জ্বলছে বঙ্গবাজারের আগুন। স্বপ্ন পুড়ে যাচ্ছে, সব হারিয়েছে দিশেহারা ব্যবসায়ীরা। ইতোমধ্যে বঙ্গবাজারের টিনশেড অংশ পুরোপুরি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। চোখের সামনে সবশেষ হতে দেখেও অসহায় হয়ে চোখের পানি ছাড়া আর কিছু করতে পারছেন না তারা।
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) সকাল ৬টা ১০ মিনিটের দিকে ফায়ার সার্ভিস আগুনের খবর পায়। এরপরেই আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের দল। আগুন ছড়িয়ে পড়েছে পাশের ভবনে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের অন্তত ৫০টি ইউনিট কাজ করছে।
এদিকে পর্যাপ্ত পানির সরবরাহ না থাকায় ভয়াবহ এই আগুন নিয়ন্ত্রণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের পুকুর থেকে সাতটি পাইপের মাধ্যমে ফায়ার সার্ভিস পানি নিচ্ছে। এছাড়া বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টর মাধ্যমে আকাশ থেকেও পানি ছিটানো হচ্ছে। উৎসুক জনতার ভীড় ঠেলে পানি আনতে হিমশিম খাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস। এছাড়াও ফায়ার সার্ভিসের আরও ১১টি ইঞ্জিন শহীদুল্লাহ হক হল থেকে পানি দিচ্ছে। ইতোমধ্যে পুকুরের পানি প্রায় শেষ পর্যায়ে আছে।
একে একে মার্কেটের দোকান পুড়ে যাওয়ায় কান্নায় ভেঙে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। ঈদ উপলক্ষে বিপুল পরিমাণ মালামাল উঠেছিলেন প্রায় সব ব্যবসায়ী। কেউ লাখ টাকা, কেউবা কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন। কিন্তু আগুন থেকে কোনো কিছুই উদ্ধার করা যায়নি।
নুর আলম নামে একজন ব্যবসায়ী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘সব শেষ ভাই, আর কিছু নাই, দুই দোকানের কিছুই বাইর করতে পারিনি। ব্যাংক ঋণ বন্ধুদের কাছ থেকে ধার নিয়ে এবার মালামাল উঠাইছিলাম। এখন সব শেষ, এখন কী করব বুঝতে পারছি না।’
ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রাজধানীর বঙ্গবাজারে আগুনের ঘটনায় ঢাকায় ফায়ার সার্ভিসের যত ইউনিট আছে সব ইউনিট ঘটনাস্থলের দিকে পাঠানো হয়েছে। কারণ, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আগুনের ভয়াবহতা আরও বাড়ছে।
একই সঙ্গে যোগ দিয়েছে সেনা, নৌ এবং বিমানবাহিনীর সম্মিলিত দলও। তবুও নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না আগুন। আশেপাশের ভবনগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ছে আগুনের ভয়াবহতা।
দোকানিরা জানান, প্রথমে আগুন লাগে গুলিস্তান মার্কেটে। সেখানে থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে বঙ্গবাজার মার্কেটে। এখন পাশের অন্য ভবনেও ছড়িয়ে পড়েছে। কাপড়ের মার্কেট হওয়ায় দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে।