ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদকে মারধর,ভাঙচুর ও ভয়ভীতি দেখানোর মামলায় পরীমনি ও তার কস্টিউম ডিজাইনার জুনায়েদ বোগদাদী জিমির বিরুদ্ধে চার্জগঠনের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তারা এদিন আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
আজ রবিবার ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুনাইদ আসামি পক্ষের সময় আবেদন নামঞ্জুর করে এ আদেশ দেন। আদালত এ আদেশের পর আগামী ২০ মার্চ সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য করেছেন।
পরীমনির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত (সুরভী) এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘এদিন মামলাটি চার্জশুনানির জন্য ছিল। কিন্তু অসুস্থ থাকায় পরীমনি আদালতে হাজির হতে পারেননি। অপর আসামি জিমির পক্ষেও সময় আবেদন করা হয়। আদালত সময় আবেদন নামঞ্জুর করেন। তাদের বিরুদ্ধে চার্জগঠনের আদেশ দেন। গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করেন।
২০২২ সালের ৬ জুলাই আদালতে মামলাটি করেন নাসির উদ্দিন। গত মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ঢাকা জেলার পরিদর্শক মো. মনির হোসেন ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পরীমণি ও তার কস্টিউম ডিজাইনার জুনায়েদ বোগদাদী জিমির বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করেন। তাদের বিরুদ্ধে মারধর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। ১৮ এপ্রিল ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এম সাইফুল ইসলামের আদালত দুই আসামিকে ২৫ জুন আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন। ওইদিন আত্মসমর্পণ করে জামিন পান তারা।
মামলার এজাহারে বলা হয়, পরীমনি ও তার সহযোগীরা অ্যালকোহলসেবী। সুযোগ বুঝে তারা বিভিন্ন নামিদামি ক্লাবে ঢুকে অ্যালকোহল পান করেন এবং পার্সেল নিয়ে মূল্য পরিশোধ করেন না। পরীমণি তার পরিচিত পুলিশ কর্মকর্তাদের দিয়ে মিথ্যা মামলা করে হয়রানির ভয় দেখান। ২০২১ সালের ৯ জুন রাত ১২টার পর আসামিরা সাভারের বোট ক্লাবে ঢুকে দ্বিতীয়তলার ওয়াশরুম ব্যবহার করেন। পরে তারা ক্লাবের ভেতরে বসে অ্যালকোহল পান করেন। বাদী ও তার সহযোগী শাহ শহিদুল আলম রাত সোয়া ১টার দিকে যখন ক্লাব ত্যাগ করছিলেন, তখন পরীমণি উদ্দেশ্যমূলকভাবে বাদী নাসির উদ্দিনকে ডাক দেন এবং তাদের সঙ্গে কিছু সময় বসার অনুরোধ করেন। একপর্যায়ে পরীমণি অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে নাসির উদ্দিনকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেন এবং একটি ব্লু লেবেল অ্যালকোহলের বোতল বিনামূল্যে পার্সেল দেওয়ার জন্য বাদীকে চাপ দেন। বাদী এতে রাজি না হওয়ায় পরীমণি বাদীকে গালি দেন। বাদী এবং আসামিদের মধ্যে বাদানুবাদের একপর্যায়ে পরীমণি বাদীর দিকে একটি সারভিং গ্লাস ছুড়ে মারেন এবং হাতে থাকা মোবাইল ফোনটিও ছুড়ে মারেন। এতে নাসির উদ্দিন মাথায় এবং বুকে আঘাতপ্রাপ্ত হন। পরীমণি ও তার সহযোগীরা নাসির উদ্দিনকে মারধর ও হত্যার হুমকি দিয়েছেন ও ভাঙচুর করেছেন।
এই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য পরীমণি সাভার থানায় বাদীসহ দুজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে একটি মামলা করেন।