মাকে ডাক্তার দেখাতে এসে লাইনে দাঁড়ানো নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে আনসার সদস্যদের হাতে মারধরের শিকার হয়েছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থী শান্ত। এ ঘটনায় অভিযুক্ত পাঁচ আনসার সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
সোমবার (১৯ জুন) সকাল সোয়া ১১টার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে ঘটনাটি ঘটে। এদিন বিকেলে ৫ আনসার সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত সকালে তার মা ফরিদা বেগমকে (৫৫) নিয়ে বাকেরগঞ্জের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে আসেন। এ সময় তার মা লাইনে না দাঁড়িয়ে পাশে ফ্যানের নিচে দাঁড়ান। পরে দায়িত্বরত আনসার সদস্য হেমায়েত উদ্দিন টিকেট কাউন্টারের সামনে লাইনে দাঁড়ানোর জন্য বলেন ফরিদা বেগমকে।
এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ফরিদা বেগম তার জুতা দিয়ে আনসার সদস্যকে মারধর করেন। এ সময় শান্ত ছুটে এলে অন্য আনসারের এপিসি হেমায়েত উদ্দিন, আনসার সদস্য শাকিল, হানিফ, জিহাদ ও রিয়াজ ওই ছাত্রকে মারধর করেন।
পরে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য ছাত্ররা এসে হাসপাতালে বিক্ষোভ করে দোষীদের শাস্তির দাবি জানান। খবর পেয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) ফজলুল করিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ সময় তিনি ওই ৫ আনসার সদস্যকে সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশ দেন।
বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশাল শের-ই-বাংলা হাসপাতালের আনসার কমান্ডার মোশারেফ হোসেন। তিনি বলেন, ঘটনার পর ওই ৫ আনসার সদস্যকে সরিয়ে নতুন সদস্যদের নিয়োগের জন্য বিভাগীয় দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর বিভাগীয় পরিচালক আশরাফুল আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে জেলা কমান্ড্যান্ট বাসুদেব ঘোষকে বিষয়টি পর্যবেক্ষণের নির্দেশ দিয়েছেন।
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম বলেন, সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে আনসার সদস্যরা ওই ছাত্রের কলার ধরে টেনে নিয়ে মারধর করেছেন। যা তাদের উচিত হয়নি। বিষয়টি দুঃখজনক। ওই ৫ আনসার সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রতি ৩ মাস পর পর আনসার সদস্যদের পরিবর্তন করতে বলা হয়েছে।