রবিবার, ০৩:৫০ পূর্বাহ্ন, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ২রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।
শিরোনাম :
সংসদে নারীর জন্য ১০০ আসন চান বদিউল আলম মজুমদার রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে প্রতিবেশীদের আশানুরূপ সমর্থন পায়নি বাংলাদেশ ২৮ বছরে প্রথমবার কলকাতার বইমেলায় নেই বাংলাদেশ বাচ্চারা জীবন দেয় আর মুরব্বিরা পদ ভাগাভাগি করেন : হাসনাত পল্লবীতে দুই শিশুপুত্রকে হত্যার পর বাবার আত্মহত্যার চেষ্টা ‘রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে আলোচনায় প্রত্যাশিত অগ্রগতি নেই’ যে কারণে অপহরণ করা হয় আজিমপুরের সেই শিশুকে উত্তরবঙ্গের ৩ বিভাগে কি একজনও যোগ্য লোক নেই : সারজিস তিন শূন্যের ধারণার ওপর ভিত্তি করে পৃথিবী গড়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার কেউ যেন অর্থপাচার না করতে পারে সেই ব্যবস্থা করে যাবো : অর্থ উপদেষ্টা

পাঠ্যপুস্তকে ভুল ও অসঙ্গতি : যেভাবে সংশোধন করা হবে

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২৩
  • ৮৬ বার পঠিত

নতুন বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের হাতে যখন পাঠ্যবই পৌঁছেছে, ঠিক তখনই পাঠ্যবইতে নানা ভুল নিয়ে নতুন বিতর্ক মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। এ নিয়ে চলছে ব্যাপক সমালোচনা।

ভুলের বিষয়টি নিয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড প্রথমে নিরব থাকলেও সমালোচনা এতটাই জোরালো হয়েছে যে কর্তৃপক্ষ পরবর্তীতে বিবৃতি দিয়ে সেটি স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে।

এ ঘটনায় অভিভাবক ও শিক্ষাবিদরা ‘বিস্ময়’ প্রকাশ করে পুরো বিষয়টিকে ‘লজ্জাজনক’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এমন প্রেক্ষাপটে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড বলছেন, অভিযুক্ত লেখকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অভিভাবকদের ক্ষোভ
নতুন পাঠ্যপুস্তকের মধ্যে প্রথম আলোচনায় আসে সপ্তম শ্রেণির বিজ্ঞান বই। বইয়ের প্রথম অধ্যায় হচ্ছে জীববৈচিত্র্য। দেখা যাচ্ছে, এর বেশ কিছু অংশ পুরোপুরি ন্যাশন্যাল জিওগ্রাফিক ওয়েবসাইট থেকে হুবহু অনুবাদ করা হয়েছে।

বিষয়টি প্রথম সামনে আনেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. নাদিম মাহমুদ।

মোহাম্মদ শহীদুল আলমের বড় ছেলে ক্লাস সেভেন আর ছোট দুই মেয়ে পড়ে ক্লাস টুতে। তিনি বলেন, বিজ্ঞান বইয়ে যেটা করা হয়েছে সেটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সৃজনশীল বইয়ের নামে কিভাবে হবহু অনুবাদ ছেপে দেয়া হলো?

এ বিষয়টি নিয়ে যখন ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয় তখন এর দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেন বইটির রচনা ও সম্পাদনার সাথে যুক্ত থাকা অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও অধ্যাপক হাসিনা খান।

বিবৃতিতে বলা হয়, উক্ত অধ্যায়ের আলোচিত অংশটুকু লেখার দায়িত্বে তারা দু’জন না থাকলেও সম্পাদক হিসেবে এর দায় তাদের উপরেও বর্তায়। সেটি তারা স্বীকার করে নেন। জানান, অবশ্যই পরবর্তী সংস্করণে বইটির প্রয়োজনীয় পরিমার্জন করা হবে।

নতুন কারিকুলামে প্রথম, ষষ্ঠ এবং সপ্তম শ্রেণির নতুন বই দেয়া হয়েছে শিক্ষার্থীদের।

আরেক অভিভাবক শহীদুল আলম বলেন, শিক্ষার্থীদের ভাবনার সাথে শিক্ষা ব্যবস্থার একটা বড় ফাঁক রয়ে গেছে। যারা এটা প্রণয়ণ করেছেন তারা আসলে জানেন না যে শিক্ষার্থীরা কী চায়।

শিক্ষক ও শিক্ষাবিদদের নানা প্রশ্ন
এরই মধ্যে ষষ্ঠ শ্রেণির ইংরেজি বইয়ে অনেকগুলো ভুল নিয়ে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেন মাসুম হাসান নামের এক শিক্ষক।

এরপর পুরো বিষয়টি ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষক মহলে। শিক্ষাবিদ মাহফুজা খানমের কাছে পুরো বিষয়টি অনভিপ্রেত ও দুঃখজনক।

অধ্যাপক খানম বলেন, এটা তো অনেকগুলো ধাপ পেরুতে হয়, যারা লিখেন, জমা দেন, সম্পাদনা করা হয়। আমি মনে করি এ ধাপগুলো পেরুলো এবং প্রত্যেকে এটার জন্য কমবেশি দায়ী।

তার আশঙ্কা হচ্ছে, এ ধরণের ভুল শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের মনে নেতিবাচক ধারণা তৈরি করবে।

রাজধানীর ভিকারুননিসা স্কুলের শিক্ষক গৌরাঙ্গ মণ্ডল। তিনি মনে করেন ‘বিচক্ষণতা এবং পেশাদারিত্বের অভাব’ থেকেই এসব ভুল হয়েছে পাঠ্যপুস্তকে।

ভুল বইয়ের কী হবে?
গত ১৭ জানুয়ারি নবম-দশম শ্রেণির তিনটি বইয়ের বেশ কিছু সংশোধনী দেয় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড-এনসিটিবি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, শুধু ভুল স্বীকার করাই কী যথেষ্ট? নাকি এর দায়ও নিতে হবে?

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেন, ভুল তথ্যের দায়ভার এনসিটিবির উপরেও যায়। তবে এজন্য তিনি লেখকের ‘অনৈতিকতাকেও’ দায়ী করছেন। তিনি বলেন, এজন্য পরবর্তিতে এই লেখককে বই লেখার কার্যক্রম থেকে বিরত রাখতে পারি।

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে এই ভুলগুলো এখন কিভাবে সংশোধন করা হবে? আবারো কী নতুন করে বই ছাপাতে হবে?

এনসিটিবি চেয়্যারম্যান ফরহাদুল ইসলাম বলেন, এখন যে ভুলগুলো পাওয়া যাচ্ছে তা দ্রুততার সাথে অনলাইনেই সংশোধন করা হচ্ছে।

ফরহাদুল ইসলাম বলেন, যে ভুলগুলোর কথা বলা হচ্ছে আমরা এগুলো সব কালেকশন করেছি, বিশেষজ্ঞ প্যানেলে দিয়েছি। এ বছর নতুন করে বই ছাপানোর প্রয়োজন নেই। এনসিটিবি এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের ওয়েবসাইটে ভুলের সংশোধনী দেয়া হয়েছে। এসব ওয়েবসাইটের সাথে দেশের সবগুলো স্কুলের প্রধান শিক্ষক যুক্ত আছেন।

প্রধান শিক্ষকদের মাধ্যমে সংশোধনী সবগুলো স্কুলের শিক্ষকদের কাছে পৌঁছে যাবে। এরপর শ্রেণি শিক্ষকরা হাতে লিখে সংশ্লিষ্ট বইয়ের ভুলগুলো সংশোধন করে দেবেন।

তবে প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শেণির বই এবার পরীক্ষামূলকভাবে দেয়া হয়েছে বলে জানান ফরহাদুল ইসলাম। এ বছর মাঠপর্যায়ে সবার মতামতের পর ব্যাপক পরিমার্জন করে আগামী বছর দেয়া হবে বইগুলোর প্রথম সংস্করণ।

সূত্র : বিবিসি

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com