প্রাপ্তবয়স্ক নারীর মাসের একটি নির্দিষ্ট সময়ে পিরিয়ড হয়ে থাকে। এ সময়ে হরমোনাল নানা তারতম্যের কারণে নারীর শরীরে অনেক ধরনের সমস্যা বা অস্বস্তি দেখা দিতে পারে। কারও পেটে অতিরিক্ত ব্যথা হতে পারে, কারও মেজাজ হয়ে যায় ভীষণ খিটখিটে। এছাড়াও মাথা ঘোরানো, খাবারে অরুচি, অ্যাসিডিটি, বমি কিংবা বমি বমি ভাব, শরীরজুড়ে অস্বস্তি- এ ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেকের আবার অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা হতে পারে।
অনিয়মিত পিরিয়ডের কারণ কী?
অনেক সময় পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমের কারণে অনিয়মিত পিরিয়ড বা পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা হয়। তবে পিরিয়ড অনিয়মিত হওয়ার পেছনে আরও অনেক কারণ থাকতে পারে। অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করা, মানসিক চাপ বা স্ট্রেস, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকা, মদ্যপান বা ধূমপানের অভ্যাস, অপরিচ্ছন্ন থাকা ইত্যাদি হতে পারে অনিয়মিত পিরিয়ডের কারণ।
অন্যান্য সময়ের মতো পিরিয়ডের সময়েও খাবার খাওয়ার বিষয়ে সচেতন থাকা জরুরি। আপনি যদি খাবারের প্রতি নজর দেন তবে এসময়ও অনেকটা সুস্থ ও স্বাভাবিক থাকতে পারবেন। পিরিয়ডও হবে নিয়মিত। পিরিয়ড নিয়মিত হলে শরীরে হরমোনাল ব্যালেন্স ঠিক থাকে। জেনে নিন পিরিয়ডের সময় কোন খাবারগুলো বেশি উপকারী-
ডার্ক চকোলেট
পিরিয়ডের সময় নারীর জন্য সাহায্যকারী খাবার হতে পারে ডার্ক চকোলেট। ডার্ক চকোলেট খেতে বললে কেউ না করবে না নিশ্চয়ই! এটি শরীরের নার্ভ সিস্টেমকে সতেজ ও ঠান্ডা রাখে। ফলে মেজাজ খিটিমিটি হওয়ার সুযোগ থাকে না। অস্বস্তিও কমিয়ে দেয় অনেকটা। আর মন-মেজাজ ভালো থাকলে শরীরের দিকে খেয়াল রাখাও সহজ হয়ে যায়।
গ্রিন টি
গ্রিন টি এর উপকারিতা হয়তো প্রতিদিনই শুনে থাকবেন। এটি আমাদের শরীরের ভেতর থেকে অনেক ধরনের উপকার করে থাকে। গ্রিন টি হলো এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই চা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। সেইসঙ্গে পিরিয়ডের কারণে ব্যথা হলে তা কমাতেও কাজ করে।
লেবু
ভিটামিন সি এর ভালো উৎস হলো লেবু। টক স্বাদের বলে অনেকে পিরিয়ডের সময় লেবু খাওয়া বন্ধ রাখেন। এটি ভুল। শরীরে ভিটামিন সি এর ঘাটতি পূরণের পাশাপাশি পিরিয়ডের কারণে সৃষ্ট নানা সমস্যাও দূরে রাখে লেবু। তাই এসময় ভাতের সঙ্গে বা লেবুর শরবত তৈরি করে খেতে পারেন। এতে খাবারের প্রতি রুচিও ফিরে আসবে।
কলা
দ্রুত শক্তি জোগায় যেসব খাবার, সেসবের মধ্যে কলা অন্যতম। কলা খেলে শরীরে দ্রুত শক্তি ফিরে আসে। পিরিয়ডের সময় রক্তক্ষরণের কারণে শরীর কয়েকদিন দুর্বল লাগতে পারে। এসময় প্রতিদিন কলা খেতে পারেন। উপকারী ও সহজলভ্য এই ফল আপনাকে শক্তিশালী রাখতে সাহায্য করবে। তবে দুধ-কলা একসঙ্গে না খাওয়াই ভালো। কারণ তাতে হজমে গোলমাল হতে পারে।
আদা ও দারুচিনি
এ সময় খাবারে আদা ও দারুচিনির ব্যবহার রাখতে পারেন। এই দুই খাবার আপনার বমি কিংবা বমি বমিভাব কমিয়ে আনতে পারে। সেইসঙ্গে অ্যাসিডিটি, হজমে সমস্যা সারাতেও কাজ করে। দুধ চায়ের বদলে আদা ও দারুচিনি দিয়ে চা খেতে পারেন। এতে সুস্থ থাকা সহজ হবে অনেকটাই।