রবিবার, ১২:০৫ অপরাহ্ন, ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১৯শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ আর নেই

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
  • ৬৬ বার পঠিত

পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ দুবাইয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর।

রোববার তার পরিবার এই খবর নিশ্চিত করেছে।

পাকিস্তানের সাবেক এই স্বৈরশাসক দুবাইয়ের আমেরিকান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

তার অসুস্থতার ব্যাপারে ২০২২ সালে জানান হয়েছিল যে জেনারেল মোশাররফ অ্যামিলোডয়সিস নামে এক জটিল রোগে ভুগছেন।
এ রোগে মানব শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ধীরে ধীরে বিকল হয়ে যেতে থাকে।

তার পরিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, জেনারেল মোশাররফের শরীরের অবস্থা এতটাই খারাপ যে ‘তার সেরে ওঠার প্রায় কোনো সম্ভাবনাই নেই’।

পারভেজ মোশাররফের জন্ম হয় ১৯৪৩ সালের ১১ আগস্ট ব্রিটিশ ভারতের দিল্লিতে। ১৯৬১ সালের ১৯ এপ্রিল তিনি কাকুলের পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমি থেকে কমিশন পান। এরপর তিনি স্পেশাল সার্ভিস গ্রুপে যুক্ত হন।

পাকিস্তানের সাবেক এই প্রেসিডেন্ট ১৯৯৮ সালে জেনারেল পদে উন্নীত হন এবং সেনাবাহিনী প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এক বছর পর ১৯৯৯ সালের ১২ অক্টোবর অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশটির ক্ষমতা দখল করেন।

মোশাররফ পাকিস্তানের সবচেয়ে দীর্ঘ মেয়াদী প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ক্ষমতা দখলের পর ২০০২ সালে গণভোটের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন এবং ২০০৮ সাল পর্যন্ত এই পদে বহাল থাকেন।

১৯৪৭ সালে পরিবারের সাথে পাকিস্তানে চলে যায় মোশাররফের পরিবার। তার বাবা সৈয়দ মোশাররফ একজন কূটনীতিক ছিলেন।

১৯৬৪ সালে সামরিক বাহিনীতে যোগ দেয়ার আগে ১৯৪৯ থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত জেনারেল মোশাররফ তুরস্কে ছিলেন।

সামরিক বাহিনীতে যোগ দেয়ার পর তিনি কোয়েটার আর্মি কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ এবং লন্ডনের রয়্যাল কলেজ অব ডিফেন্স স্টাডিজে পড়াশোনা করেছেন।

জেনারেল মোশাররফ ২০০৭ সালে সংবিধান স্থগিত করে জরুরি অবস্থা জারি করেন, যার মাধ্যমে তিনি নিজের শাসনামল প্রলম্বিত করতে চেয়েছিলেন।

এই ঘটনায় পাকিস্তানে ব্যাপক বিক্ষোভ হয় এবং ইমপিচমেন্ট এড়াতে ২০০৮ সালে তিনি পদত্যাগ করেন।

এজন্য পরে জেনারেল মুশাররফকে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়েছিল।

তিনি পাকিস্তানের প্রথম সামরিক শাসক যাকে সংবিধান স্থগিত করার জন্য বিচারের মুখোমুখি হতে হয়েছিল।

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল পাকিস্তানের আদালত, যদিও পরে সেটি বাতিল হয়ে যায়।

সর্বশেষ তিনি দুবাই অবস্থান করছিলেন।

জেনারেল পারভেজ মোশাররফের ক্যারিয়ার

জেনারেল পারভেজ মোশাররফ ১৯৬৪ সালে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৯৮ সালে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রধান নিযুক্ত হন।

১৯৯৯ সালের মে মাসের কারগিল যুদ্ধে সেনাবাহিনীর জড়িত থাকা নিয়ে তখনকার প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের সাথে সম্পর্কে ফাটল ধরে তার।

এর ধারাবাহিকতায় ওই বছরই এক অভ্যুত্থানে ক্ষমতায় বসেন জেনারেল মুশাররফ।

২০০৮ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি।

এই সময়ের মধ্যে বহুবার আততায়ীর হামলা থেকে রক্ষা পেয়েছেন এবং তাকে উৎখাতের বহু প্লটও ব্যর্থ হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘সন্ত্রাস-বিরোধী যুদ্ধে’ সমর্থন ও ভূমিকা পালনের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে সুপরিচিত ছিলেন তিনি।

যদিও একারণে স্বদেশে ব্যাপক বিরোধিতার শিকার হতে হয় তাকে।

প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরে যাওয়ার পর ২০০৮ সালে দেশ ছাড়েন তিনি। কিন্তু ২০১৩ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য পাকিস্তানে ফেরেন।

যদিও আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে ব্যর্থ হন।

রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার শুনানিতে মাত্র দু’বার হাজিরা দিয়েছিলেন তিনি।

এর আগে তার সময় কেটেছে হয় সেনাবাহিনীর একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নয়তো ইসলামাবাদের একটি খামারে।

পরবর্তীতে ২০১৪ সালের এপ্রিলে তিনি করাচিতে চলে যান।

সেখানে দু’বছর থাকার পর তিনি আবার দেশত্যাগ করেন।

২০১৬ সালে তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছিল।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com