈরির জন্য সব মামলা প্রত্যাহারসহ নানা দাবিতে দলটি এ সমাবেশের এ ধারাবাহিক কর্মসূচি শুরু করেছে। এটি শেষ হবে ঢাকার সমাবেশের মধ্য দিয়ে।
এর আগে খুলনা ও রংপুরের সমাবেশের আগেও স্থানীয়ভাবে বাস মালিক ও শ্রমিকরা ধর্মঘট ডেকে শহর দু’টিকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিলো। এবার বিএনপির বিভাগীয় পর্যায়ের পঞ্চম সমাবেশকে কেন্দ্র করে বরিশালেও একই পরিস্থিতি তৈরি হলো।
শহরের বিভিন্ন আবাসিক হোটেল পরিপূর্ণ হয়ে গেছে আগেই এবং আজ শুক্রবার শহরে যানচলাচল একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে।
ঢাকা থেকে লঞ্চ আজ সকালে বরিশালে পৌঁছেছে তবে জেলা ও উপজেলার সাথে বরিশালের লঞ্চ যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ভোলা থেকে আসার পথে একটি লঞ্চে ভাংচুর করা হয়েছে এমন কারণ দেখিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের অভ্যন্তরীণ রুটগুলোতে লঞ্চ যোগাযোগ করার কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে বাস মালিক শ্রমিকরা ধর্মঘট ডেকেছেন সড়কে অবৈধ যানবাহন বিশেষ করে তিন চাকার নসিমন, করিমন ও অটোরিকশা বন্ধের দাবিতে।আবার অটোরিকশাসহ কিছু যানবাহন মালিকরা দাবি করেছেন, তারা যথাযথ কর্তৃপক্ষের রেজিস্ট্রেশন নিয়েছেন। সে কারণে তাদের সড়কে চলতে দিতে হবে এমন কারণ দেখিয়ে তারাও ধর্মঘট ডেকেছে।
ফলে কার্যত বরিশালের সাথে সড়ক পথে যোগাযোগ আছেন এমন জেলা যেমন ঝালকাঠি ও পিরোজপুরের সংযোগ সড়কেও কোন পরিবহন এখন দেখা যাচ্ছে না।
তবে যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা শওকত আহমেদ জানিয়েছেন, তাদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ইতোমধ্যেই বরিশালে পৌঁছেছেন।
“সব বন্ধ থাকলেও মানুষ আসতে শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার রাতেই বেলস পার্ক পূর্ণ হয়ে গেছে।শনিবারের সমাবেশের আগেই পুরো শহর মানুষে মানুষে সয়লাব হয়ে যাবে,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।
বিএনপির স্থানীয় নেতারা বলছেন বৃহস্পতিবার দিন থেকেই শত শত ট্রলারে করে দলটির কর্মী সমর্থকরা বিভিন্ন জায়গা থেকে আসতে শুরু করেছেন।
-bbcbangla