জমে উঠেছে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা। ঐ সব প্রার্থীদের পরিবার-পরিজন, দেশ-বিদেশে অবস্থানরত আত্মীয়স্বজন ও ঘনিষ্ঠজন থেকে শুরু করে বন্ধুবান্ধবও প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। জানা গেছে, মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত, ইকবাল হোসেন তাপস, মুফতি ফয়জুল করীম ও কামরুল আহসান রূপনের পক্ষে কাজ করতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে একাধিক ব্যক্তি এসেছেন। ঐসব ব্যক্তি নিজ নিজ উদ্যোগে ৮-১০ জনের একটি দল করে বিভিন্ন স্থানে তার পক্ষের মেয়র প্রার্থীর জন্য ভোট চাইছেন। পাশাপাশি মেয়র প্রার্থীরা এত বড় নগরীতে সবার দ্বারে দ্বারে আসতে পারছেন না বলে দুঃখ প্রকাশ করছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রার্থীরা ১০-১২ জন করে মহিলা ও পুরুষদের একাধিক টিম গঠন করেছেন। তাদের সঙ্গে থাকছে ঐ প্রার্থীর অনুসারী একজন। সে তাদের গাইড লাইন দিয়ে বিভিন্ন বাসাবাড়িতে প্রচারণার কাজে তাদেরকে ব্যবহার করছেন। বিশেষ করে কাউন্সিলর প্রার্থীদের বেলায় যে যত পারছেন তাদের প্রচারণা টিম ততই বড় করছেন। এক বাসায় ১০-১৫ জন এক সঙ্গে উপস্থিত হয়ে প্রার্থীদের সালাম পৌঁছে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করার অনুরোধ জানাচ্ছেন। প্রতিদিন সকালে বের হলেই দেখা যায় নগরীর বিভিন্ন পাড়ায় পাড়ায় প্রচারণা কর্মীদের ভিড়। এ সময় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের কর্মীদের মুখোমুখি হলেও তারা সবাই কুশল বিনিময় করছেন।
প্রার্থীদের প্রচারণা :মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ গতকাল মঙ্গলবার শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ, কর্মকর্তা-কর্মচারী, নার্স, ব্রাদারগণের সঙ্গে মতবিনিময়, নগরীর সিটি কলেজে স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সভায় যোগদান এবং ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে উঠান বৈঠকসহ বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন। লাঙ্গল প্রতীকের ইকবাল হোসেন তাপস সকালে লঞ্চঘাটসংলগ্ন এলাকা, বিকালে ৪ নম্বর ওয়ার্ডে উঠান বৈঠক ও রাতে নগরীর ইমাম-মুয়াজ্জিন-খাদেমদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মুফতি ফয়জুল করীম ২৬, ১৪ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে গণসংযোগ করেন। স্বতন্ত্র দেয়ালঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী কামরুল আহসান রূপন নগরীর সদর রোড, সার্কিট হাউজ, গির্জা, মহল্লাসহ বেশ কিছু এলাকায় গণসংযোগ করেন।
এক পরিবার থেকে একাধিক কাউন্সিলর প্রার্থী :আগামী ১২ জুন বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ বছর সিটি নির্বাচনে এক পরিবার থেকেই একাধিক ব্যক্তি প্রার্থী হয়েছেন। স্বামী যেখানে সাধারণ ওয়ার্ডে প্রার্থিতা করছেন, স্ত্রী করছেন সংরক্ষিতে। আবার দেবর-ভাবি, ভাইবোন এবং আপন দুই ভাইও নির্বাচন করছেন একই ওয়ার্ড থেকে।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হয়েছেন রেদোয়ান রানা। আর সংরক্ষিত ২৮, ২৯ ও ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন তার ভাবি ফাতেমা রোজী। এ প্রসঙ্গে রেদোয়ান রানা বলেন, ‘আমরা মানুষের সেবা করতে চাই। জনগণের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আমরা প্রার্থী হয়েছি।’ সিটির ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী হুমায়ন কবির এবং সংরক্ষিত ২৫, ২৬ ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী নাজনীন আক্তার লিনা। এরা সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী। লিনা বলেন, ‘একই পরিবার থেকে যদি আমরা নির্বাচিত হতে পারি তাহলে দুই জন একসঙ্গে কাজ করতে পারব। মানুষের অনেক উপকার হবে।’