বরিশালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী জনসভার মাঠে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়েছে। আজ শুক্রবার দুপুরে বরিশাল-৪ আসনের (মেহেন্দীগঞ্জ-হিজলা) সংসদ সদস্য পংকজ নাথ ও শাম্মী আহম্মেদের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ চলার সময় সিরাজ সিকদার (৫৮) নামের এক ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক কবির উদ্দিন বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তবু সন্দেহের কারণে আমরা মরদেহ মর্গে পাঠিয়েছি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে প্রকৃত কারণ জানা যাবে।’
আজ বেলা পৌনে দুইটার দিকে নগরের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে প্রধানমন্ত্রীর জনসভাস্থলে প্রবেশের সময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ১৫ জন আহত হয়েছেন। নিহত সিরাজ সিকদার বরিশালের হিজলা উপজেলার কুড়ালিয়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।
বরিশাল-৪ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য পংকজ নাথ এবার দলীয় মনোনয়ন পাননি। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন দলের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহম্মেদ। দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকায় তাঁর প্রার্থিতা নির্বাচন কমিশন বাতিল করেছে।
মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ভুট্টো মোল্লা অভিযোগ করেন, ‘মিছিল নিয়ে জনসভাস্থলে ঢুকছিলাম। আগে থেকে অবস্থান নেওয়া শাম্মীর অনুসারীরা আমাদের ওপর বোতল নিক্ষেপ শুরু করে। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। তখন লাঠি দিয়ে পিটিয়ে সিরাজসহ ১৫ জনকে আহত করা হয়। এর মধ্যে সিরাজ নিহত হয়েছেন।’
শাম্মীর অনুসারী হিজলা উপজেলা কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, তাঁরা আগে থেকে জনসভাস্থলে ছিলেন। পংকজ নাথের অনুসারীরা প্রবেশ করে মারামারি শুরু করেন। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। তখন নিচে পড়ে গিয়ে সিরাজ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মারা যাওয়া সিরাজ সিকদার শাম্মী আহম্মেদের অনুসারী বলে দাবি করেন মঞ্জুর মোর্শেদ।
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিচুল হক বলেন, সিরাজকে যিনি হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন তিনি জানিয়েছেন, জনসভার মাঠে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক কবির উদ্দিন আরও বলেন, দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত হয়ে হাসপাতালে ১৩ জন ভর্তি হয়েছেন। তাঁদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।