বরিশালে একতলা লঞ্চঘাট ও বালুরঘাট দখল নিয়ে সাবেক মেয়র ও বর্তমান মেয়র অনুসারীদের মধ্যে পালটাপালটি মহড়ার অংশ হিসাবে ধাওয়া-পালটাধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার এই মহড়া চলাকালে লঞ্চঘাট এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সেখানে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, চলতি বছর একতলা লঞ্চঘাট ও বালুর ঘাটের ইজারা পেয়েছে সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর অনুসারীরা। সাবেক ইজারাদার বর্তমান মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতের অনুসারীরা ঘাটের দখল ছাড়তে রাজি না হওয়ায় ধাওয়া-পালটাধাওয়ার এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, সাবেক ইজারাদার আবুয়াল হোসেন অরুন সকাল থেকে লোকজন নিয়ে ঘাটে অবস্থান করছিলেন। এদিকে নতুন ইজারাদারের লোকজন ঘাটের দখল নিতে সেখানে গেলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। দুপক্ষের হাতেই ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা দেখা গেছে। বর্তমান মেয়রের অনুসারীরা লঞ্চঘাটের সবকটি গেট আটকে সশস্ত্র অবস্থায় ভেতরে অবস্থান নেন। লঞ্চঘাটের মূল গেটের বাইরে সাবেক মেয়রের অনুসারীরা অবস্থান নিলে গালাগাল ও ধাওয়া-পালটাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়ার ভিডিও ধারণ করতে গেলে বর্তমান মেয়রের অনুসারীরা এক সাংবাদিককে লাঞ্ছিতও করেন।
মেসার্স হাসিব এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী হাসিবুল ইসলাম বলেন, সরকারি নিয়মমাফিক দরপত্র আহ্বান করা হলে আমি সর্বোচ্চ দরদাতা হয়েছি। তবে ঘাটের দখল ছাড়ছে না বর্তমান মেয়রের অনুসারীরা। তিনি বলেন, বিআইডব্লিউটিএ’র বরিশাল পোর্ট অফিসার আব্দুর রাজ্জাকের সহযোগিতায় মাসিক দশ হাজার টাকা সরকারি ফান্ডে দিয়ে অবৈধভাবে কোটেশন করে ঘাট চালাচ্ছে বর্তমান মেয়রের অনুসারী অরুন হাওলাদার ও খান হাবিব। আমি বৈধ ইজারাদার হয়েও ঘাটে যেতে পারছি না। বিষয়টি আমি প্রশাসনের সর্বমহলে জানালেও তারা পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।
এমনকি পোর্ট অফিসার আব্দুর রাজ্জাকের আমাদের ঘাট বুঝিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও মেয়রের অনুসারীরা তাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
বর্তমান মেয়রের অনুসারী মির্জা আবুয়াল হোসেন অরুন বলেন, ঘাটের ইজারা আমাদের প্রতিপক্ষরা পেয়েছে। তবে আমরা হাইকোর্টে রিট করেছি। তিনি আরও বলেন, আমরা তাদের সমঝোতার প্রস্তাব দিয়েছি। তবে তারা বৈঠকে আসেননি।
এ বিষয়ে বরিশাল নৌবন্দরের পোর্ট অফিসার আব্দুর রাজ্জাকের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এটিএম আরিচুল হক বলেন, লঞ্চঘাটের দখল নিয়ে দুই গ্রুপের উত্তেজনার খবর পেয়ে আমরা বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করেছি। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।