গতকাল ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পুলিশের করা মামলায় চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি সরকারকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। দুপুরে গাজীপুর আদালতে নিয়ে মাহিয়া মাহির সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। আদালতের বিচারক রিমান্ড মঞ্জুর না করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে গ্রেপ্তারের পর বেলা দেড়টার দিকে পুলিশ তার সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে গাজীপুর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের (সিএমএম) আদালতে পাঠানো হয়। আদালতের বিচারক তার রিমান্ড মঞ্জুর না করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশে তাকে গাজীপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। এর চার ঘণ্টা পর আদালত মাহিয়া মাহিকে জামিন মঞ্জুর করেন। মাহির আইনজীবী অ্যাডভোকেট আনোয়ার শাহাদাত সরকার জানান, মাহির অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি মাননীয় আদালত বিবেচনা করে তার জামিন মঞ্জুর করেছেন।
এর আগে ২০২১ সালের ৪ আগস্ট প্রায় চার ঘণ্টার অভিযান শেষে বনানীর বাসা থেকে চিত্রনায়িকা পরীমণি ও তার সহযোগী দীপুকে আটক করে র্যাব। এ সময় পরীমণির বাসা থেকে বিভিন্ন মাদক জব্দ করা হয়। ৫ আগস্ট র্যাব-১ বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য আইনে পরীমণি ও তার সহযোগীর বিরুদ্ধে বনানী থানায় মামলা করে। এরপর তৃতীয় দফায় রিমান্ড শেষে শনিবার (২১ আগস্ট) পরীমণিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। পরী বর্তমানে জামিনে মুক্ত আছেন। এবং আদালতে নিয়মিত হাজিরা দিচ্ছেন।
পরীমণি গ্রেপ্তারের পর জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘শিল্পীর পাশে’ ব্যানারে সমাবেশ অনেক মিডিয়ার অনেক তারকা। সমাবেশে উপস্থিত শিল্পীরা দফায় দফায় পরীকে রিমান্ডে নেওয়ার নিন্দা জানিয়েছেন।
‘আইনের রক্ষকেরা আইন ভঙ্গ করেছেন’ মন্তব্য করে সভায় চলচ্চিত্র পরিচালক গিয়াসউদ্দিন সেলিম বলেছিলেন, পরীমণিকে যেভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যেভাবে দফায় দফায় রিমান্ডে নেওয়া হচ্ছে এবং যেভাবে ‘মিডিয়া ট্রায়ালের’ জন্য উসকে দেওয়া হচ্ছে তা বেআইনি। আইন সবার জন্য সমান হোক।
সমাবেশে নাট্যব্যক্তিত্ব ঝুনা চৌধুরী বলেছিলেন, পরীমণি কত বড় মাফিয়া যে এলিট ফোর্সকে বিশাল বাহিনী নিয়ে যেতে হলো? যেসব শিল্পীকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে, তারা আদালতে দোষী প্রমাণ হওয়ার আগেই যে ধরনের কটূক্তি ও অশ্রাব্য কথাবার্তা বলা হচ্ছে, তার নিন্দা জানাই।
সেখানে আরও বলা হয়, আমরা একজন শিল্পীর পাশে দাঁড়িয়েছি। কোনো শিল্পী যখন অন্যায়ের শিকার হন, তার যখন সহযোগিতার প্রয়োজন হয়, আমরা পাশে দাঁড়াই। শিল্পীর পাশে না দাঁড়ালে শিল্পের বিকাশ ঘটবে না, হয়তোবা টিকবে না। শিল্প মুখ থুবড়ে পড়লে একটা জাতি উগ্র হতে সময় লাগবে না। তাই ‘শিল্পীর পাশে’ গ্রুপ ন্যায়বিচারের স্বার্থে ভবিষ্যতেও কর্মসূচি ঘোষণা করবে।