আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘সকলে আচরণবিধি মেনে চলুন, আচরণবিধি না মানলে এবং ফাউল করলে খবর আছে। ধরা খেলে কারও জন্য তদবির করব না।’
আজ শুক্রবার বিকেলে তার নির্বাচনী এলাকা নোয়াখালী-৫ (কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাট) আসনে বসুরহাট জিরো পয়েন্টে পথসভায় বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সকলে আচরণবিধি মেনে চলুন। আমরা নির্বাচন আচরণবিধির ওপর শ্রদ্ধাশীল। আজকে দেখুন আমার গাড়িতেও জাতীয় পতাকা নেই। আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গোপালগঞ্জ গিয়েছিলেন, জাতীয় পতাকা ছিল না। সিলেট বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে সংবর্ধনা দিতে কোনো সরকারি কর্মকর্তাও ছিল না।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ভুন্ডুল করে ১/১১ (এক এগার)-এর মত একটি অস্থিতিশীল সরকারের ষড়যন্ত্র চলছে। গণতন্ত্র, সংবিধানকে বাঁচাতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনাকে বাঁচাতে হবে। সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার্থে এ নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনারা কোনো ভয় পাবেন না। আওয়ামী লীগ জনগণের পাশে আছে। সাহসের সঙ্গে দলে দলে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেবেন।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো বলেছিল, হাসিনা ও আওয়ামী লীগ পালাবারও পথ পাবে না। এখন তারা কোথায়? বিএনপিসহ ৩২দল পালিয়ে গেছে। অলিগলিতেও তাদেরকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। নির্বাচনে আসেনি, বর্জন করে প্রতিরোধ করবে বলে। অবরোধ, হরতাল, চোরাই গোপ্তা হামলা, পুলিশ-আনসার হত্যা করতে পারে তারা। রেলে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা এসবই তারা পারে, এরা সবাই ভুয়া। বিএনপি বলে তাদের হাজার হাজার লোক কারাগারে। তারা পুলিশ মারে, আনসার হত্যা করে, গাড়িতে আগুন দেয়, ককটেল, পেট্রল বোমা নিক্ষেপ করে। তারা জেলে যাবে না কারা জেলে যাবে।’
কাদের বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বলে, নির্বাচনে বাধা দিলে নিষেধাজ্ঞা দেবে। নির্বাচন এখন কারা বাধা দিচ্ছে, কারা আগুন দিচ্ছে, পেট্রল বোমা মারছে? ট্রেনে আগুন দিয়ে মা- ছেলেসহ ৪ জনকে পুড়িয়ে মেরেছে। এগুলো কি ফৌজদারি অপরাধ নয়। এ সব অপরাধে বিএনপি নেতাকর্মীরা গ্রেপ্তার হচ্ছে এবং এ ধরনের অপরাধে তাদের বিচার হতেই হবে।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘নির্বাচন বর্জন করে আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে ওদের দণ্ডিত নেতা তারেক বলে, ট্যাক্স দেবে না, সরকারকে ট্যাক্স দিতে নিষেধ করছে জনগণকে। এ নেতার কথা শুনে এখন ঘোড়াও হাসে। হাওয়া ভবনের এ অর্থচোরা তারেক কিভাবে জনগণকে বলে ট্যাক্স না দিতে। টেমস নদীর পাড়ে বসে লম্বা লম্বা কথা না বলে তারেকের সাহস থাকেতো দেশের রাজপথে আসতে বলেন। ২০০৭ সালে ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে সাজাপ্রাপ্ত দণ্ডিত হয়ে মুচলেকা দিয়ে বিএনপি নেতা তারেক রহমান লন্ডনে পালিয়ে গিয়েছিল। মা-ছেলে দুজনেই সাজাপ্রাপ্তআসামি। এরা হলো বিএনপি নেতা। লুটেরা টাকা পাচারকারীদের বাংলাদেশের জনগণ নেতা কিভাবে মানবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার সৈনিক। নাশকতাকারী বা কাউকে ভয় পাই না। একমাত্র আল্লাহকে ভয় করি। আমার কর্মকাণ্ডে কেউ কোনো দুঃখ পেয়ে থাকলে, নিজগুণে আমাকে ক্ষমা করে দেবেন। কারণ দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পারলে, তা আমারই ব্যর্থতা। কারণ আমি যেহেতু দলের বড় নেতা। তৈরি থাকুন, ৭ জানুয়ারি ফাইনাল খেলা হবে। বিএনপি না থাকলে কি হয়েছে, সারা দেশে ১৮শ ৯৬ জন ৭ জানুয়ারি খেলোয়াড় হিসেবে ফাইনাল খেলবে। দেশের জন্য আমাদের দলের নেতারা সব ধরনের ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত আছে। এছাড়া আর সবই ভুয়া।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সংসদ সদস্য নিজাম হাজারী, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদল, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও ভাইস চেয়ারম্যান আজম পাশা চৌধুরী রুমেল, সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম তানভীর, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কৃষি সমবায় বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ফখরুল ইসলাম রাহাত, কেন্দ্রীয় আওয়ামী যুবলীগের সদস্য নুরুল করিম জুয়েলসহ আরও অনেকে।