শনিবার, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৩, আওয়ামী সন্ত্রাস এবং সরকারের দমন-নিপীড়ন ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে, দুর্নীতিবাজ, ফ্যাসিস্ট, গণ-বিরোধী সরকারের পদত্যাগ, অবৈধ সংসদ বাতিল, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন, বিএনপি’র চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও রাজবন্দিদের মুক্তি, ১০ দফা দাবি বাস্তবায়ন এবং বিদ্যুৎ-গ্যাস, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য কমানোর দাবিতে বরিশাল জেলা স্কুল মাঠে বরিশাল বিভাগীয় বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, গণতান্ত্রিক দেশে সকল নাগরিকের অধিকার নিশ্চিত করা হয়। অথচ বাংলাদেশে যারা আওয়ামী লীগ করে তাদের অধিকার নিশ্চিত করছে সরকার। বিপরীতে গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে থামিয়ে দিতে ১ লাখ মামলায় বিএনপির ৩৫ লাখ নেতাকর্মীকে আসামি করে হয়রানি করছে।
আব্দুল মঈন খান বলেন, আওয়ামী লীগের এই জুলুম আর বেশি দিন চলতে দেওয়া যায় না। বিএনপি কোনো দিন ক্ষমতার মোহে অন্ধ ছিল না। এখনো নেই। ক্ষমতার মোহে যদি অন্ধ হতো তাহলে ১৯৯৬ সালে বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতা ত্যাগ করতেন না। তার সেই ত্যাগ ইতিহাস হয়ে রয়েছে। বিশ্বের গণতন্ত্রের নিদর্শন হয়ে রয়েছে। আমরা এখনো যুগপৎ আন্দোলনে রয়েছি, আমাদের একটাই দাবি। মানুষের অধিকার মানুষের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে।
বরিশালবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের জনগণ কোনো দিন অন্যায়কে স্বীকার করেনি। আওয়ামী লীগের অন্যায়কেও জনগণ মেনে নেবে না। বিগত ১৪ বছরে এই সরকার বিরোধী অসংখ্য নেতাকর্মীকে গুম-খুন করেছে। এভাবে আর চলতে দেওয়া হবে না।
সরকারের উদ্দেশে আব্দুল মঈন খান বলেন, এখনো সময় আছে আপনারা বাস্তবতা মেনে নেন। দেশের জনগণ একবেলা না খেয়ে থাকতে রাজি আছে কিন্তু গণতন্ত্রহীন অবস্থায় থাকতে রাজি না। মানুষ আজ ভোটের অধিকার, কথা বলার অধিকার, অন্ন-বস্ত্র-চিকিৎসার অধিকার ফেরত চায়। আমি সরকারকে বলবো, আপনারা যদি সত্যিকার অর্থেই জনগণকে ভালোবাসেন তাহলে আর অত্যাচার জুলুম করবেন না। অত্যাচার জুলুমের পথ থেকে ফিরে এসে জনগণের কাতারে দাঁড়ান। আপনারা-আমরা পাশাপাশি থেকে ১২ কোটি ভোটোরের কাছে ভোট চাইবো। একটি স্বচ্ছ নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে জনগণ যাদের ভোট দেবে তারা আগামীর সরকার গঠন করবে। পাশাপাশি দাঁড়িয়ে জনগণের কাছে ফিরে যাওয়া এটাই হচ্ছে গণতন্ত্রের মূল কথা। যত বাধাই আসুক আমরা এবার গণতন্ত্রের মূলে ফিরতে চাই।
সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, সরকার বলছে উন্নয়নে দেশ ভাসিয়ে দিয়েছে। আমার প্রশ্ন যদি এত উন্নয়ন করে থাকেন তাহলে ভোটের মাঠে আসতে আপনাদের ভয় কিসের? সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে এত ভয় পাচ্ছেন কেন? কয়েকদিন আগে শেষ হওয়া ৬টি উপ-নির্বাচনেও সরকার ইচ্ছেমতো ফলাফল বদলে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের ভোটের ফলাফল ভোট কেন্দ্রে হয় না, ফলাফলের সিদ্ধান্ত হয় রাজধানীতে। রাজধানীতে বসে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, ইউএনও আর ওসিকে ফোনে জানিয়ে দেওয়া হয় ফলাফল। এভাবেই মাঠের ভোটের ফলাফলের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। এমন বাস্তবতায় কোনো দিন বিএনপি নির্বাচনে যাবে না। যতদিন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা না হবে, ততদিন বিএনপি নির্বাচনে যাবে না।
বরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুকের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদিন, বরিশাল-১ এর সাবেক সংসদ সদস্য, বিএনপি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোটেক মজিবর রহমান সরোয়ার, কেন্দ্রীয় বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিনসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।