বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণের অনুমোদন দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ।
সোমবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে আইএমএফের নির্বাহী বোর্ডের সভায় ওই ঋণের অনুরোধটি অনুমোদন করা হয়েছে।
বাংলাদেশে বর্তমানে যে বৈদেশিক মুদ্রা সঙ্কট চলছে, এই ঋণ সেটা কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করবে বলে দেশটির কর্মকর্তারা আশা করছেন।
আইএমএফ জানিয়েছে, আগামী ৪২ মাস ধরে মোট সাত কিস্তিতে এই ঋণ পাবে বাংলাদেশ। ঋণের গড় সুদ হবে ২ দশমিক ২ শতাংশ।
বর্ধিত ঋণ সহায়তা বা বর্ধিত তহবিল সহায়তা থেকে পাওয়া যাবে ৩.৩ বিলিয়ন ও ৩৩০ কোটি মার্কিন ডলার এবং রেজিলিয়্যান্স অ্যান্ড সানসেইনিবিলিটি ফ্যাসিলিটির আওতায় ১.৪ বিলিয়ন বা ১৪০ কোটি ডলার পাওয়া যাবে।
প্রথমেই ৪৭৬ মিলিয়ন ডলার ছাড়ের প্রস্তাবেরও অনুমোদন দিয়েছে আইএমএফ বোর্ড।
আইএমএফ একটি বিবৃতিতে বলেছে, বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা রক্ষা, সামাজিক ও উন্নয়নমূলক ব্যয়ে সক্ষমতা তৈরিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার করা, আর্থিক খাত শক্তিশালী করা, নীতি কাঠামো আধুনিক করে তোলা এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার কাজে এই ঋণ সাহায্য করবে।
ঋণ অনুমোদনের পরপর সোমবার রাতে আইএমএফকে ধন্যবাদ জানিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বিবৃতিতে অর্থমন্ত্রী আইএমএফের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেছেন, ‘অনেকেই সন্দেহ পোষণ করেছিলেন যে, আইএমএফ হয়তোবা আমাদের এ ঋণ দেবে না।‘
‘ তারা ভেবেছিল, আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতির মৌলিক এলাকাসমূহ দুর্বল, তাই আইএমএফ এ ঋণ প্রদান থেকে বিরত থাকবে।‘
‘এ ঋণ অনুমোদনের মাধ্যমে এটাও প্রমাণিত হলো যে আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতির মৌলিক এলাকাসমূহ শক্ত ভিতের ওপরে দাঁড়িয়ে আছে এবং অন্যান্য দেশের তুলনায় ভালো। ’
বৈদেশিক লেনদেনের ঘাটতি মেটাতে গত বছরের ২৪ জুলাই আইএমএফের কাছে ঋণ চেয়েছিল বাংলাদেশ। ওই সময় ঋণের পরিমাণ জানানো হয়নি।
তবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছিল যে, বাংলাদেশ ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ চেয়েছে।
ঋণের বিষয়ে আলোচনা করতে গত বছরের নভেম্বর মাসে আইএমএফের কর্মকর্তাদের একটি দল বাংলাদেশ সফর করে। সেই সময় প্রাথমিক সমঝোতায় পৌঁছায় আইএমএফ।
তবে ঋণ পেতে বরাবরের মতোই বেশ কিছু সংস্কারের শর্ত দিয়েছে আইএমএফ।
যার মধ্যে রয়েছে জ্বালানিসহ বিভিন্ন খাতের ভর্তুকি কমানো, টাকার বিনিময় ব্যবস্থা বাজারের ওপর ছড়ে দেয়া, রাজস্ব ব্যবস্থার সংস্কার, কর আদায়ে সক্ষমতা বৃদ্ধি, ব্যাংকিং খাতের সংস্কার, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং আধুনিক মুদ্রানীতি তৈরি করা, আর্থিক খাতের দুর্বলতা দূর করা এবং নজরদারি বাড়ানো ইত্যাদি।
সূত্র : বিবিসি