পাকিস্তানের ইসলামাবাদের বাংলাদেশ হাইকমিশনে আজ শুক্রবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বড় ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭৩তম জন্মবার্ষিকী যথাযথ উৎসাহ-উদ্দীপনা ও মর্যাদার সঙ্গে পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে দূতাবাসের লবি ও সভাকক্ষ ব্যানার ও পোস্টারের মাধ্যমে সাজানো হয়।
এদিন শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, বাণীপাঠ, আলোচনা সভা, প্রামাণ্য ভিডিওচিত্র প্রদর্শন ও বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিবসটি পালিত হয়। বাংলাদেশ হাইকমিশনের সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এতে অংশ নেন।
পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে আলোচনা পর্ব শুরু হয় এবং রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। আলোচনা পর্বে বক্তারা শেখ কামালের কর্মময় জীবনের ওপর আলোকপাত করেন। এ সময় বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, ক্রীড়া ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে তার অবদানের কথা উল্লেখ করা হয়।
হাইকমিশনার মো. রুহুল আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন এবং ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে শেখ কামালের অসামান্য অবদান রয়েছে। তিনি ছাত্রসমাজকে সংগঠিত করে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন এবং মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানীর এডিসির দায়িত্ব পালন করেন।’
তিনি বলেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে শেখ কামালের অবদান চিরস্মরণীয়। তিনি সফল ক্রীড়া সংগঠক ছিলেন। একাধারে বাস্কেটবল, ক্রিকেট ও ভলিবল খেলতেন। খেলোয়াড়দের স্বাবলম্বী করার জন্য নানা উদ্যোগ নেওয়ার পাশাপাশি তাদের কল্যাণে ১০ লাখ টাকার একটি ‘খেলোয়াড় কল্যাণ তহবিল’ গঠন করেছিলেন।’
হাইকমিশনার আরও বলেন, ‘যুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশে যুব সমাজ যাতে পথভ্রষ্ট না হয় সে লক্ষ্যে শেখ কামাল ১৯৭২ সালে আবাহনী ক্রীড়াচক্র ও স্পন্দন শিল্পীগোষ্ঠী প্রতিষ্ঠা করেন। শেখ কামাল নিজেও একজন গুণী সেতার বাদক ও নাট্যকর্মী ছিলেন। ঢাকা থিয়েটার গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তার বিশেষ অবদান ছিল। অফুরন্ত প্রাণশক্তির অধিকারী ছিলেন তিনি। স্বাধীনতা বিরোধী প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির ষড়যন্ত্রে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডে বঙ্গবন্ধু ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে তিনি শহীদ হন।’
তিনি বলেন, ‘মাত্র ২৬ বছরের সংক্ষিপ্ত জীবন ছিল শেখ কামালের। কিন্তু তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসের সূর্যসন্তান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত থাকবেন। তার জীবন ও কাজ বর্তমান প্রজন্মের তরুণদের অনুকরণীয়।’
আলোচনার পর শেখ কামালের জীবনীভিত্তিক একটি প্রামাণ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়। শেষে শেখ কামাল ও বঙ্গবন্ধু পরিবারের সব শহীদদের আত্মার মাগফেরাত এবং দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি চেয়ে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।