সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তার ও সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনসহ চারজনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদার।
তাদের বিরুদ্ধে বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় মিথ্যা ও অসত্য তথ্য সরবরাহ করা এবং তা প্রচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বনজ কুমার মজুমদারের পক্ষে ধানমন্ডি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন পিবিআই ঢাকা মেট্রো উত্তরের পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম। পরে এটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পিবিআই সদর দফতরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু ইউসুফ।
অভিযুক্তরা হলেন- ইলিয়াস হোসাইন (৪৮), সাবেক পুলিশ সুপার মো: বাবুল আকতার (৪৬), বাবুল আক্তারের ভাই মো: হাবিবুর রহমান লাবু (৪৫) ও বাবুল আক্তারের বাবা মো: আব্দুল ওয়াদুদ মিয়া (৭২)।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ধানমন্ডি থানার ওসি মো: ইকরাম আলী মিয়া জানান, অভিযোগপত্র মামলা হিসেবে নথিভুক্তি করা হয়েছে। মামলা নং ২৪। মামলা তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রবিউল ইসলামকে।
এর আগে, মিতু হত্যা মামলার তদন্ত নিয়ে প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন তার ইউটিউব চ্যানেল থেকে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছিলেন। সেই ভিডিওতে বলা হয়েছে, এই মামলায় বাবুল আক্তারকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ফাঁসিয়েছেন পিবিআই প্রধান বনজ কুমার। এছাড়াও তাকে রিমান্ডে নির্যাতনও করা হয়েছে। মিথ্যা সাক্ষী সাজানোর অভিযোগও রয়েছে।
ইলিয়াসের সেই ভিডিও নিয়ে আজ (মঙ্গলবার) সংবাদ সম্মেলন ডেকেছিল পিবিআই। সেখানে নিজের অবস্থান ব্যক্ত করার কথা ছিল বনজ কুমারের। তবে অনিবার্য কারণবশত সংবাদ সম্মেলনটি বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পিবিআই।
২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরের নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। ওই সময় এ ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত হয়। ঘটনার সময় মিতুর স্বামী তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার অবস্থান করছিলেন ঢাকায়। ঘটনার পর চট্টগ্রামে ফিরে তিনি পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরে বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলায় মিতু হত্যাকাণ্ডে তারই সম্পৃক্ত থাকার কথা জানায় পিবিআই। এরপর গত বছরের ১২ মে আগের মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার দিন বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানায় মামলা দায়ের করেন মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন। ওই দিনই মামলাটিতে বাবুলকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পিবিআই। সেই থেকে কারাগারে আছেন তিনি। সেই থেকে দুটি মামলায় তদন্ত করছে পিবিআই।
এদিকে ইলিয়াসের ভিডিওটি প্রকাশের পরই বনজ কুমার মজুমদারসহ ছয় পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করেন বাবুল আক্তার। তবে মামলার আবেদন খারিজ করে দেন আদালত।