ঠাকুরগাঁওয়ে বাবাকে খুন করে থানায় আত্মসমর্পণ করেছেন ছেলে। আজ সোমবার ভোরে ঠাকুরগাঁও শহরের শান্তিনগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত ফজলে এলাহী (৫৮) একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি অবসরজীবন কাটাচ্ছিলেন।
ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন জানান, আত্মসমর্পণ করা গোলাম আজম তার বাবার হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। নিজের বিচার দাবি করলে তাকে আটক করা হয়।
গতকাল রোববার দিবাগত রাতে বাড়ি ফাঁকা পেয়ে আজম তার বাবার ঘরে ঢুকে মাথায় লোহার রড দিয়ে কয়েকবার আঘাত করেন। পরে তিনি বাবার বুকে ছুরিকাঘাত করেন। এতে ফজলে এলাহী ঘটনাস্থলেই মারা যান। বাবার মৃত্যু নিশ্চিত হলে ঘরে তালা লাগিয়ে বেরিয়ে যান আজম।
রাত আড়াইটায় গোলাম আজম সদর থানায় এসে দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তা নির্মল রায়কে বলেন, ‘আমি আমার বাবাকে খুন করেছি। এর জন্য আমি নিজের বিচার চাই। আমাকে গ্রেপ্তার করুন।’
ওসি আরও বলেন, গোলাম আজমের কথায় বিশ্বাস না হলে বোনের মুঠোফোন নম্বর নিয়ে কল দিয়ে বিষয়টি যাচাই করতে বলেন পুলিশ কর্মকর্তা। সে সময় আজমের বোন বাড়িতে গিয়ে ঘরের দরজায় তালা দেখতে পান। পরে পুলিশ ওই বাসা থেকে ফজলে এলাহীর লাশ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ওসি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে গোলাম আজম পুলিশ কর্মকর্তাদের বলেছেন, তিনি সুস্থ। তারপরও পরিবারের লোকজন তাকে মানসিক রোগী মনে করে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছিলেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি গতকাল রাতে সুযোগ পেয়ে বাবার ওপর আক্রমণ করেন। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
ঠাকুরগাঁও পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জমিরুল ইসলাম বলেন, ‘শুনেছি রুয়েট থেকে পড়ালেখা শেষ করে চাকরি করতেন গোলাম আজম। পরে চাকরি ছেড়ে বাড়িতে চলে আসেন। এরপর তার মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। এ নিয়ে তাদের পরিবারে ঝামেলা চলছিল।’
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘এটি একটি হত্যাকাণ্ড। অভিযুক্ত গোলাম আজম আমাদের হেফাজতে আছেন এবং তিনি হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি নিজেই তার বাবাকে হত্যা করেছেন। নিহতের সুরতহাল করা হয়েছে। মামলার পর তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’