প্রতিদিনই কমছে পেঁয়াজের দাম। খুচরায়ও নাগালের মধ্যে আসছে রসনাবিলাসীদের প্রিয় ভোগ্যপণ্যটি।
কয়েক সপ্তাহ আগেও যারা পেঁয়াজ কিনতেন ভেবেচিন্তে তারাও এখন বেশি বেশি কিনছেন। চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জোগানও।
ক্ষেত্রবিশেষে জোগান বা সরবরাহ বেশিও বলছেন বিক্রেতারা।
ভারত থেকে আমদানি করা ভালো মানের পেঁয়াজ খাতুনগঞ্জের আড়তে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪০-৪৫ টাকা। মিশর ও তুরস্কের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা। দেশি নতুন পেঁয়াজ ২৫-৩০ টাকা। অন্যদিকে খুচরায় কাজীর দেউড়ি কাঁচাবাজারের মুদির দোকানে ভারত থেকে আমদানি করা ভালোমানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা। পুরোনো দেশি পেঁয়াজ ১২০ টাকা। রিকশাভ্যানে দেশি নতুন পেঁয়াজ ৪০ টাকা বিক্রি হতে দেখা গেছে। পেঁয়াজ পাতা বিক্রি হচ্ছে কেজি ২৫ টাকা।
খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের বড় বিপণিকেন্দ্র হামিদউল্লাহ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বাংলানিউজকে জানান, প্রতিদিনই পেঁয়াজের দাম কমছে। বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) খাতুনগঞ্জের আড়তে আকার ও মানভেদে ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৪৫ টাকা বিক্রি হয়েছে। তিন দিন আগেও এ পেঁয়াজ ছিল ৫০-৫২ টাকা।
তিনি বলেন, ভারতের পেঁয়াজের সরবরাহ চট্টগ্রামের বাজারে বেশি। আশাকরি, মুড়িকাটাসহ দেশি নতুন পেঁয়াজ পর্যাপ্ত ঢুকবে ১০ দিনের মধ্যে।
মেসার্স আবদুল মাবুদ খান সওদাগর নামের আড়তের নজরুল ইসলাম জানান, ভারতের পেঁয়াজ ৪০-৪২ টাকা, মিশরি পেঁয়াজ ৩০ টাকা, মেহেরপুরের দেশি নতুন পেঁয়াজ ২৫-৩০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
একজন আড়তদার জানান, পাবনা, ঢাকা, সিলেটসহ দেশের বড় একটি অংশে দেশি পেঁয়াজের চাহিদা থাকে বেশি। এ কারণে চট্টগ্রামের বাজারে ভারতের পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে। চট্টগ্রামের মানুষ সুন্দর মাঝারি আকারের পেঁয়াজ পছন্দ করে বেশি।
চেরাগি মোড়ে রিকশাভ্যান থেকে ২ কেজি পেঁয়াজ কেনেন গৃহিণী উম্মে হাবিবা। তিনি বলেন, পেঁয়াজের মূল্য এত বেশি হয়েছিল যে একটি পেঁয়াজ দুই ভাগ করে সকাল সন্ধ্যা দুবেলা তরকারি রান্না করেছি। প্রতিবেশীদের কাছে একটি পেঁয়াজ ধার চাইলে নেই বলতো। এখন ৬০ টাকা করে দুই কেজি ভালো মানের পেঁয়াজ কিনলাম। আশাকরি দাম আরও কমবে।
কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) চট্টগ্রাম সভাপতি এসএম নাজের হোসাইন বাংলানিউজকে বলেন, পেঁয়াজের দাম কমছে এটা ভালো খবর। সরকারের যুগোপযোগী সিদ্ধান্তের কারণে বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির সুযোগ হওয়ায় সংকট মোকাবেলা করা সম্ভব হয়েছে। তবে দেশে পেঁয়াজসহ সব অত্যাবশ্যকীয় নিত্যপণ্যের চাহিদা, জোগান, উৎপাদন, আমদানির সঠিক পরিসংখ্যান দরকার। যাতে কৃত্রিম সংকট, সিন্ডিকেট না থাকে। পাশাপাশি আমাদের চাষিরা যাতে ন্যায্যমূল্য পায় সেটিও বিবেচনায় রাখতে হবে। তাদের ঋণ, ভর্তুকি, উন্নত জাতের বীজ সরবরাহ করে সরকারকে পাশে থাকতে হবে। যদি চাষিরা দাদনের কারণে নামমাত্র মূল্যে আগাম পেঁয়াজ বিক্রি করে ফেলে তাহলে পরবর্তীতে চাষে আগ্রহ হারাবে।