বরিশাল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের পেশকার ও গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর ইউনিয়নের বেতগর্ভ গ্রামের বাসিন্ধা ইলিয়াস বালী, তার সহোদর চুন্নু বালী, পান্নু বালী এবং তাদের পিতা কাওসার বালী, ওই গ্রামের বাদশা বালী, লুৎফর বালী ও পার্শ^বর্তি কান্ডপাশা গ্রামের হালিম কাজীকে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, পরসম্পত্তি লোভী, মাদক ব্যবসায়ী আখ্যা দিয়ে আইনের আওতায় তাদের বিচার চেয়েছেন ভূক্তভোগী এলাকাবাসী।
রোববার সকাল ১০টায় উপজেলার সরিকল বাজারের টলঘরে ভুক্তভোগীদের ডাকা এক সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখিত ব্যক্তিদেরকে এ আখ্যা দিয়ে তাদের বিচার দাবি করা হয়। ভূক্তভোগীদের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন স্থানীয় বিএনপি নেতা ও গৌরনদী উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন গোমস্তা।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, উল্লেখিত ব্যাক্তিদের রয়েছে বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী এবং রয়েছে অবৈধ অত্যাধুনিক অস্ত্র। এরা আইনকে তোয়াক্কা করেনা। এরা এলাকার কুখ্যাত সন্ত্রাসী। ওই কুথ্যাত সন্ত্রাসীরা অবৈধভাবে অন্যের সম্পত্তি দখল ও জোর পূর্বক লক্ষ লক্ষ টাকার গাছ কেটে নিয়ে গেছে। গত এক থেকে দেড় বছর আগে তারা ভূক্তভোগীদেরকে জোর পূর্বক ধরে নিয়ে অস্ত্র ও প্রশাসনের ভয় দেখিয়ে কয়েকটি সাদা কাগজ ও ষ্ট্যাম্পে সই স্বাক্ষর নেয়। সেই সাথে দীর্ঘদিন যাবত তারা ভূক্তভোগীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছে। এভাবে ওই সন্ত্রাসীরা ভূক্তভোগীদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের অপহরন ও হত্যা করতে পারে বলে আশংকা করছেন তারা।
ওই সময় সংবাদ সম্মেলনে ১৫/১৬টি ভূক্তভোগী মুসলীম পরিবারের সদস্যরাসহ পেশকার ইলিয়াসের সন্ত্রাসী বাহিনীর নির্যাতনের শিকার বরুন নাগ (ফটিক) নামের একটি সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবারের একজন গৃহকর্তা ছিলেন। তিনি অভিযোগ করেন, তারা আমাকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ও প্রান নাশের হুমকি দিয়ে কয়েকটি সাদা কাগজ ও ষ্ট্যাপে জোর পূর্বক সই স্বাক্ষর নেয়। পরবর্তিতে ওই ষ্ট্যাম্প দিয়ে পাওয়ার অব এটর্নি তৈরী করে আমার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি কেড়ে নেয়ার পায়তারা করছে। ভূক্তভোগী সৈয়দ নুরুন্নবী অভিযোগ করেন পেশকার ইলিয়াসবালীর কাছে তিনি জমি করেন। ওই পেশকার জমির দামের ৪৪ লক্ষ ১৮ হাজার টাকা মেরে দিয়েছেন। জমিটি দলিল রেজিষ্ট্রিকালে পেশকার ইলিয়াস বলেন বাড়ি গিয়ে টাকা দেব। পরে আর টাকা দেয়নি। এ রকম প্রতারনা-জালিয়াতিসহ চাষের জমি জবরদখলসহ নানা অভিযোগ করেন তারা ইলিয়াস বালী গংদের বিরুদ্ধে।
সংবাদ সম্মেলনে দেয়া লিখিত বক্তব্যে ভূক্তভোগীদের পক্ষে জাহাঙ্গীর গোমস্তা আরো জানান, পেশকার ইলিয়াস বালী বারবার তাদেরকে হুমকি দিয়ে বলে, আমি জুডিশিয়াল মেজিষ্ট্রেট কোর্টে চাকুরি করি। এ দেশে আইন সৃষ্টিকারী আমরা, আইন ব্যবহার করি আমরা, এ দেশে কে জন্ম নিয়েছে যে, আমাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা নেবে ?
ইলিয়াস বালী গংদেরকে পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দোসর গৌরনদী পৌরসভার সাবেক মেয়র হারিছুর রহমানের সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্য ও তার নানা অপকর্মের সহযোগী দাবি করে ভুক্তভোগীরা বলেন যে কোন সময় ওই বাহিনী আমাদের যে কাউকে হত্যা করতে পারে। সন্ত্রাসীদের ভয়ে আমরা পরিবার ও বাড়ির আসপাশের লোকজন স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারছিনা। ইলিয়াস বালী বরিশাল চিফ জুডিশিয়াল মেজিষ্ট্রেট আদালতে চাকুরির প্রভাবে ও গৌরনদীর সন্ত্রাসীদের গডফাদার পলাতক সাবেক মেয়র হারিছুর রহমান হারিছের পৃষ্ঠপোষকতায় বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম, ইয়াবা ব্যবসা, নেশার আড্ডাসহ নানাবিধ অপকর্ম ও অসামাজিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত রয়েছে। সে বিগত ১৩/১৪ বছর যাবত উক্ত জনৈক বিচারপতির আতœীয় পরিচয় দিয়ে মাদক-অস্ত্র কারবারীদের আইনী আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়াসহ থানা পুলিশ সামাল দেয়ার দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ইলিয়াস বালীর ছত্রছায়ায় গৌরনদী, উজিরপুর, বাবুগঞ্জ উপজেলার অধিকাংশ মাদক স¤্রাটসহ শত-শত মাদক কারবারী নতুন ভাবে কারবার শুরু করে এলাকাকে মাদক ও অবৈধ অস্ত্রের অভয়ারণ্য হিসেবে গড়ে তোলেন। সে আদালতে চাকুরি করার কারনে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছেনা। প্রশাসন তার কাছে জিম্মি। পেশকার ইলিয়াস বালী বর্তমানে অবৈধভাবে শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে অংশগ্রহনকারী ভূক্তভোগীরা, ন্যায় বিচার পেতে সন্ত্রাসী ইলিয়াস বালী গং ও তাদের সকল অপকর্মের সত্য উদঘাটন করে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করাতে স্থানীয় সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধ জানান।
সংবাদ সম্মেলনে আনা অভিযোগকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করেছেন অভিযুক্ত পেশকার ইলিয়াস বালী। তিনি বলেন ওই জমি আবার দাদার জমি। ওই জমিতে আমার দাদা, আমার মা, আমার সেঝ ভাই খুন হয়েছে। যে জমিতে আমার স্বজনরা খুন হয়েছে ওই জমির ধারে কাছে আমরা যাইনা। গাছ কেটে নেয়া প্রসঙ্গে বলেন আদালতের রায় পেয়ে আমরা গাছ বিক্রি করেছি। সরকারি চাকরি করে শত কোটি টাকার মালিক হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন এ গুলো অপ-প্রচার। আমার ব্যাংক হিসাব চেক করে দেখুন অভিযোগ কতটুকু সত্য। আমাকে হ্যারাজ করার জন্য এগুলো করা হচ্ছে।